‘কুঁজো’ ছবির একটি দৃশ্য।
দুই দেশ। দু’টো ছবি। দুই বন্ধু।
কমন কী বলুন তো?
ভাষা।
বাংলা ভাষা।
মাতৃভাষা। আদরের ফার্স্ট স্টেশন।
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়াটা ফের একবার একটানে উপড়ে ফেলল সম্প্রতি কলকাতার এক বৈশাখী বিকেল। মিলনের সাঁকো একটা ‘কুঁজো’, আর একটা ‘অক্ষয় কোম্পানীর জুতো’।
অবাক হচ্ছেন তো? ভাবছেন, একটা কুঁজো বা একটা জুতো কী করে দুই বাংলাকে মিলিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে?
হ্যাঁ রাখে। কারণ দু’টোই বাংলা শর্টফিল্ম। তাই সেলুলয়েডের হাত ধরেই ফের মিলন হল দুই বাংলার। মিলিয়ে দিলেন দুই পরিচালক সৌরভ দে এবং মাসুদ হাসান উজ্জ্বল। ‘সেভ হেরিটেজ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’-এর উদ্যোগে দু’দেশের দুই পরিচালকের শর্টফিল্ম দেখলেন তিলোত্তমার দর্শক। হাজির ছিলেন বাংলাদেশের নামকরা অতিথিরাও।
এমন একটা জার্নি শুরু করার জন্য ‘সেভ হেরিটেজ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’ বেছে নিয়েছিলেন ২-মে তারিখটা। সত্যজিত্ রায়ের জন্মদিনে এমন একটা উদ্যোগ সত্যিই কুর্নিশ দাবি করে।
সে দিন প্রথমে দেখানো হয় বাংলাদেশী পরিচালক মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের ছবি অক্ষয় কোম্পানীর জুতো’। ছবি আঁকা দিয়ে উজ্জ্বলের ছাত্র জীবন শুরু। দীর্ঘ ১২ বছরের অভিজ্ঞ পরিচালক বড়পর্দাতেও নিপুণ হাতে ছবি এঁকেছেন। তাঁর নায়ক এক কবি। যাঁর বন্ধুরা সকলেই প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু সে স্ব-ইচ্ছেয় বেছে নিয়েছে বোহেমিয়ান জীবন। এ হেন নায়কের ডেলি রুটিনে একটা দিন কী ভাবে এক অচেনা নারীর ফ্যান্টাসিজমে কেটে যায়, তা নিয়েই চিত্রনাট্যের জাল বুনেছেন পরিচালক। এই অচেনা নায়ককে চিনতে গেলে ৪৫ মিনিটের শর্টফিল্মটি আপনাকে দেখতেই হবে।
‘অক্ষয় কোম্পানীর জুতো’ ছবির একটি দৃশ্য।
দ্বিতীয় ছবি সৌরভ দে-র ‘কুঁজো’। একটি সত্যি ঘটনার ওপর ভিত্তি করে ছবিটি তৈরি। যেখানে কুঁজো নিজেই একটি চরিত্র। ছবির ক্লাইম্যাক্সে তার এন্ট্রি। দিনের পর দিন ধর্ষিতা এক মহিলাকে কী ভাবে কুঁজোটা মুক্তির দরজা খুলে দিল তার রুটম্যাপ রয়েছে ছবিতে। ধর্ষণের ঘটনা তো এখন প্রায় রোজই হেডলাইনে। কিন্তু ধর্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে সমাজের অন্ধকার দিকটা অন্য আঙ্গিকে দেখিয়েছেন সৌরভ। একটা অন্ধকার ঘর কী ভাবে তার মুড বদলায়, এক ফুটফুটে মেয়ে হঠাত্ একদিন কী ভাবে হারিয়ে যায়, তার পর ধর্ষিতা হতে হতে তার ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইটা মাত্র ২৮ মিনিটেই ফ্রেমবন্দি করেছেন পরিচালক।
সব মিলিয়ে সে দিনের ছবি শেষের সান্ধ্য আড্ডায় ফের এক হয়ে গেল দুই দেশ।
কেয়ার অফ সিনেমা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy