Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Entertainment News

শ্রীলেখা নাকি নতুন সম্পর্কে জড়িয়েছেন?

দীর্ঘদিন পরে শ্রীলেখা মিত্র অনস্ক্রিন। সৌজন্যে পরিচালক সৌকর্য ঘোষালের ছবি ‘রেনবো জেলি’। সদ্য মুক্তি প্রাপ্ত ছবিতে শ্রীলেখার অভিনয় বিভিন্ন মহলে ইতিমধ্যেই প্রশংসিত। সে সব নিয়েই কথা হচ্ছিল। কিন্তু কামালগাজির ফ্ল্যাটে ড্রইংরুমের আড্ডা সিনেমা ছাড়াও অন্য অলি-গলির পাকদণ্ডী ছুঁয়ে ফেলল আপন খেয়ালে। সাক্ষী লাল চা, আখরোট, চিন্তামণি (অভিনেত্রীর পোষ্য)।সেই আড্ডার বেশির ভাগটাই শ্রীলেখার অনুমতি নিয়ে পাঠকদের সঙ্গে শেয়ার করলেন স্বরলিপি ভট্টাচার্য। দীর্ঘদিন পরে শ্রীলেখা মিত্র অনস্ক্রিন। সৌজন্যে পরিচালক সৌকর্য ঘোষালের ছবি ‘রেনবো জেলি’। সদ্য মুক্তি প্রাপ্ত ছবিতে শ্রীলেখার অভিনয় বিভিন্ন মহলে ইতিমধ্যেই প্রশংসিত। সে সব নিয়েই কথা হচ্ছিল।

‘আপনি তো সেনশুয়াল অভিনেত্রী। সেখান থেকে পরীপিসি করলেন কেন?’

‘আপনি তো সেনশুয়াল অভিনেত্রী। সেখান থেকে পরীপিসি করলেন কেন?’

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৮ ১২:৪২
Share: Save:

পরীপিসি (‘রেনবো জেলি’তে শ্রীলেখার চরিত্র) তো হিট?
(হাসি) সবাই তো ভাল বলছে শুনছি। কিন্তু তবুও রিলিজের এক সপ্তাহের মধ্যেই বেশির ভাগ হল থেকে উঠে গেল ছবিটা। মাত্র দু’টো হলে চলছে এখন।

কেন এটা হল বলে মনে হয়?
এই বিজনেস বিষয়টা জানি না। তবে একটা ছবি ধরতে একটু সময় লাগে। আমাদের তো সেই অর্থে কোনও বড় নাম নেই। কোনও স্টার নেই। সে জন্য ওয়ার্ড অফ মাউথ পারবিলিসিটি হয়ে ধরতে সময় লাগে। ইতিমধ্যেই কয়েকটা হলে হাউসফুল ছিল। ছবিটা জাস্ট ধরছিল, তখনই আমাদের ছবি সরিয়ে দেওয়া হল। এতে অনেকের মনে হয়, ছবিটা চলছে না। আদৌ তা নয়। এটা আমার সঙ্গে আগেও হয়েছে। আন্ডারডগদের সঙ্গে এটাই হয়।

আপনার অভিনয় তো ভাল বলছেন সকলে?
জানি না। আমাকে তো অদ্ভুত প্রশ্নও করছে অনেকে।

যেমন?
আপনি তো সেনশুয়াল অভিনেত্রী। সেখান থেকে পরীপিসি করলেন কেন?

আরও পড়ুন, ‘রেনবো জেলি দেখে হয়তো ভাববেন আমি আবার জিততে পারি’

কী উত্তর দিচ্ছেন?
আরে আমি তো অ্যাক্টর। চরিত্র করব। আমি প্রচুর আটপৌরে রোলও তো করেছি। আর পরীপিসি তো খুব পছন্দের চরিত্র।

সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখলাম, এখনও নাকি অনেকে ‘রেনবো জেলি’ দেখে বেরিয়ে বলছেন, মহাব্রত…
(প্রশ্ন শেষ করতে না দিয়েই) অ্যাবনর্মাল। (উত্তেজিত হয়ে) আরে, মহাব্রত আপনার আমার নর্মালের থেকে বেশি নর্মাল। ওর মধ্যে হয়তো সেই ইংলিশ মিডিয়াম স্মার্টনেস নেই। কিন্তু ও অনেক বেশি ইন্টেলিজেন্ট, অনেক নর্মাল। ওর কথার সঙ্গে পেরে ওঠা মুশকিল। ওর কথা শুনলে বোঝা যায় ওর শিক্ষা, ওর বাবা-মা ওকে কী ভাবে মানুষ করছে। এই ছবিটায় ওকে খাটিয়েওছে, ও খেটেওছে। আদি গুরুকূল প্রসেসে কাজ করেছে ওরা। মহাব্রতর সঙ্গে কাজ করাটা এক্সপিরিয়েন্স। এর সিংহভাগ কৃতিত্ব সৌকর্যর।

এর পরে আর কী কাজ করছেন?
একটা স্ক্রিপ্ট নিয়ে কথা চলছে। কিন্তু এখনই কিছু বলতে পারব না। বড়, ছোট, মেজ, সেজ ডিরেক্টরের কথা বলব না। তবে খুব ভাল একজন ডিরেক্টরের ছবি।

এত প্রশংসা হয়, অথচ সেই তুলনায় এত কম কাজ কেন? অফার পান না?
অফার তো কম আসে, সেটা একটা কারণ। আর আমি নিজের খিদেটাও কমিয়ে ফেলেছি।

অফার কম আসে কেন?
জানি না। আমাকে নাকি লোকে ভয় পায়, শুনেছি (হাসি)। আমাকে দেখে কি রাগী মনে হয়? জানি না। ফোন করে কাউকে মনে করাই না। কি জানি, আমার যদি কোনও প্রেমিক বা গডফাদার, কোনও পুরুষমানুষ থাকত, তা হলে বোধহয় আরও স্মুদ হত। আমার আর কিছুতেই কিছু যায় আসে না।

কিন্তু এটাই তো আপনার ব্রেড অ্যান্ড বাটার…
ঠিকই। এগ্রি করছি। আমার কাজটা এটাই। এটা করেই সারভাইভ করতে হবে। তবে বিজ্ঞাপন, ইভেন্ট, ফিতে কাটা, মাচা শো রয়েছে। এখন লেখালিখি করেও কিছু পয়সা পাচ্ছি। আমাকে না ডাকলে আমি কী করব? আর ডাকলে বলবে মোটা, মানে বডিশেমিং।

আরও পড়ুন, ‘পুরস্কারের জন্য আমি কাউকে বোতল দিতে পারব না’

কারা বলল, মোটা?
এই তো ‘দুপুর ঠাকুরপো’র সেকেন্ড সিজনের জন্য আমার বাড়িতে এসে কথা বলে গেল। টাকাপয়সা ঠিক হয়ে গেল। তার পর হঠাত্ জানতে পারলাম করছি না।

কেন?
জানি না। আমাকে প্রপারলি কিছুই জানানো হয়নি।

কে জানাল আপনাকে?
টিভিওয়ালা মিডিয়া। তবে ওরাও কোনও কারণ জানে না। আমাকে জানায়নি কারণ। ওঁদের মধ্যে থেকে একজন ফোন ধরে বললেন, আমি মিটিংয়ে আছি। তিনিই আবার বললেন, আমরা সিজন থ্রি বা ফোর করতে পারি। যেন ওটা না করতে পারলে আমার জীবন শেষ! আমাকে লুক টেস্টে মশারির মতো শাড়ি পরতে দিয়েছিল জানেন (উত্তেজিত)?

মানে?
আরে শুধু স্ট্র্যাপলেস পরে, ক্লিভেজ, পেট, কোমর দেখানোটা যদি সেক্সি মনে হয় কারও তা হলে তার আরও একটু পড়াশোনা করা উচিত। আমি অ্যাভারেজের থেকে একটু বেশি শিক্ষিত। দেখুন, আমার কমফর্টের জন্য পিঠ খোলা ব্লাউজ পরি। সেটা দেখে যদি কেউ উত্তেজিত হয় তার দায় আমার নেই। আমার যা ইচ্ছে আমি পরব। শুনুন, কারও যদি কোনও খুঁত থাকে সেটা মেকআপ বা কস্টিউমে ঢেকে দেওয়াই উচিত। যিনি আমাকে প্রেজেন্ট করছেন, তিনি তো ভাল অভিনেত্রীকে প্রেজেন্ট করছেন, ভাল ভাবে প্রেজেন্ট করবেন। নাকি, এমন ভবে প্রেজেন্ট করবেন যাতে তার খুঁতগুলো প্রকট হয়?

আপনাকে প্রপারলি কমিউনিকেট করা হল না, আপনি কিছু বললেন না?
আমি আমার অসুবিধে বা ইনসাল্টটা জানিয়ে আইনজীবীর একটা চিঠি দিয়েছিলাম। ওরা তার কোনও উত্তর দেয়নি। আমার ওদের সঙ্গে কেস করা সম্ভব নয়। আসলে আর্টিস্টের জায়গাটা আজ খুব নড়বড়ে। ওই তেলমারা, চাটুকারিতা, ইয়েস স্যার হওয়াটাই প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কিন্তু এই চাটুকারিতার প্রসঙ্গ তো নতুন নয়, অনেকেই বহু আগে থেকে এ কথা বলেছেন।
আই এগ্রি। এটা নতুন নয়। কিন্তু এখনও তো শিল্পী কেউ কেউ রয়েছেন। আমি শিল্পী। এখনও ধান্দাবাজ হতে পারিনি। আমি মনে করি আমার কাজ কথা বলবে। আমি বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো করলে প্রেস ডাকতে পারব না। বরং আমার ব্যক্তিগত জীবনে প্রেস এলে কিঞ্চিত অসুবিধে হয়।

আরও পড়ুন, প্রেম নিয়ে কথা বলা কি ইশার বারণ?

কিন্তু এ বছর দোলে তো আপনি সেলিব্রেট করেছেন, সেখানে প্রেসও ছিল।
ঠিক বলেছেন। কিন্তু এ বছর হোলি সেলিব্রেট করার কারণ শ্রীদেবী। আমি একই সঙ্গে হোলি আর শ্রীদেবীর ভিডিও শুট করেছিলাম। ঠিক তার আগেই ওঁর মৃত্যু হয়। আমি শ্রীদেবীর ফ্যান। যখন ধর্ম নিয়ে লোকে হোয়াটস্‌অ্যাপে মেসেজ চালাচালি করে তখন আমার মনে হয়েছিল হোলি এমন একটা উত্সব যেখানে মানুষ ভালবাসাটাকে ধর্ম হিসেবে সেলিব্রেট করবে। একই সঙ্গে শ্রীদেবীকেও ট্রিবিউট জানিয়েছিলাম। আমি তখন প্রেসকে জানাতে চেয়েছিলাম কী কাজ করছি। আমি আসলে ইমোশনাল। সে জন্যই আমি শিল্পী। কোনও সিনেমা আমার ভাল লাগলে কেঁদে ফেলব। কিন্তু ভাল না লাগলে ওই হেসে হেসে ‘ভাল হয়েছে’ বলতে পারব না।

শেষ কোন বাংলা ছবি দেখলেন?
লাস্ট দেখেছি ‘মাছের ঝোল’। আমার খুব ভাল লেগেছিল। ডিরেক্টরকেও জানিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি কোনও ফিডব্যাক দেননি।

সেকি! ফিডব্যাক না পেয়ে খারাপ লেগেছে নিশ্চয়ই?
দেখুন, এখন ফিল্ম মেকিংয়ের পাশাপাশি মার্কেটিংটাও ডিরেক্টররা করছে। ফলে এত কাজ থাকে, সেই মুহূর্তে হয়তো পরিচালকের কাছে আমার লেখাটার গুরুত্ব ছিল না। আমি এটা মেনে নিয়েছি। আমার আর এ সব নিয়ে রাগ বা কিছু এখন হয় না। আমি এতটাই ইমোশনাল ‘মাছের ঝোল’ দেখে ঋত্বিককে জড়িয়ে কেঁদে ফেলেছিলাম।

সিনেমা হলে? সকলের সামনে?
হ্যাঁ। আসলে মাকে হারিয়েছি। তাই ওটা রিলেট করতে পেরেছি। আর এই ঋত্বিকই আমার সঙ্গে টেলিভিশনে কাজ করেছে। ও আমাকে দেখে অবাক হল। হয়তো ভেবেছিল, আজও সিনেমা দেখে এ ভাবে কেউ কাঁদে? আর অন্য লোকে ভেবেছিল হয় নাটক করছে, নাকি অন্য কোনও গ্রহ থেকে এসেছে? আসলে এখন এই রিঅ্যাকশনটাও লোকে গিভ অ্যান্ড টেক ফর্মুলায় ফেলে।

ইমোশনাল শ্রীলেখা নাকি নতুন সম্পর্কে জড়িয়েছেন? সত্যি?
সত্যি মিথ্যে জানি না। তবে আমার থেকে বয়সে ছোট এক বিশেষ বন্ধু আছে। ওর সঙ্গে কাজও করছি। কিন্তু মাঝেমধ্যেই ওকে ফোন থেকে বা জীবন থেকেও ব্লক করে দিই।

কেন?
(হাসতে হাসতে) ও যখন ন্যাগ করে তখন আমার স্পেস প্রবলেম হয়। পাঁচ বছর একা থাকতে থাকতে একা থাকাটা আমি এনজয় করি। বিয়ে তো করব না, এটা কনফার্ম। প্রথম থেকেই জানি, এ সম্পর্কের কোনও ফিউচার নেই। ওই একটা মায়া আছে, ভালবাসা আছে। কিন্তু ২০ বা ৩০ বছর বয়সে যেটা ছিল সেই প্রেম এখন আর নেই।

আরও পড়ুন, ‘কাজটা করি শুধু দিনের শেষে দর্শকের বাহ! শুনব বলে’

মানে?
ওর বয়সটা কম, ইমোশন অনেক বেশি। ওর ব্যাপারটা অনেক বেশি প্রকট, বয়সের কারণে। ওই বয়সে আমার এক্স হাজব্যান্ডের জন্য যে আকুতিটা ছিল সেটা সে আমার মতো করে রেসিপ্রোকেট করতে পারত না। ঠিক একই ভাবে আমি এখন ওর সেই আকুতিটা হয়তো রেসিপ্রোকেট করতে পারি না। এটা একটা অদ্ভুত ভিসিয়াস সার্কেল। আসলে প্রেম বিষয়টাই এখন ইলিউশন আমার কাছে।

আপনার মেয়ে ঐশী, এই সম্পর্কটা নিয়ে খুশি?
বাবা বা মায়ের পার্টনার বা বিশেষ বন্ধুকে কি কোনও ছেলে-মেয়েই সে ভাবে মেনে নিতে পারে? আমার মেয়ে খুব সেনসেটিভ এবং ম্যাচিওর্ড। ও কোনদিনই আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কৌতূহল দেখায়নি। আমি এ বিষয়ে ওর মতামত চাইনি। ওর বাবার জায়গাটা ও জানে। আজও আমরা মানে, বাবা-মা-মাইয়া একটা ইউনিট হিসেবে আছি। ফলে মাইয়া ওর মতো করে এ বিষয়টা হ্যান্ডেল করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE