Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Dolly Kitty Aur Woh Chamakte Sitare

তারার ঝিলিক পাওয়া গেল না 

দুই তুতো বোনের গল্প। তাঁদের জীবনের সঙ্গে বুনে দেওয়া হয়েছে নারীজীবনের সমস্যা।

ফিল্মের একটি দৃশ্যে কঙ্কণা সেন শর্মা।

ফিল্মের একটি দৃশ্যে কঙ্কণা সেন শর্মা।

নবনীতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:৪৬
Share: Save:

ডলি কিটি অউর উয়ো চমকতে সিতারে

পরিচালনা: অলঙ্কৃতা শ্রীবাস্তব

অভিনয়: কঙ্কণা সেন শর্মা, ভূমি পেডনেকর, বিক্রান্ত মেসি, অমোল পরাশর, আমির বশির

৫/১০

দুই তুতো বোনের গল্প। তাঁদের জীবনের সঙ্গে বুনে দেওয়া হয়েছে নারীজীবনের সমস্যা। তার মধ্যে যেমন আছে লিঙ্গবৈষম্য, তেমনই আছে যৌন চাহিদা, লোকদেখানো ভাল থাকার অভিনয়। কখনও কখনও ডলি-কিটির গল্প স্পর্শ করে। কিন্তু পরক্ষণেই ছন্দপতন হয়। একটা সমস্যা থেকে জাম্পকাট অন্য সমস্যায়। তাই দর্শকও গোটা ছবিতে হোঁচট খেতে-খেতে এগোন পরিণতির দিকে।

নয়ডাবাসী ডলিদিদির (কঙ্কণা) কাছে বিহার থেকে চলে এসেছে তার তুতো বোন কাজল ওরফে কিটি (ভূমি)। উদ্দেশ্য নতুন শহরে নতুন চাকরি, নতুন জীবন। কিন্তু জামাইবাবু নানা অছিলায় তাকে স্পর্শ করতে চায়। সে কথা কিটি স্পষ্ট জানায় তার ডলিদিদিকে। কিন্তু ডলি তার ‘হম দো হমারে দো’ সুখী পরিবারের ছবিতে খুশি, নতুন ফ্ল্যাট কেনার নেশায় মশগুল। বোনের কথা এড়িয়ে যায়। কিটিও খুঁজে নেয় তার মাথা গোঁজার আস্তানা। ডলির জীবনে আসে ডেলিভারি বয় উসমান (অমোল) আর কিটির জীবনে প্রবেশ ঘটে প্রদীপের (বিক্রান্ত)। সমান্তরালে চলতে থাকে দুই বোনের জীবনের ওঠা-পড়ার গল্প।

দুই বোনকে কেন্দ্র করে তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা, যৌন চাহিদার যে গল্প দিয়ে ছবি শুরু হয়, তা মন্দ লাগে না। মেয়েদের সমানাধিকারের জন্য লড়াইয়ের গল্প এখন বলিউডের সিলেবাসে কমন। যৌন চাহিদাও আনাগোনা করে। চেনা কনসেপ্ট হলেও ভাল লাগে। অন্য রকম লাগে রোম্যান্স অ্যাপ সেন্টারে কিটির চাকরি পাওয়া। সেন্টারে অধিকাংশ পুরুষই কল করে ফোন সেক্সের জন্য। সেখানে উল বুনতে-বুনতে এক পক্বকেশ মহিলার কথোপকথন বেশ মজার। এই পর্যন্ত ছবিও ঠিকঠাক ট্র্যাকে এগোচ্ছিল। কিন্তু এর মধ্যে ডিজের চরিত্র, উগ্র রাজনীতি, প্রেমে বিশ্বাসঘাতকতা... একাধিক সাবপ্লটে অহেতুক কনফিউশনের সৃষ্টি হয়েছে। ছবি যে বক্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছিল, তা ক্রমশ বদলাতে থাকে। চরিত্রদের সঙ্গে দর্শক একাত্ম হওয়ার সুযোগও পান না। ফলে ছবিতে চরিত্রদের চোখ ভিজলেও দর্শকের মন ভেজে না।

কিছু ভাল মুহূর্ত তৈরি হতে গিয়েও হয় না। ডলির ছোট ছেলের পুতুল খেলার দৃশ্য ভাবতে শেখায়। ছোটবেলা থেকে ছেলেদের গাড়ি আর মেয়েদের পুতুল খেলার চেনা ছক ভেঙে দেন পরিচালক। কিন্তু পরক্ষণেই আয়নার সামনে মায়ের অন্তর্বাস পরে শিশুটির নিজেকে দেখার দৃশ্য আবার চেনা গতে এনে ফেলে গল্পকে। একটা বাচ্চা ছেলে পুতুল নিয়ে খেললেই কি তার ওরিয়েন্টেশনে সমস্যা থাকতেই হবে? যেখানে একটা নতুন দিক দর্শানোর সুযোগ ছিল, সেটাও নষ্ট করে ফেলেছেন পরিচালক।

অভিনয়ের দিক দিয়ে কঙ্কণা, ভূমি, বিক্রান্ত, আমির প্রত্যেকেই ভাল অভিনয় করেছেন। অমোল, কর্ণ, নীলিমা আজ়িমের মতো অভিনেতাদের উপস্থিতিই সার, খুব কম দৃশ্যে তাঁরা সুযোগ পেয়েছেন।

ছবিতে কিটিকেই বলতে দেখা যাচ্ছে, মহিলাদের জন্যও এ রকম রোম্যান্স অ্যাপ প্রয়োজন। কিন্তু তার জামাইবাবু যখন সেই অ্যাপে ফোন করছে, সে বিরক্ত। এ দিকে ছবিতেই দেখানো হচ্ছে যে গত দু’বছরে ডলি ও তার স্বামীর কোনও শারীরিক সম্পর্ক নেই। পরিবারের পুরুষের চাহিদা ও মহিলাদের চাহিদাকে যেন তখন আলাদা নিক্তিতে মাপা হয়েছে। গোটা ছবিতে দেখানো সেই চাহিদা তাই একপেশে লাগে ছবির শেষে এসে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE