Advertisement
০১ মে ২০২৪

‘সৃজিতের সঙ্গে কাজ করে অপয়া ফেজ়টা হয়তো কেটে গিয়েছে!’

কেরিয়ারের সেরা সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন যিশু সেনগুপ্ত। জীবনের চড়াই-উতরাই নিয়ে অকপট অভিনেতাকেরিয়ারের সেরা সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন যিশু সেনগুপ্ত। জীবনের চড়াই-উতরাই নিয়ে অকপট অভিনেতা

যিশু সেনগুপ্ত। ছবি: দেবর্ষি সরকার।

যিশু সেনগুপ্ত। ছবি: দেবর্ষি সরকার।

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:৫৪
Share: Save:

প্র: কঙ্গনা রানাবত না সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কার বেশি মাথা গরম?

উ: আমার কাছে সৃজিত মুখোপাধ্যায় (মুখে ফিচেল হাসি)। ও আমাকে ডিরেক্ট করে, সুতরাং বুঝতেই পারেছেন। যদিও ‘মণিকর্ণিকা’র কিছু অংশ কঙ্গনা ডিরেক্ট করেছে। বাট শি ইজ় কুল। সৃজিতের মতো নয়। সৃজিত এটা শুনলে বলবে, ‘ভাই, আমাকে যুদ্ধে যেতে হয়। বেশি বাজেট থাকলে আমিও ঠান্ডা মাথায় শুট করতাম।’

প্র: কঙ্গনার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন? ওঁকে নিয়ে তো অনেক নেতিবাচক কথাবার্তা শোনা যায়।

উ: সেগুলো নিয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না। কঙ্গনা ব্রিলিয়ান্ট অভিনেত্রী! হাসি-ঠাট্টাও করে।

প্র: মহেশ মঞ্জরেকরের সঙ্গে ‘দেবীদাস ঠাকুর’, তার পর ‘মণিকর্ণিকা’, ‘এনটিআর’— এই কাজগুলোর অভিজ্ঞতা কেমন?

উ: খুব ভাল ফেজ়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। কত ধরনের চরিত্র করতে পারছি। একটা বিষয় আলাদা করে বলব, তেলুগু ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করে আমি অভিভূত। পেশাদারিত্ব বলিউডে দেখেছি, কলকাতায় দেখেছি। তেলুগুতে অভিনেতাদের যে সম্মানটা দেওয়া হয়, তা আর কোথাও পাইনি। কলকাতায় তো আমি ঘর কী মুরগি ডাল বরাবর! তার কারণ অবশ্য আমি সকলের সঙ্গেই বন্ধুর মতো মিশি। তেলুগুতে আমি সুপারস্টার অব বেঙ্গল। চরিত্র ছোট-বড় যাই হোক না কেন, সবাইকে স্যর বলে ডাকে ওরা।

প্র: এই মুহূর্তে টলিউডের এক নম্বর জায়গাটা যিশু সেনগুপ্তর?

উ: অনেকেই বলছে, ইয়ে সাল তো তেরা হ্যায়। হিন্দি, তেলুগু, বাংলা সবেতেই আছি। আমার মতে, কাজ আজ আছে, কাল না-ও থাকতে পারে। এখানে চার-পাঁচ জন হিরোর মধ্যেই কাজ ভাগাভাগি হয়ে যাচ্ছে। একটা জিনিস খারাপ লাগে, আগামী প্রজন্মের মধ্যে অনির্বাণ (ভট্টাচার্য) ছাড়া আর কেউ সে ভাবে উঠে এল না। কাউকে দেখলামও না, অন্য কিছু করার চেষ্টা করছে। বা করলে তাকে বাকিরা সাহায্য করছে। কিছু পরিচালক ভাল কাজ করছে... সৌকর্য ঘোষাল, প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য। কিন্তু এদের কেউ সে ভাবে সুযোগ করে দিচ্ছে না।

ছবিতে যিশু

প্র: ‘জাতিস্মর’-এ সৃজিত আপনাকে কাস্ট করার সময়ে অনেকে বলেছিলেন, যিশু অপয়া। সেই জায়গা থেকে পরিচালকের সাতটা ছবিতে আপনি কাজ করলেন...

উ: কে জানে, সৃজিতের সঙ্গে কাজ করে অপয়া ফেজ়টা হয়তো কেটে গিয়েছে (হাসি)! আসলে জী়বনকে কোনও দিন সিরিয়াসলি নিইনি। কাজটা ভাল করে করতে চাই। মেয়েদের ভাল করে মানুষ করতে চাই। আমি ভগবানে বিশ্বাস করি। নইলে আমার কেরিয়ারে এ ভাবে ফিরে আসার কথাই নয়। যা সব জঘন্য ছবি করেছি! কোনওটা অস্বীকার করি না। আমার সঙ্গে যারা কেরিয়ার শুরু করেছিল, তারা আজ কোথায়? আমি ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘চিত্রাঙ্গদা’ করেছি, তার সঙ্গে যাত্রাও করেছি। অনেস্টলি নিজের কাজটা করে গেলে আপনি এক দিন না এক দিন তার দাম পাবেনই। নিজেকে দিয়ে সেটা বুঝতে পারি।

প্র: ‘এক যে ছিল রাজা’ কি কেরিয়ারের সবচেয়ে ব়়ড় চ্যালেঞ্জ?

উ: ফিজ়িক্যালি তো বটেই। ইন্দো-নেপাল বর্ডারে শুটের সময়ে টেম্পারেচার মাইনাস ফাইভ, ছাঙ্গুতে বরফে হেঁটেছি, হাড় কাঁপানে ঠান্ডায় বারাণসীতে ডুব দিয়েছি। কী কী করেছি ভাবলে এখন অবাক লাগছে!

প্র: সন্ন্যাসীর লুক নিয়ে প্রচুর চর্চা চলছে...

উ: এই লুকটা সেট হওয়ার সময়ে আমার আর সৃজিতের প্রচণ্ড ঝগড়া চলছিল। ৩১ ডিসেম্বর বউয়ের সঙ্গে বেরোনোর কথা। আর তখন লুক নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট চলছে। সৃজিত কিন্তু নিজে সেখানে নেই। অন্য কোথাও থেকে ফোন করে মাথা খারাপ করছে। তবে প্রথম শট দেওয়ার সময়ে একটা অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছিল।

প্র: বাড়িতে সময় দিতে না পারার জন্য সমস্যা হচ্ছে না?

উ: হচ্ছে। নীলাঞ্জনা বা মেয়েরা যখন জিজ্ঞেস করে কবে ফিরছি, ওইটা খুব ধাক্কা দেয়। তবে ওরা জানে আমি কতটা ব্যস্ত। কিন্তু তা-ও একটা প্রত্যাশা থাকে।

প্র: নীলাঞ্জনা কি আপনাকে নিয়ে পজ়েসিভ?

উ: হ্যাঁ। তা একটু আছে। আর আমি সেটা উপভোগও করি। ও বলে, ‘গুড লুকিং হাজ়ব্যান্ড থাকলে কী সমস্যা হয়, সেটা তুমি বুঝবে না।’ আর হাজ়ব্যান্ড যদি অভিনেতা হয়, তা হলে তো হয়ে গেল! তবে বিয়ের চোদ্দো বছর পরেও যদি এটা থাকে, ভাল তো। ইন্ডাস্ট্রিতে লোকে বলে, যিশু ভয় পায় নীলাঞ্জনাকে। ওটা কিন্তু ভয় নয়, রেসপেক্ট। বন্ধুদের সঙ্গে যে ভাবে মিশি, সেখানে হুট করে নীলাঞ্জনা চলে এলে আমি সংযত হয়ে যাই। লোকে এটাকে ভয় ভাবে। পারস্পরিক শ্রদ্ধা থাকলেই সম্পর্ক ভাল থাকে।

প্র: লিংক আপের খবরে কী বলেন স্ত্রী?

উ: পাত্তা দেয় না। এমন কত বার হয়েছে, নীলাঞ্জনা কোনও মেয়েকে দেখিয়ে বলেছে, ‘দ্যাখো, কী ভাল দেখতে’। আমি দেখে ভাল বললে আবার বলেছে, ‘হয়েছে এ বার চলো’। ওর এই অধিকারবোধটা আমার ভাল লাগে। সব পুরুষই চায়, বউ একটু পজ়েসিভ হোক। তবে হ্যাঁ, পজ়েসিভনেস যদি সন্দেহের জায়গা নেয়, তা হলে সমস্যা আছে। নীলাঞ্জনার ও সব নেই।

প্র: আপনার আর সৃজিতের ‘দাম্পত্য’ নিয়ে কী বলেন নীলাঞ্জনা?

উ: সেটা নিয়ে জেলাস (হাসি)! সৃজিত আসলে পরিবারের মতো হয়ে গিয়েছে। আমার আর সৃজিতের ঝগড়া হলে নীলাঞ্জনা সামলায়। আবার উল্টোটাও হয়। সৃজিত বলে, ‘তোদের দেখে বিয়ে করতে ইচ্ছে হয়’। আমি বলি, একদম নজর দিবি না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE