একদিন নয়, টানা দু’দিন ধরে কর্নিয়ায় ক্ষত নিয়ে রাত-ভোর বানতলার একটি বাড়িতে শুটিং করেছেন স্বস্তিকা দত্ত। শুক্রবার আনন্দবাজার ডট অনকে এ খবর জানালেন ‘ভানুপ্রিয়া ভূতের হোটেল’-এর ছবির কাহিনি এবং অন্যতম চিত্রনাট্যকার জ়িনিয়া সেন। তাঁর কথায়, “চোখে পিন ফোঁটার মতো অসহ্য যন্ত্রণা। ভাল করে তাকাতে পর্যন্ত পারছে না। চিকিৎসক রূপককান্তি বিশ্বাস অ্যানাসথেটিক ড্রপ দিয়েছিলেন। যার জেরে মিনিট ২০ চোখ খুলতে পারছিল স্বস্তিকা। ওই অবস্থাতেই দুটো দিন, দুটো রাত শুটিং করে গিয়েছে। ছুটি নেয়নি।” অভিনেত্রীর মনের জোরের প্রশংসা করেছেন ছবির পরিচালক অরিত্র মুখোপাধ্যায়ও। তাঁর কথায়, “স্বস্তিকার অবস্থা দেখে প্রত্যেকে ওকে সহযোগিতা করেছেন। বাকি অভিনেতারা ওর জন্য অপেক্ষা করেছেন। স্বস্তিকা যখন শট দিতে পেরেছে তখন বাকিরা শুটিং করেছেন।”
কী করে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটল স্বস্তিকার সঙ্গে? কোনও ভৌতিক কিছু?
“একেবারেই নয়। জোরে হাওয়া বইছে এমন একটি দৃশ্য ছিল। তার জন্য সেটে বড় বড় স্ট্যান্ডিং পাখা চালানো। হঠাৎ বড় দানার বালি হাওয়ায় উড়ে ঢোকে স্বস্তিকার চোখে। সামান্য চোখ কচলেছিল বেচারি। ভেবেছিল ঠিক হয়ে যাবে। বদলে এত বড় বিপত্তি।” সঙ্গে সঙ্গে পরিচালক যোগাযোগ করেন বিশিষ্ট চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে। তিনি আশ্বাস দেন, নির্দিষ্ট সময় অন্তর চোখে ওষুধ আর আইপ্যাক দিলে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠবেন স্বস্তিকা। তাঁর পরামর্শ মেনে দু’দিন ধরে এ ভাবেই শুটিং করেছেন অভিনেত্রী। চোখের এ রকম সমস্যায় কাজল পরাও নিষেধ। অভিনেত্রী রূপটান নিয়েছেন। শটের সময় কাউকে বুঝতে দেননি, কতটা কষ্ট হচ্ছে তাঁর। তিনি জানতেন, শুটিং ভেস্তে গেলে অনেক টাকার ক্ষতি হবে প্রযোজনা সংস্থার।
আরও পড়ুন:
শুক্র আর শনিবার শুটিং হচ্ছে না নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় নিবেদিত এই ছবির। “দু’দিন বিশ্রাম পাচ্ছে স্বস্তিকা। আশা করছি, এতে সুস্থ হয়ে যাবে।” রসিকতাও করতে ভোলেননি অরিত্র। বলেছেন, “লাভায় আমরা তিন দিনের শুটিং করলাম। নিখুঁত ভৌতিক পরিবেশ! এক এক সময় এমন কুয়াশা জমছিল যে দু’ফুট দূরের কিছু দেখা যাচ্ছিল না। হঠাৎ করে কেউ কুয়াশার ভিতর থেকে সামনে এসে দাঁড়ালে ভয়ে চিৎকার করে উঠতাম। অথচ এখানে কোনও ভৌতিক ঘটনাই ঘটল না!”
বদলে তাঁদের নাজেহাল করেছে বৃষ্টি আর জোঁক। টানা শট দেওয়ার পর ছবির অন্যতম অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিক খেয়াল করেন, জোঁক তাঁর পা ছেঁকে ধরেছে। “কাঞ্চনদার পা অনেক ক্ষণ ধরে চুলকোচ্ছিল। শট দেওয়ার পর পায়ের দিকে তাকিয়ে দেখেন এই অবস্থা। আমরা তাই পকেটে নুন নিয়ে ঘুরতাম”, অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন অরিত্র।