Advertisement
E-Paper

অবসর আছে আহ্লাদে

শুটিংয়ের ফাঁকে অভিনেতারা অবসর কাটান কী ভাবে, খোঁজ নিল আনন্দ প্লাস‘জয়ী’ ধারাবাহিকের দেবাদৃতা বসুর ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই রকম। ধারাবাহিকের জা-ননদই হয়ে উঠেছে তাঁর বন্ধু। তবুও ব্যক্তিগত সম্পর্ক ধরা আছে তার জায়গায়, ‘‘দাদু, দিদিমা বা বন্ধুবান্ধবও সেটে আসে আমার সঙ্গে দেখা করতে। শুটিংয়ের ফাঁকেই ওদের সঙ্গে সময় কাটানোটা আমার এক রকম বিনোদন বলতে পারেন,’’ জানালেন অভিনেত্রী।

নবনীতা দত্ত

শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
বিক্রম, দিতিপ্রিয়া, দেবাদৃতা

বিক্রম, দিতিপ্রিয়া, দেবাদৃতা

মেকআপ, সংলাপ মুখস্থ, শুটিং... এ সবের মাঝে টুকরো অবসর, যা জুড়ে থাকে নিজেদের অস্তিত্ব। ধারাবাহিকের সেটেই দিনের বেশির ভাগ সময় কাটে রানি রাসমণি, দেবী চৌধুরানি, সিরাজের মতো চরিত্রদের। সেট ঘিরেই তাদের জীবন আবর্তিত হয়। ধারাবাহিকের শেডিউলে ইমার্জেন্সি ছাড়া ছুটি মেলে না কারও। অনেকের পরিবার পড়ে থাকে কয়েক স্টেশন দূরে। হাত বাড়ালেই পাওয়া যায় না হয়তো বন্ধুও। সেখানে এই একচিলতে অবসরই তাঁদের সারা দিনের অক্সিজেন জোগায়। সেই সময়ে কী করেন তাঁরা?

সেটের মাঠে

সিরাজের সঙ্গে দেবী চৌধুরানি ব্যাডমিন্টন খেলছেন বা ‘বিজয়িনী’র কেকাকে ইয়র্কার ছুড়ছেন ‘কে আপন কে পর’-এর জবা। এই দৃশ্যই স্বাভাবিক সিরিয়ালের সেটে। জবা অর্থাৎ পল্লবী শর্মা জানালেন, ‘‘এখানে পাশাপাশি অনেক সেট। তারা পড়শির মতোই। বিকেলে ব্রেক পেলে পাড়া ঘুরতেও বেরোই। তখন ‘বিজয়িনী’ বা ‘আমি সিরাজের বেগম’-এর সেট ঘুরে আসি। আবার সেটের মাঝের খোলা জায়গায় দুপুর-বিকেলে চলে ক্রিকেট বা ব্যাডমিন্টন।’’ খেলা চলে রাসমণির সেটেও। দিতিপ্রিয়া রায়ের কথায়, ‘‘অবসরে ব্যাডমিন্টন খেলি বা মোবাইলে ছবি দেখি। আর সেট থেকে মাত্র পাঁচ মিনিট দূরত্বে আমার বাড়ি। তাই সময় পেলে সোজা হাঁটা দিই বাড়ির পথে। সামনে পরীক্ষা! পড়ার সময়টাও তো বার করতে হবে।’’

লক্ষ্মীলাভে সরস্বতী সহায়

স্কুল-কলেজের মাঝেই অনেকে পা রেখেছেন ছোট পর্দায়। কষ্ট করে কাজের ফাঁকেই পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। ‘খনার বচন’-এর ঐন্দ্রিলা সাহার এ বছর ক্লাস ইলেভন, ‘‘কাজের মাঝে সময় পেলে একটু পড়াশোনা তো করতেই হয়। সামনে আমার পরীক্ষা বলে অনেক হেল্প পাই।’’

পর্দার সিরাজ অর্থাৎ শন বন্দ্যোপাধ্যায়ের পড়াশোনার বাধ্যবাধকতা না থাকলেও তিনি শখে বই পড়েন। বই তাঁর সব সময়ের সঙ্গী। ‘‘সেটের মাঝে সুযোগ পেলেই বই পড়ি। ফিকশন আমার পছন্দের। তবে এখন ‘সেপিয়েন্স’ পড়ছি,’’ বললেন শন। শুধু তাই-ই নয়। বইয়ের সঙ্গেই থাকে তাঁর স্কেচবুক। আঁকিবুকি কাটেন অবসরে। পোর্ট্রেট ও ল্যান্ডস্কেপ তাঁর প্রিয় বিষয়।

এ রাজ্যে ঘুমও হানা দেয়

বাড়ি ফিরতে অনেক রাত হয়ে যায়। পরের দিন কল টাইম অনুযায়ী বেরোতেও হয় ভোরে। ঐন্দ্রিলার (খনা) বাড়ি মধ্যমগ্রামে। সকাল আটটায় কলটাইম থাকলে প্রায় ছ’টায় বেরোতে হয়, আবার বাড়ি ফিরতে ফিরতে রাত এগারোটা বেজে যায়। অন্য দিকে ‘দেবী চৌধুরাণী’ ধারাবাহিকের সোনামণি সাহারও দিনের প্রায় অধিকাংশ সময়ই বাড়ির বাইরে কেটে যায়। বাড়িতে ফিরে যেটুকু সময় হাতে থাকে, তা বরাদ্দ পরিবারের জন্য। ফলে ফাঁকি পড়ে ঘুমে। ‘‘তাই শুটিংয়ের ফাঁকে একটু সময় পেলেই ঘুমিয়ে নিই,’’ সোনামণির সরল স্বীকারোক্তি।

দ্বিতীয় পরিবার

পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে যত না দেখা হয়, তার চেয়েও বেশি সময় কাটে সহকর্মীদের সঙ্গে। ফলে অন্য একটা পরিবার তৈরি হয়ে যায় সেটে। পল্লবীর মতে, ‘‘আমরা এখানে একটা পরিবারের মতো। ফলে আলাদা করে অবসরের কথা ভাবি না। এখানেই পুরো দিন কেটে যায়। শটের মাঝে মেকআপ রুমেই ল্যাপটপে সকলে মিলে সিনেমা দেখি, চলতে থাকে আড্ডা।’’

‘জয়ী’ ধারাবাহিকের দেবাদৃতা বসুর ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই রকম। ধারাবাহিকের জা-ননদই হয়ে উঠেছে তাঁর বন্ধু। তবুও ব্যক্তিগত সম্পর্ক ধরা আছে তার জায়গায়, ‘‘দাদু, দিদিমা বা বন্ধুবান্ধবও সেটে আসে আমার সঙ্গে দেখা করতে। শুটিংয়ের ফাঁকেই ওদের সঙ্গে সময় কাটানোটা আমার এক রকম বিনোদন বলতে পারেন,’’ জানালেন অভিনেত্রী।

তবে অবসর নিয়ে মাথা ঘামান না বিক্রম চট্টোপাধ্যায়। ‘ফাগুন বউ’ ঐন্দ্রিলা সেন নিজেই দায়িত্ব নিয়েছেন বন্ধুর। ‘‘ঐন্দ্রিলা থাকতে আমি অবসর নিয়ে ভাবব? আমাকে এন্টারটেন করার দায়িত্ব ও-ই নিয়েছে। নিজের এন্টারটেনমেন্টও নিজেই করে নেয় ও! আপাতত এই সেটে একটা কুকুরের চারটে ছানা হয়েছে। এখন আমাদের কাজ হল ওই চারটে ছানাকে মানুষ করা!’’

দিনের শেষে কাজ-অবসর গুটিয়ে যখন অভিনেতারা পা বাড়ান ফিরতি পথে, তখনও তাঁদের অর্ধেক জীবন বেঁচে থাকে সেট চত্বরেই...

Serial Television Leisure Time
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy