Advertisement
E-Paper

ইমোটিকনসের সংশয়

স্মাইলিতে হিমসিম? মেড ইজি সোমঋতা ভট্টাচার্য-রএ বছর অক্সফোর্ডের ‘ওয়ার্ড অফ দ্য ইয়ার’ কী জানেন? উঁহু, কোনও শব্দ নয় কিন্তু। একটা ‘ইমোজি’ বা ‘ইমোটিকন’। হেসে কুটিপাটি হয়ে চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে যাচ্ছে একটা হলদেটে ন্যাড়া মুখের। পোশাকি ভাষায়, ‘ফেস উইথ টিয়ার্স অব জয়’!

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫ ০০:৩৯

এ বছর অক্সফোর্ডের ‘ওয়ার্ড অফ দ্য ইয়ার’ কী জানেন?

উঁহু, কোনও শব্দ নয় কিন্তু। একটা ‘ইমোজি’ বা ‘ইমোটিকন’।

হেসে কুটিপাটি হয়ে চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে যাচ্ছে একটা হলদেটে ন্যাড়া মুখের। পোশাকি ভাষায়, ‘ফেস উইথ টিয়ার্স অব জয়’!

ফেসবুক, এসএমএস, হোয়াট্সঅ্যাপে সবাই চেনে তাকে। সেই মুখটাই এ বছর অক্সফোর্ডের সেরা শব্দ।

অবশ্য অর্কুটের জমানা থেকেই হাসিমুখ, মুখভার, রাগী বা মুখ ব্যাঁকানোর জন্য শুরু হয়ে গিয়েছিল ‘ইমোটিকন’ বা ‘ইমোজি’-র জমাটি কারবার। জাপানি ভাষায় ‘মোজি’ মানে অক্ষর। এ বার আর এক ধাপ জাতে উঠল তারা।

মুখের মিছিল...

ফেসবুকের মেসেজ বক্সের ঝুড়িতে (যার পোশাকি নাম স্টিকার স্টোর) প্রথমে ছিল খুদে খুদে পাতি হলদে ন্যাড়া জাস্ট ইমোটিকন্‌স। কেউ মুচকি হাসছে, কেউ হো-হো করে, কারও মুখে ফোকলা হাসি, কেউ বিরক্ত, কেউ ধন্দে, কেউ কেঁদে ভাসাচ্ছে। তার পরে একে একে এল ‘পুশিন’, ‘মিপ’, ‘প্রিকলি পিয়ার’, ‘বিস্ট’, ‘মাগসি’, ‘কোকো’রা। কেউ আদুরে কুকুর, কেউ ইঁদুর বা টবে রাখা কাঁটাগাছ। তা-ও তাদেরই কত রঙ্গ! কেউ কেঁদে ফাটিয়ে দিচ্ছে দুঃখে। কেউ বোতল বোতল মদ্যপান করে চিৎপাত। কেউ মহাব্যস্ত ল্যাপটপ বা সিডি প্লেয়ার নিয়ে। তো কেউ স্কুটার চালিয়ে একরাশ ধোঁয়া ছেড়ে ধাঁ…

মুড খুব ভাল থাকলে, কাউকে প্রচণ্ড ভালবাসা দেখাতে ইচ্ছে করলে বেছে নিতে পারেন মাগসি-কে। তার আবার দু’টো স্টোর আছে। একটা শুধু ‘মাগসি’, আর একটা ‘মাগসি ইন লাভ’! গোলাপ, লাল হৃদয় নিয়ে প্রচণ্ড ভালবাসাবাসি শুরু করে দেবে সে নাচতে নাচতে। আসলে বোঝাটা খুব সহজ। মানুষের মুখ যেমন মনের আয়না, তেমনই এদেরও। আনন্দ, দুঃখ, রাগ, বিরক্তি, হতাশা- সব ধরা পড়ে যায় এই ইমোজিদের মুখেই। শুধু যে জীবটিকে সব থেকে মনে ধরছে আপনার, তার কার্যকলাপ একটু খুঁটিয়ে দেখলেই হবে। এমনকী, এ বাজারে এসে পড়েছে ‘শোলে’ও। সেখানে গব্বর তার দেড়েল মুখে দেঁতো হাসি নিয়ে কফি এগিয়ে দিচ্ছে। বসন্তি কখনও রক্তিম হৃদয় দেখিয়ে অকাতরে ভালবাসা বিলোচ্ছে, কখনও বা ‘নেহিইইইইই’ স্টাইলে ভেঙে পড়ছে কান্নায়। ও দিকে, আবার বীরুর হৃদয় গেল খানখান হয়ে, যদিও ডাম্বেল ভাজছে জয়।

জমিয়ে দিচ্ছে কারা?

ইমোটিকনের এই সাম্রাজ্যের মধ্যে কেউ কেউ হয়ে গিয়েছে, যাকে বলে ‘ক্লিয়ার উইনার’! এই যেমন- ‘টুজকি’। খাড়া কান, সরলরৈখিক চোখের, কালো বর্ডার আর সাদা দেহের এই আজব প্রাণীটির হাবভাব দেখলেই গুলগুলিয়ে হাসি আসতে বাধ্য। কখনও সে দু’হাত মেলে ভান করছে ওড়ার। কখনও শূন্যে সাঁতার কাটছে। কখনও দেওয়ালে মাথা কুটে মরছে। আবার কখনও চোখে অন্ধকার দেখে পড়ে যাচ্ছে ধপ করে। বডি-ল্যাঙ্গোয়েজেই পরিষ্কার তার মনের ভাব।

ধরুন, মনটা বেশ বিগড়ে আছে আপনার। অমনি হঠাৎ পছন্দের কোনও মানুষের চ্যাটবক্স থেকে ‘উ’ শব্দে মুখ বাড়াল মাথায় উল্টোনো বালতি পরা, একহাতে ওয়াইন গ্লাস নিয়ে মাইকেল জ্যাকসন স্টাইলের এক ‘পার্টি ফাউল্‌স’। নয়তো তুমুল প্রেমে পড়ে যাওয়া ‘মাগসি’ দাঁতে গোলাপ চেপে ভুরু নাচিয়ে ইশারা করল! ফিক্‌ করে ঠিক হাসি বেরিয়ে যাবেই আপনার ঠোঁটের কোনা দিয়ে। পরে যতই অস্বীকার করুন না কেন!

ঘেঁটে ফেলবেন না

সে সব কথা ভেবেই ফেসবুকে বেড়ে চলেছে অপশন ইমোজি-দের! ইদানীং আবার সেই সব ইমোটিকনদের আরও ভাল করে সাজিয়েগুছিয়ে ব্যবহারোপযোগী করে তোলার জন্য করা হয়েছে কিছু ক্যাটিগরি বা বিভাগ- ‘হ্যাপি’, ‘ইন লাভ’, ‘স্যাড’, ‘ইটিং’, ‘সেলিব্রেটিং’, ‘অ্যাক্টিভ’, ‘ওয়ার্কিং’, ‘স্লিপি’, ‘অ্যাংরি’, ‘কনফিউস্‌ড’। ব্যস! এ বার ‘পুশিন’, ‘মিপ’, ‘প্রিকলি পিয়ার’, ‘বিস্ট’, ‘মাগসি’দের অভিব্যক্তি অনুযায়ী গুঁজে দেওয়া হয়েছে একেকটা বিভাগে। ‘ইমোট’ করা হয়ে গেল আরও সহজ! এমনিতেই তো সেই ‘স্টিকার স্টোর’-এ নিত্যনতুন মুখেরা ভিড় জমায় প্রতিনিয়ত। দিশে পাওয়া মুশকিল, সত্যিই! তবে সেখান থেকে পছন্দসই মুখেদের দেখেশুনে বেছে নিলেই হল!

চলমান কিছু চাইলে

এখন আবার নতুন চলে এসেছে ‘জিআইএফ’ বা ‘জিফ’ ইমোটিকন অর্থাৎ ভিডিও ইমোটের ব্যবস্থা। তাতে আবার বিভিন্ন সিনেমার দৃশ্য থেকে বা কোনও স্মরণীয় ক্লিপিংস থেকে কিছু অংশ রাখা হয়েছে। রয়েছে কিছু অ্যানিমেশনও। তবে তাতে অপশন বড় একটা বেশি নেই। তাই জনপ্রিয়তায় এখনও আগেরগুলোই সেরা। আর শুধু চ্যাট বা মেসেজ বক্সে কেন! কারও স্টেটাস-এর কমেন্টেও তো দিব্যি দেওয়া যায় এ সব ইমোটিকন!

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

এ তল্লাটে তো আবার খাবার-দাবার, জামাকাপড়, ঘরবাড়ি সব কিছুরই রয়েছে বন্দোবস্ত। জন্মদিনে উইশ করতে চাইলে ভার্চুয়াল কেক এবং ওয়াইনের বন্দোবস্ত। ইদানীং থাম্বস্ আপ এবং অন্যান্য মানুষের চেহারা সংক্রান্ত ইমোটিকনেদের গায়ের রংও পছন্দ করে নেওয়া যাচ্ছে।

ব্যস! তবে তো হয়েই গেল! গা-পিত্তি জ্বালিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে কারও? জাস্ট এক বার ‘টুজকি’-র ঝুড়িতে উঁকি মেরে দেখুনই না অথবা নিয়ে আসুন হোয়াট্সঅ্যাপে ল্যাজ উঁচিয়ে পাশ ফিরে তাকানো সেই বাঁদরটাকে!

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy