পরীমণি অভিনীত ছবিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার পঙক্তি ‘চুরি’র অভিযোগ।
সিয়াম-পরীমণি অভিনীত 'বিশ্বসুন্দরী' সিনেমার গান 'তুই কি আমার হবি রে' এই মুহূর্তে প্রবল জনপ্রিয়। এই গানের গীতিকার হিসেবেই বাংলাদেশে জাতীয় পুরস্কার পাচ্ছেন কবির বকুল। গানটির প্রথম দু'লাইন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা ‘হঠাৎ দেখা’র— ‘রাতের সব তারাই আছে, দিনের আলোর গভীরে’। কবির বকুল ওই কবিতার দুই লাইন থেকে ‘আলো’ শব্দটি শুধু বাদ দিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথের কবিতা থেকে চুপচাপ দু'লাইন চুরি!
রবীন্দ্রনাথের কবিতা থেকে দুই লাইন নিয়ে গান তৈরি করার ব্যাপারে বাংলাদেশের কপিরাইট আইনে কী আছে? কপিরাইট রেজিস্ট্রার জাফর রাজা চৌধুরী বলেন, "যদি কেউ রবীন্দ্রনাথের দু'টি লাইন গানে ব্যবহার করে থাকেন তা হলে অবশ্যই তাঁর স্বীকৃতি দিতে হবে। রবীন্দ্রনাথের নাম উল্লেখ করতে হবে। কেউ যদি এক বা দু'লাইন কোনও উদ্ধৃতি ব্যবহার করে থাকেন তা হলেও রবীন্দ্রনাথের নাম তাঁর উল্লেখ করা উচিত। এই স্বীকৃতি যদি না দেওয়া হয় তা হলে কেউ অভিযোগ জানালে তা নিশ্চয় কপিরাইট আইন লঙ্ঘন করবে।" রাজা মনে করছেন এ ক্ষেত্রে আরও বড় অপরাধ রবীন্দ্রনাথের কবিতার লাইন টুকে তার থেকে কেবল 'আলো' শব্দ বাদ দিয়ে গানে তার ব্যবহার।
ভারতে এই অন্য লেখকের কবিতার লাইন ‘চুরি’র বিষয়কে কী ভাবে দেখা হয়? আনন্দবাজার অনলাইনকে রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী প্রমিতা মল্লিক বললেন, ‘‘পুরো বিষয় শুনে মনে হচ্ছে এ বিষয়ে খুব কিছু করার নেই। রবীন্দ্রনাথের লাইন ব্যবহার করে গান তৈরি ঘোরতর অন্যায়। কিন্তু যতদূর জানি কিছু সংখ্যক অবধি শব্দ আর সুর নেওয়া যেতে পারে। আমাদের এখানে সংগীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তীই তো গান লিখেছিলেন ‘যদি তোর ডাক শুনে’ গান নিয়ে।’’
সুরকার, গায়ক, সংগীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্র বললেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে দুটো বিষয় আছে। একটা কপিরাইট। আর একটি মূল্যবোধ। আমরা লেখায় অনেক জনপ্রিয় কবি বা লেখকের রচনা ব্যবহার করি।দেখতে হবে রচনার অংশ নিচ্ছেন তিনি কী উদ্দেশে তা ব্যবহার করছেন।তবে যে লেখা আমি ব্যবহার করছি সেই লেখকের নাম তো উল্লেখ করতেই হবে।’’ যদিও রবীন্দ্রনাথের রচনার স্বত্বর প্রতি বিধিনিষেধ আইনত এখন আর নেই।
তবুও বাংলাদেশ সিনেমার গানে রবীন্দ্রনাথের গানের ব্যবহারকে ‘চুরি’ ছাড়া আর অন্য কিছু বলতে নারাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy