Advertisement
E-Paper

‘সোশ্যাল মিডিয়া একমাত্র পিআর’

বাংলা ছবিতে আবার আদিল হুসেন। শহরে প্রচারে এসে আনন্দ প্লাসের মুখোমুখি অভিনেতা বাংলা ছবিতে আবার আদিল হুসেন। শহরে প্রচারে এসে আনন্দ প্লাসের মুখোমুখি অভিনেতা

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৮ ২০:০২

প্র: কলকাতার সঙ্গে‌ আপনার অনেক দিনের সম্পর্ক...

উ: তা বটে। ১৯৭৫ সালে প্রথম বার দাদার সঙ্গে এসেছিলাম। তখন আমার দশ বছর বয়স। এক বন্ধুর সঙ্গে বেরিয়ে রাস্তায় হারিয়েও গিয়েছিলাম। ১৯৮৯ সাল অবধি দফায় দফায় এই শহরে এসেছি। এখানে রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, উৎপল দত্তের নাটক দেখেছি। কলকাতায় বার বার আসার একটা বড় কারণ ছিল, সস্তায় সুস্বাদু খাবার। গড়িয়াহাটের এক স্টুডিয়োপাড়ায় বেগুন দিয়ে ইলিশ মাছের ঝাল খেয়েছিলাম। জিভে যেন এখনও লেগে আছে (হেসে)!

প্র: শুনেছি, আপনি ভাল রান্না করতে পারেন...

উ: ভাল কি না জানি না। তবে আমার হাতের রান্না অনেকের পছন্দ। মোচার ঘণ্ট, সরষে দিয়ে মাছের ঝাল, আলুপোস্ত ভালই পারি। তবে এঁচোড়ের তরকারি এখনও পারি না (হেসে)।

প্র: ‘মাটি’র জামালের চরিত্র কতটা আলাদা?

উ: জামালের চরিত্রটার সঙ্গে আমার জীবনের মিল আছে। আমস্টারডামে মনের মতো চাকরি পেয়েছিলাম। ওখানে সাড়ে তিন বছর কাটিয়েছি। তার পর দেশের টানে ফিরে এসেছি। জামালও আমেরিকায় সফল হয়েছিল। তবে শিকড়ের খোঁজে সে ফিরে আসে।

প্র: আপনার বাণিজ্যিক ছবির যে সংখ্যক দর্শক, ভিন্ন ধারার ছবি কিন্তু অত দর্শক পায় না...

উ: আমার মতে, ভারতীয় দর্শক ভাল ছবি দেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এর জন্য তাঁরা কোনও ভাবে দায়ী নন। আমরা যাঁরা ছবি তৈরি করছি, অভিনয় করছি... আমাদের হাতে ক্ষমতা আছে দর্শকের দেখার চোখ তৈরি করে দেওয়ার। আমার বাড়িতে রোজ সকালে ধ্রুপদী সঙ্গীত বাজানো হয়, কখনও জাপানি ক্ল্যাসিকালও। এক দিন দেখলাম, ছেলে শুনে শুনেই ওই সুর বাজাতে শিখে গিয়েছে। শিল্প-সংস্কৃতির চর্চায় সরকারেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকার কথা। দুর্ভাগ্যবশত, আমাদের দেশে তা হয় না। ভাল ছবি দেখলে দর্শক পাঁচটা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন, নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবেন। দর্শকের সেই মানসিক উত্তরণ হচ্ছে না।

প্র: ‘ফোর্স টু’, ‘কম্যান্ডো টু’-তে পর্দায় আপনাকে খুব কম সময়ের জন্য দেখা গিয়েছিল...

উ: কিন্তু ওই ছবিগুলোয় ভাল টাকা পাই। ‘মুক্তিভবন’-এর মতো ছবি করার জন্য টাকাও তো চাই। এক সময়ে এটা নিয়ে মনে দ্বন্দ্বও ছিল। তখন আমার অভিনয়ের শিক্ষক স্বপনদা (বসু) বলেছিলেন, ‘তুমি তো ডাকাতি করে টাকা উপার্জন করছ না। অভিনয় করে যে টাকা পাচ্ছ, তা এমন ভাবে খরচ করো যাতে শিল্পীসত্তারও সন্তুষ্টি হয়।’

প্র: মুম্বই ইন্ডাস্ট্রি কি বাণিজ্যিক ভাবে আপনাকে ভরসাযোগ্য মনে করে?

উ: যে তারকার সোশ্যাল মিডিয়ায় যত বেশি ফলোয়ার, বলিউড তার পিছনে ছোটে। হলিউডেও তা-ই। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটা জায়গা তৈরি হয়েছে। তবে এখানে আমাকে মুখ্য চরিত্রে কাস্ট করতে এখনও কেউ ভরসা পায় না। আর আমার আলাদা করে পিআর নেই। সোশ্যাল মিডিয়াই একমাত্র পিআর।

প্র: অভিনেতা হওয়ায় আপনার বাবার সায় ছিল না। ছেলের কোনও পেশা নিয়ে কি আপত্তি করবেন?

উ: ও কুমোর হতে পারে, নাপিত হতে পারে। চাইলে ইঞ্জিনিয়ার বা ব্যবসায়ীও হতে পারে। তবে ভণ্ড সাধুবাবা হতে চাইলে ত্যাজ্যপুত্র করব (জোরে হাসি)।

প্র: কোনও তারকাকে দেখে মুগ্ধ হয়েছেন?

উ: ২০০১ সালে মুম্বইয়ের এক পাঁচতারা হোটেলে বসে ছিলাম। দেবসাবকে (আনন্দ) দেখে আপনা থেকেই দু’হাত জড়ো করে নমস্কার করেছিলাম। আর এক বার অস্ট্রেলিয়ায় লিফ্টে দেখা হয়েছিল জেফ্রি রাশের সঙ্গে। ওঁর কাজ এত ভাল লাগত, দেখেই ফোনের ক্যামেরা সঙ্গে সঙ্গে অন করে ফেলেছিলাম (হাসি)।

প্র: আপনি তো ভাল মিমিক্রি করেন। অমিতাভ বচ্চনের সামনে ওঁর মিমিক্রি করতে পারবেন?

উ: এক বার ওঁকে বলেওছিলাম, ‘আপনার কণ্ঠস্বর অনুকরণ করে আমি অনেক টাকা রোজগার করেছি। তবে তার এক পয়সাও আপনাকে দিইনি।’ উনি স্বভাবোচিত ভঙ্গিতে বলেছিলেন, ‘নো প্রবলেম।’ তবে মনে হয় না, ওঁর সামনে অত ভাল করতে পারব (হাসি)।

Adil Hussain Indian television actor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy