প্র: প্রত্যেকটা ছবিতে আপনাকে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে দেখা যাচ্ছে। নিজের জন্য কাজটা আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে কি?
উ: আমার আইডিয়াটা ওটাই। মেঘনা (গুলজার) যদি আমার কাছে এই ছবিটা নিয়ে না আসত, লোকসানটা আমারই হতো। একটা চরিত্রে মনোনিবেশ করার পর শুধু সেটার কথাই ভাবি। ফিল্ম হিট হলে ভাবি, এর পর কী? অনেকে বলেন, আমাকে নাকি পর্দায় সাবলীল লাগে। আমি এমন নির্দেশকদের সঙ্গেই কাজ করি, যাঁরা আমাকে ভেঙেচুরে গড়ে নেন। আমি সাইলেন্ট অ্যাক্টর। চিৎকার করে জগৎকে জানাই না।
প্র: প্রথম বার মায়ের সঙ্গে অভিনয় করছেন...
উ: জানি না, মেঘনার আগে কেন কেউ আমাকে আর মাম্মিকে (সোনি রাজদান) একসঙ্গে ছবিতে নেননি। প্রথমে খবরটা পেয়ে খুব খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু টেনশনেও থাকতাম। মা সংলাপ ভুলে যাবে না তো! আসলে বাড়িতে মা দুর্বোধ্য হিন্দি বলেন। আর ছবিতে তো উর্দু বলতে হয়েছে! কিন্তু আমার মতোই মা-ও সাবলীল। আর মাকে সেটে দেখার অনুভূতিই আলাদা। আমি একদম আমার মায়ের মতো। কিন্তু মায়ের একটা খারাপ স্বভাব আমি পেয়েছি— লোককে ওষুধ এবং ডাক্তার নিয়ে জ্ঞান দেওয়া। যখন মা কাউকে জ্ঞান দিত, আমি মাকে বকতাম, ‘তুমি ডাক্তার নও।’ এখন আমি এক জিনিস করি।
প্র: ‘রাজ়ি’র পটভূমি ভারত-পাকিস্তানের ১৯৭১ সালের যুদ্ধ। পাকিস্তানের শিল্পীদের ভারতে কাজ করা নিয়ে বহু বিতর্ক হয়েছে। পুরো বিষয়টা আপনি কী ভাবে দেখেন?
উ: আমি মনে করি, যেমন শিল্পের কোনও সীমা থাকা উচিত নয়, ঠিক তেমনই মানবতারও সীমা থাকা অনুচিত। আমরা দুই দেশ এক সময়ে একসঙ্গে ছিলাম। এটুকু বলতে চাই যে, বাবার মতো আমি নির্ভীক নই। অনেক সময়ে আমি বলতে চেয়েছি এক। আর সেটা ছাপা হয়েছে অন্য ভাবে। তার পর আমাকে নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। এতে ভাল তো কিছু হয় না, উল্টে খারাপই হয়।
প্র: বাবার সঙ্গে নিজের পেশা এবং ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আলোচনা করেন?
উ: ছবি মুক্তি পাওয়ার পর বাবা আমার অভিনয় নিয়ে বিশ্লেষণ করেন। আগে একদম সময় পেতাম না। কিন্তু এখন তো বাবা নাছোড়বান্দা! ফোন করে সোজা সেটে চলে আসেন। দশ মিনিট হলেও আমরা একসঙ্গে সময় কাটাই। ইদানীং আমরা ভাল বন্ধু হয়ে উঠেছি। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে হয়তো কথা বলাও শুরু করব।
‘রাজ়ি’তে
প্র: বাবার সঙ্গে কাজ করবেন কবে?
উ: আমাদের শুধু আলোচনা হয়, হতেই থাকে (হেসে)... কাজ এক দিন না এক দিন তো করবই। তবে কবে করব, জানি না।
প্র: দিদি শাহিন ও পূজার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কী রকম?
উ: পরিবারে আমরা সকলে সব সময়ে পরস্পরের পাশে দাঁড়াই। শাহিন আর পূজা দু’জনেই ওদের জীবন নিয়ে বই লিখছে। শাহিনের বই আমি পড়েছি। এটুকু বলতে পারি, আমাদের পরিবারে সবচেয়ে বুদ্ধিদীপ্ত মানুষ শাহিনই। পূজার বই পড়ার অপেক্ষায় আছি। ওদের জন্য আমার গর্ব হয়।
প্র: কাশ্মীর কেমন দেখলেন?
উ: সত্যি কথা বলি? খুব দুঃখ হল ওখানে গিয়ে। ওখানকার লোকেদের সঙ্গে কথা বলে। ওখানকার মানুষ খুব আফসোস করেন, পর্যটকদের সংখ্যা কমে গিয়েছে বলে। ভীষণ নেগেটিভ পাবলিসিটি হয়।
প্র: পর্দায় বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেন। আসল জীবনে আলিয়া কেমন?
উ: ২৫ বছরের একটা মেয়ের যেমন হওয়া উচিত, তেমনই। ছবির কোনও চরিত্র নিয়ে আমি বাড়িতে ফিরি না। ফোটোশুট বা কোনও ইভেন্টে নিজের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ কন্ট্রোল করতে হয়। না হলে ক্যামেরার সামনে ভাল দেখায় না। সেটা ছেড়ে দিলে আমি খুবই সাধারণ। ক্যামেরার বাইরে অভিনয় করলে তো বোর হয়ে যাব!
প্র: আগের আলিয়া আর এই আলিয়ার মধ্যে অনেক পার্থক্য। মা-বাবা সেটা খেয়াল করেন?
উ: হ্যাঁ, আমি আগের চেয়ে অনেক পরিণত। মা আমাকে বলেছে, আমি তরুণী থেকে দায়িত্বপরায়ণ মহিলায় পরিণত হয়েছি। কিছু বছর আগেও আমি ভীষণ বিশৃঙ্খল ছিলাম। এখন অনেক সামলে নিয়েছি। আমি মাকেই গাইড করি এখন।
প্র: ‘কলঙ্ক’-এ মাধুরীর (দীক্ষিত) সঙ্গে শুটিং করছেন। কেমন লাগল?
উ: সেটে মাধুরী দীক্ষিতকে দেখে আমি পাথর হয়ে গিয়েছিলাম, দু’দিন শুটিং করার পর আড়ষ্টতা একটু কেটেছে। কোনও দিন ভাবিনি, একসঙ্গে ক্যামেরার সামনে কাজ করব। মাধুরী এখনও এত সুন্দরী যে, চোখ ফেরানো যায় না।
প্র: ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ এবং ‘গাল্লি বয়’— এক দিকে রণবীর কপূর, তো অন্য দিকে রণবীর সিংহ...
উ: দু’জনেই ভীষণ আলাদা। কিন্তু দু’জনের ব্যক্তিত্বেই ম্যাজিক আছে। আর এই মুহূর্তে ছবির চরিত্র নিয়ে কোনও কথা বলতে পারব না।
প্র: সোনম কপূরের বিয়েতে যাচ্ছেন নিশ্চয়ই?
উ: নিশ্চয়ই যাব। আমি ভীষণ খুশি আর এক্সাইটেড ফর সোনম। করিনা কপূর, সোনম— এরা কেরিয়ারের যে পর্যায়ে এসে বিয়ে করলেন, তাতে সকলের সামনে নতুন উদাহরণ তুলে ধরলেন। আমার তো মনে হয় যে, বিয়ে মানেই কেরিয়ার শেষ নয়। অনুষ্কা হোক বা বেবো বা সোনম... এঁদের সকলের জন্যই আমি খুব খুশি। আমিও যদি কিছু বছরের মধ্যে বিয়ে করি, তা হলে ওঁদের উদাহরণটা খুব কাজে লাগবে। আর একটা কথা বলি। সোনমের বিয়েতে কর্ণ (জোহর) পারফর্ম করছেন। সেটা দেখার জন্য আমি রীতিমতো উদগ্রীব (হাসি)!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy