Advertisement
০৮ মে ২০২৪
মুখোমুখি আত্মপ্রচারবিমুখ অভিনেতা কে কে মেনন
Kay Kay Menon

Kay Kay Menon: ‘কে কে মেনন তাকে সাজিয়ে রাখার বস্তু নয়’

সমালোচনা গঠনমূলক হলে আপত্তি নেই। তবে আমার মতে, সত্যজিৎ রায় ‘রে’ দেখে খুশি হতেন

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২১ ০৭:৫৩
Share: Save:

প্র: নতুন সিজ়নে হিম্মত সিংহ কি বেশি সাহস (হিম্মত) দেখাবেন?

উ: হিম্মত সিংহ বরাবর সাহসী (হাসি)। তাই সাহসের সূচকে কখনও ঘাটতি হয় না।

প্র: নতুন সিজ়নের নাম ‘স্পেশ্যাল অপস ১.৫’সিজ়ন টু-এর বদলে ১.কেন?

উ: পরিচালক নীরজ পাণ্ডে দর্শককে চমক দিতে পছন্দ করেন। ছবিতে বা সিরিজ়ে ছকভাঙা ভাবনা তুলে ধরতে চান তিনি। ট্রেলার থেকে স্পষ্ট—গল্পটা হিম্মতের, তার অচেনা এক জার্নির। সে জন্য টাইমলাইন কয়েক বছর পিছিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে সিরিজ়ের অভিনব নামকরণ বুঝতে দর্শককে শো দেখতে হবে ।

প্র: ট্রেলার দেখে মনে হচ্ছে, প্রস্থেটিক মেকআপের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। সেটা কি ঠিক?

উ: আমাকে এখন যেমন দেখতে, সেটা চরিত্রেরও লুক। তবে একটু বেশি বয়সের হিম্মত সিংহকে ফুটিয়ে তোলার জন্য মেকআপের সাহায্য নেওয়া হয়েছে।

প্র: অতিমারির মধ্যে শুটিং করা কতটা কঠিন ছিল?

উ: কোভিড-বিধি মেনে শুট করা মোটেও সহজ ছিল না। বিদেশেও শুটিং হয়েছে। প্রযোজনা সংস্থার পক্ষে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, শুটিং সময়মতো শেষ করা। তবে সবটা ভালয় ভালয় করতে পেরেছি।

প্র: মনোজ বাজপেয়ী অভিনীত ‘দ্য ফ্যামিলি ম্যান’ সিজ়ন টু-সাফল্য কি বাড়তি চাপ তৈরি করেছে আপনার কাছে? একই ঘরানার দু’টি শো নিয়ে তুলনা চলছে।

উ: দু’টি শোয়ে দু’জন আলাদা অভিনেতা কাজ করেছেন। পৃথিবীতে দু’টি মানুষের কাজ কখনও এক ধাঁচের হয় না। তাই এই তুলনা অমূলক।

প্র: বছরে মুক্তিপ্রাপ্ত আপনার সিরিজ় ‘রে’ নিয়ে দর্শকের মধ্যে চর্চা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের প্রতিক্রিয়া নিয়ে আপনার কী মত?

উ: দর্শকের সব ধরনের মতই আমার কাছে গ্রহণযোগ্য। আর সমালোচনা যদি গঠনমূলক হয়, তবে তা নিয়েও কোনও আপত্তি নেই।

প্র: সত্যজিৎ রায়ের গল্পগুলির অনেক বেশিমাত্রায় আধুনিকীকরণ নিয়ে দর্শকের একাংশ আপত্তি তুলেছিলেন...

উ: আমার মতে, সত্যজিৎ রায় এই কাজ দেখে খুশি হতেন (হাসি)।

প্র: ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ‘স্পেশ্যাল অপস’-এর মতো শো কি আপনার দর্শকসংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করেছে?

উ: এটা ঠিক। ‘স্পেশ্যাল অপস’ আমার কেরিয়ারে এখনও অবধি সবচেয়ে জনপ্রিয় শো। জনপ্রিয় বলতে, আমার অন্য কাজের তুলনায় অনেক বেশিসংখ্যক মানুষ এই শো দেখেছেন। নতুন প্রজন্মের অনেকেই এই শো দেখে আমার পুরনো ছবিগুলো দেখার উৎসাহ পেয়েছেন। সে দিক দিয়ে কেরিয়ারের ভাল সময়ে সিরিজ়টি মুক্তি পেয়েছে।

প্র: ‘হাজ়ারো খোয়াইশে অ্যায়সি’র মতো অন্য ধারার ছবির পাশাপাশি ‘সরকার’, ‘লাইফ ইন আ মেট্রো’র মতো মূলধারার ছবিও করেছেন। কেরিয়ারের এত বছর পরে এখন কী দেখে কাজ বেছে নেন?

উ: শৈল্পিক কাজ বেছে নেওয়ার কোনও ফর্মুলা হয় না। এটা খুবই সাবজেক্টিভ। যখন কোনও প্রস্তাব আসে, ওই মুহূর্তে আমার কী মনে হচ্ছে, মূলত সেটার উপরে ভিত্তি করে কাজ বেছে নিই। যে পরিচালক বানাচ্ছেন, তাঁর সঙ্গে আমার ওয়েভ লেংথ মিলছে কি না, বা তাঁর কাজের ধারার সঙ্গে আমি নিজেকে মেলাতে পারব কি না, এগুলোই বিচার্য বিষয়।

প্র: অতিমারির কারণে সিনেমা হলের ব্যবসা বিপর্যস্ত। আগামী দিনে সিনেমা কি তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে?

উ: অতিমারির আবহ কেটে গেলে সিনেমা হল পুরনো জায়গা ফিরে পাবে। ওটিটি মাধ্যমটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক। কিন্তু সিনেমা হলে ছবি দেখার মধ্যে সমষ্টিগত অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই দু’টি মাধ্যমে দেখার অভিজ্ঞতা আলাদা। দর্শকের কথা ভেবে কনটেন্ট বানানোর ক্ষেত্রেও নির্মাতাদের ভাবনা আলাদা থাকে। আমার মতে, আগামী দিনে দু’টি মাধ্যমের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান থাকবে।

প্র: এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আত্মপ্রচারে বিশ্বাসী নন আপনি। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে নিজের প্রচার না করলে নিরাপত্তাহীনতা গ্রাস করে না?

উ: আমার মতে উল্টোটা সত্যি। যাঁরা সব সময়ে নিজেদের প্রচার করছেন, নিরাপত্তাহীনতা থেকেই করছেন (হাসি)। আমার যে কোনও প্রজেক্টের জন্য যত ভাবে প্রচার করতে হয়, তত ভাবে করব। কিন্তু ব্যক্তি কে কে মেনন তাকে সাজিয়ে রাখার বস্তু নয়। আমার জীবন, আমার ভাবধারা প্রচারের জন্য যে দক্ষতা দরকার, সেটা আমার নেই। যাঁরা ব্যক্তিজীবনের প্রচার করেন, তাঁদের সেই ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু আমার সেই গুণ নেই বলে প্রচার চাই না।

প্র: আপনার স্ত্রী বাঙালি। নিজেকে কি বাংলার জামাই মনে হয়?

উ: নিবেদিতা (ভট্টাচার্য, টেলিভিশন অভিনেত্রী) তো লখনউয়ের। সে দিক দিয়ে আমি নিজেকে ভারতীয় বলতে পছন্দ করি। তবে কলকাতায় শুট করেছি, থেকেছি। ওখানকার সংস্কৃতি-ঐতিহ্য সম্পর্কে আমার ধারণা রয়েছে।

প্র: দুর্গাপুজোর সময়ে কখনও এসেছেন কলকাতায়?

উ: না, পুজোর সময়ে আসিনি। তবে শ্রেণি-বর্ণ নির্বিশেষে ওখানকার মানুষ খুব সচেতন। চারপাশে কী ঘটছে, তা সম্পর্কে সকলে জানেন। ওখানে দুটো জিনিস সহজে পাওয়া যায়, ‘মুফ্ত কী চা-য়, মুফ্ত কী রায় (হাসি)!’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kay Kay Menon
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE