‘ডন কো পকড়না মুশকিল হি নহি, নামুমকিন হ্যায়’, অমিতাভ বচ্চন অভিনীত ‘ডন’ ছবির এই সংলাপ সত্তর দশকের যুবকদের মুখে মুখে ফিরত। রবিবার দীর্ঘ রোগভোগের পর মারা গেলেন সেই ‘ডন’-এর জন্মদাতা পরিচালক চন্দ্র বারোট। বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। চন্দ্রর স্ত্রী দীপা বারোট সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সাত বছর ধরে ফুসফুসের সমস্যায় (পালমোনারি ফাইব্রোসিস) ভুগছিলেন পরিচালক। ভর্তি ছিলেন একাধিক বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই প্রয়াত হন তিনি। পরিচালকের মৃত্যুর খবর ছড়াতেই শোকস্তব্ধ বলিউড।
১৯৭৮ সালে চন্দ্র ‘ডন’ পরিচালনা করেন। পরিচালকের মুনশিয়ানায়, অভিনেতাদের অভিনয়গুণে ছবিটি কালোত্তীর্ণ। ‘ডন’-এর রিমেক-এ তাই অমিতাভের জুতোয় পা গলানোর লোভ সামলাতে পারেননি শাহরুখ খান। ইতিমধ্যেই ফ্র্যাঞ্চাইজ়ির তৃতীয় কিস্তি তৈরিতে হাত রাখছেন ফারহান আখতার। তাঁর পছন্দের ‘ডন’ রণবীর সিংহ।
কিন্তু চন্দ্র খুব সহজে ছবিটি তৈরি করতে পারেননি। সে সময়ের তাবড় অভিনেতা দেব আনন্দ, ধর্মেন্দ্র, জিতেন্দ্র— ফিরিয়ে দিয়েছিলেন প্রয়াত পরিচালককে। ব্যতিক্রম অমিতাভ বচ্চন, যিনি পর্দায় ‘ডন’ হওয়ার সাহস দেখিয়েছিলেন। ছবির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন সেলিম-জাভেদ জুটি।
পরিচালকের জন্ম ও বেড়ে ওঠা তানজ়ানিয়ায়। প্রথম জীবনে তিনি ব্যাঙ্ককর্মী ছিলেন। পরে ভারতে পাকাপাকি বসবাসের সিদ্ধান্ত নেন। প্রয়াত পরিচালক-অভিনেতা মনোজ কুমারের পরামর্শে বিনোদন দুনিয়ায় পা রাখেন। ‘ডন’-এর আগে ‘পূরব ঔর পশ্চিম’, ‘ইয়াদগার’, ‘শোর’, ‘রোটি কাপড়া ঔর মকান’-এর মতো জনপ্রিয় ছবির সহকারী পরিচালক হিসাবে কাজ করেন তিনি। এ সব ছবির নায়ক মনোজ কুমারও প্রয়াত হয়েছেন চলতি বছরেই।
চন্দ্রের আরও একটি স্মরণীয় কাজ বাংলা ছবি ‘আশ্রিতা’। এই ছবি দিয়ে মিঠু মুখোপাধ্যায় বাংলা ছবির দুনিয়ায় প্রত্যাবর্তন করেছিলেন। তাঁর বিপরীতে অভিনয় করছিলেন ‘বুনিয়াদ’-খ্যাত কানোয়ালজিৎ। অবাঙালি হয়েও বাঙালির মনকে ভীষণ সুন্দর করে পর্দায় তুলে ধরেছিলেন চন্দ্র। সেই কারণে তিনি বাঙালি দর্শকদের কাছেও সমাদৃত।