Advertisement
E-Paper

শান্তনুর নাকি প্রেমে পড়তেই ইচ্ছে করে না

দাবি করলেন কলকাতার গায়িকার সঙ্গে প্রেম —সেটাও গসিপ। শান্তনু মৈত্র। সামনে সংযুক্তা বসু।যে লোকটা মিষ্টি বানায় সে যেমন প্যাশন দিয়ে বানায়, যে লোকটা গান গায় তেমনই প্যাশন দিয়ে গান গায়। ডিম্যান্ড সাপ্লাইয়ের দুনিয়া থেকে বেরিয়ে এসে যে আর একটা দুনিয়া আছে, সেটা একমাত্র কলকাতাতেই বোঝা যায়।

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৫ ২১:০৩
ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল।

ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল।

শান্তনু মৈত্র হঠাৎ পাল্টে গেলেন নাকি?

কেন?

সেদিন টিভিতে মোনালি ঠাকুরের সঙ্গে উদ্দাম ভাংরা নাচলেন....নাচটাও তা হলে....

(হা হা হা) নাচটা আমি জানি। ভাংরা নাচতে শিখেছিলাম দিল্লিতেই। ছোটবেলায় পঞ্জাবি পাড়ায় পটেলনগরে থাকতাম তো।

হঠাৎ আবার বাংলার রিয়েলিটি শোয়ে। মুম্বইতে কাজ কি কিছু কম পড়িয়াছে?

(হাসি) আমি তো বরাবরই কাজ কম করি। বছরে একটা ছবিতে মিউজিক দিই। তা ছাড়া অনেক দিন ধরেই মাথায় একটা প্রশ্ন ঘুরত। যার উত্তর আমি এ বারের ‘সারেগামাপা’য় এসে পেয়ে গেলাম।

কী প্রশ্ন?

মনে হত ভারতীয় সঙ্গীতের রিপ্রেজেন্টেশন কি শুধুই সিনেমার গান দিয়ে হবে? কত কী আছে! আমাদের গজল, ঠুমরি, কীর্তন, বাউল....আরও কত কী! নানা অঞ্চলের নানা গান। অজস্র শিল্পী, কত রকম গায়কি! এ বারের ‘সারেগামাপা’র ফরম্যাটে সবই থাকছে এক সেটে। তাই যখন চ্যানেল এসে আমাকে প্রস্তাব দিল, আমার ‘হ্যাঁ’ বলতে পাঁচ মিনিট সময় লেগেছিল মাত্র।

রিয়েলিটি শোয়ের শ্যুটিংয়ের জন্য এখন তো বারবার কলকাতায় আসছেন। এই শহরে এমন কী আছে যেটা মুম্বই বা ভারতের অন্য কোনও শহরে পাওয়া যায় না!

প্যাশন। যে লোকটা মিষ্টি বানায় সে যেমন প্যাশন দিয়ে বানায়, যে লোকটা গান গায় তেমনই প্যাশন দিয়ে গান গায়। ডিম্যান্ড সাপ্লাইয়ের দুনিয়া থেকে বেরিয়ে এসে যে আর একটা দুনিয়া আছে, সেটা একমাত্র কলকাতাতেই বোঝা যায়।

রিয়েলিটি শোয়ে যে সব লোকশিল্পীকে পাচ্ছেন তাঁদের দিয়ে আপনার ছবিতে প্লেব্যাক করাবেন?

ডেফিনিটলি। দু’বছর সময় দিন। এদের কাউকে না কাউকে আমি অবশ্যই ব্যবহার করব। প্লেব্যাকে হোক বা প্রাইভেট অ্যালবামে— আমি কাজ দেবই। আমি এত মুগ্ধ এঁদের গানে। জাস্ট ওয়ার্ল্ড ক্লাস ট্যালেন্ট।

এত মুগ্ধতা, কিন্তু শ্রেয়া ঘোষালের মতো তো কেউ উঠে আসছেন না?

শ্রেয়া ঘোষাল যদি বারবার উঠে আসে, তা হলে তো শ্রেয়া ‘শ্রেয়া ঘোষাল’ হয় না।

শ্রেয়া ঘোষাল না হোক, ছোটখাটো সুযোগ তো পাওয়া উচিত…

রিয়েলিটি শোয়ের শিল্পীদের ঘর সংসার পাল্টে যাচ্ছে। আমি এক প্রতিযোগীকে চিনি যার বাবা শিয়ালদহ স্টেশনের নীচে স্যুটকেস সেলাই করতেন। এখন গাড়ি-বাড়ি সব হয়েছে। এই পাওনাগুলোই বা কম কী?

গাড়ি-বাড়ি হওয়া কি প্লেব্যাকের বিকল্প হতে পারে?

প্লেব্যাকের সুযোগ ক’জনই বা পায়। কিন্তু রিয়েলিটি শো করে ঘর-সংসারের অবস্থা যে পাল্টাচ্ছে এটাই বা কম কীসে!

কলকাতায় অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীর ছবিতে এত কাজ করেন। সৃজিত মুখোপাধ্যায়, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবিতে কাজ করেন না কেন?

আমাকে যদি সৃজিত-কৌশিকেরা ডাকে, নিশ্চয়ই সুর দেব। অবশ্য গল্পটাও পছন্দ হওয়া চাই।

কিন্তু ‘অন্তহীন’য়ের পর বাংলা ছবিতে আর হিট নেই আপনার…

আমি এটাও তো জানি না ‘অন্তহীন’ হিট কিনা। তবে হিট, ফ্লপ ভেবে আমি গানে সুর দিই না। এক সময় সকালবেলা উঠে চাকরিতে যেতাম। রোজগার করতাম। সেই জীবন বদলে এখন গানে সুর দিয়ে পয়সা পাচ্ছি। এটাই আমার কাছে অবিশ্বাস্য।

কেউ কেউ বলে থাকেন আপনার সুর খুব রিপিটেটিভ হয়ে যাচ্ছে…

হতে পারে। রিপিটেটিভ হতেই পারে। কিন্তু আমি সব সময়ই চেষ্টা করি সেটা যেন না হয়।

তিন বছরে একটা করে বড় মাপের ছবিতে কাজ করেন। এটা কি সেফ খেলা হচ্ছে না?

‘সেফ’ খেলার ব্যাপার নয়। আমার একটা ছবি করার পরও অনেক কিছু করার থাকে। ভ্রমণ, ডাইভিং, মাউন্টেনিয়ারিং, রান্না, ছবি তোলা। এ সব করতেই একটা একটা করে বছর কেটে যায়। তা ছাড়া আমার ব্রেক নিয়ে কাজ করতে ভাল লাগে। ‘পরিণীতা’র পর আমি এক বছরের ব্রেক নিয়েছিলাম। ‘থ্রি ইডিয়টস’ করার পর আবার এক বছরের ব্রেক।

‘পিকে’ রিলিজ করল। কিন্তু গানগুলো ভাল হলেও তেমন হিট হয়নি…

আমার ছবির গান হিট না হলেও এক শ্রেণির মানুষের মনে গিয়ে পৌঁছয়। সেটাই বা কম কি? গিভ মি সাম সান শাইন গানটি এখনও কোনও কোনও স্কুলে অ্যানুয়েল ফাংশানে বাজে। ‘হাজারো খোয়াইশে অ্যায়সি’ যখন রিলিজ করেছিল, তখন তেমন ভাবে সাড়া পড়েনি। এখন ‘বাওরা মন’ গানটা একটা কাল্ট সং। আমার গান মানুষের মনে সাড়া জাগাতে সময় নেয়।

আচ্ছা অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরীর পরের ছবিতেও আপনি সুর দিচ্ছেন। বারবার ওঁর ছবিতে কাজ করেন। এই মিলটা হল কী ভাবে?

আমি আর অনিরুদ্ধ মানুষ হিসেবে একরকম। গানবাজনার পছন্দ এক রকম। খাওয়াদাওয়া, বেড়াতে যাওয়ার রুচি একরকম। সেই থেকেই একটা বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছে। এখন আর আমাদের বন্ধুত্বের সঙ্গে কাজের কোনও সম্পর্ক নেই। সুজিত সরকারের সঙ্গে বন্ধুত্বটাতেও কাজের কোনও ভূমিকা নেই এখন। বন্ধুত্বটাই বড়।

পরিচালক সুজিত সরকার আপনার এত ভাল বন্ধু। কিন্তু ‘পিকু’তে সুর দিলেন অনুপম রায়। রাগ হয়নি?

আমি অনেক বার সুজিতকে বলেছি ‘পিকু’ ছবিটা মিস হয়ে গেল। কিন্তু তাই বলে অনুপমের ওপর আমার রাগ হয়নি। আমার সঙ্গে অনুপমের প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুধুই ফুটবল মাঠে। সুজিতের প্রয়োজন ছিল অনুপমের সাউন্ডটা। সেটা ও কাজে লাগিয়েছে। আমার রাগ না হওয়ার আর একটা কারণ আমি নানা ধরনের কাজ করি। যদি শুধুই সুর নিয়ে পড়ে থাকতাম, তা হলে আমার মনে নানা ক্ষোভ আসত। সেটা হওয়ার উপায় নেই। আমার জগতে বৈচিত্র অনেক। ব্রাজিলে খেলা দেখতে যেতে ইচ্ছে করে, সাইপ্রাসে বেড়াতে যেতে ইচ্ছে করে, দেখতে ইচ্ছে করে লাভা বেরিয়ে আসা আগ্নেয়গিরি। রান্নার মধ্যে দিয়ে আমি নানা দেশের সংস্কৃতির স্বাদ পাই। এই তো সেপ্টেম্বর মাসে আমার ফোটোগ্রাফির এগজিবিশন হবে। বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র যাঁরা বাজান তাদের নিয়ে এই প্রদর্শনী।

একটা কথা, কানেকটিভিটির এই যুগে বেড়াতে গিয়ে নেটওয়ার্ক কভারেজ না থাকলে অসুবিধে হয় না? কত কাজের সুযোগ মিস হয়ে যেতে পারে।

বাই নেচার আমার বৈষয়িক অ্যাটাচমেন্ট খুব কম। কাজের কথা ভাবি না বেড়াতে যাওয়ার সময়। সঙ্গে কোনও মোবাইলও থাকে না। স্ত্রী সারদা যখন যায় ওর মোবাইলটা অন থাকে। মোবাইল থাকা মানেই সব সময় কার ফোন এল, কী মেসেজ এল এই সব দেখা। যেটা আমি চাই না। বেড়াতে গিয়ে সারদা না থাকলে মা-বাবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখি বুথ থেকে ফোন করে।

তা হলে তো আপনাকে যোগাযোগ করাই কঠিন।

(হাসি) হ্যাঁ। তা একটু কঠিন। একবার বিধু বিনোদ চোপড়া আমাকে ফোন করেছেন। কিছুতেই আমাকে মোবাইলে না পেয়ে খুঁজে খুঁজে বাড়িতে ল্যান্ডলাইনে ফোন করলেন। সারদা ফোনটা তুলে বলেছিল ‘শান্তনু তো এখন বাইরে, ও ফোন সঙ্গে নেয়নি’। শুনে বিনোদ অবাক। বললেন, ‘‘আমি ওকে থ্রি ইডিয়টস’য়ের প্রিমিয়ারে নেমন্তন্ন করার জন্য ফোন করেছিলাম। কিন্তু ও যখন মোহমায়ার দুনিয়ার বাইরে থাকতে চায় ওকে থাকতে দাও। ও বৈরাগী মানুষ। ওকে ঘুরতে দাও।’’ আসল কথা, একটা মোবাইল সঙ্গে থাকা মানে হাজার হ্যাপা। দামি মোবাইলের জন্য আমার প্রাণটাই চলে যেতে পারে বেড়াতে গিয়ে।

এই সব শখের জন্যই শুনেছি গুলজারের সঙ্গে আপনার ভারি বন্ধুত্ব?

হ্যাঁ। গত ছয়-সাত বছর ধরে প্রতি আট থেকে দশদিন অন্তর আমি ওঁর বাড়ি যাই। সঙ্গীত, ভ্রমণ, আকাশের চাঁদতারা, কত কী নিয়ে যে গল্প হয় বলে বোঝাতে পারব না। গুলজারজি একটা সময় খুব বেড়াতেন। ড্রাইভ করে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা ঘুরেছেন। এখন আর পারেন না। অনেক জায়গায় আমি বেড়াতে যাই শুধু গুলজারজির কথা রাখতে।

একসঙ্গে একটা প্রাইভেট অ্যালবাম বের করছেন তো।

হ্যাঁ, রবীন্দ্রনাথের কবিতা হিন্দিতে অনুবাদ করেছেন গুলজারজি। আমি সুর দিয়েছি। এটা আমাদের দু’জনের একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়ে থাকবে। রবীন্দ্রনাথ কেবল বাঙালিদের এই ধারণাকে ভেঙে তাঁর সৃষ্টিকে একটা সর্বভারতীয় রূপ দিতে চাইছি আমরা।

আজকাল সুরকারেরা নিজেরাই গান গাইছেন। আপনি তো তেমন গান করেন না।

না, আমি গান গাই না, কারণ আমার মনে হয় আমার থেকে দক্ষ গায়ক আছেন।

কিন্তু প্রায় সব সুরকারই নিজেরা গান গাইছেন।

তার কারণ লিপ মেলানো কমে গিয়েছে। সিনেমার দৃশ্যের ব্যাকগ্রাউন্ডে গান হয়। সেখানে বিরাট একটা গায়কের দরকার পড়ে না। সেই গান সুরকারেরা গাইতেই পারেন। গাইছেনও আজকাল। কোনও কোনও সুরকারের গান আমার বেশ লাগে। যেমন সেলিম-সুলেমানের সেলিম ভাল গান গায়। সুরকারদের মধ্যে অঙ্কিত তিওয়ারি গলা ভাল।

হানি সিংহের গান আপনার কেমন লাগে?

আমি হানি সিংহের গ্রেট ফ্যান নই। বরং বলব ওর গানের কথা আমার ভাল লাগে না। ‘ভালগার’ লাগে।

তা হলে এত লোক শুনছে কেন?

কারণ নাচের ছন্দ আছে ওর গানে। আছে চমক। চমকই এখন বেশি চলে। স্কুল-কলেজছাত্ররা বেশি শোনে ওর গান। কিন্তু তার মানে এই নয় যে মান্না দে-র গান কেউ শুনছে না। কিংবা শুনছে না এ আর রহমানের গান।

এখন আপনার প্রিয় সুরকার কে?

এ আর রহমান। অবশ্য ওকে এখনকার সুরকার বলা হবে কিনা জানি না। আর ভাল লাগে অমিত ত্রিবেদীর সুর। আর বাংলায়,আই অ্যাম আ গ্রেট ফ্যান অব অনুপম রায়। ও যাতে মুম্বইতে ভাল সুযোগ পায় সে ব্যাপারে আমি সাহায্য করার চেষ্টা করছি। মানুষ হিসেবে ওকে আমার ভাল লাগে।

সোনু নিগম, শান—এঁরা তো আপনার প্রিয় শিল্পী। কিন্তু আজকাল এঁরা কেউ তেমন রেকর্ডিংয়ের সুযোগ পান না। না প্লেব্যাকে, না প্রাইভেট অ্যালবামে। সিনিয়র গায়কদের দিয়ে গান গাওয়াবার একটা দায়িত্ব সঙ্গীত পরিচালকদের থাকে….

সঙ্গীত পরিচালকদের যুদ্ধ করতে হয় পরিচালক-প্রযোজকদের সঙ্গে কোনও গায়ককে নেওয়ার জন্য। কাউকে কাস্ট করা অত সোজা ব্যাপার নয়। আর একটা কথা। এটা মেনে নিতে হবে যত দিন শ্রোতাদের আমার গান ভাল লাগছে তত দিন আমি আছি। যখন অন্য কারও কাজ ভাল লাগবে আমাকে চলে যেতে হবে। এই নিয়মটাকে যত মেনে নেওয়া যায় ততই শান্তি।

শ্রেয়া ঘোষালকে দিয়ে এত গান করান, কৌশিকী চক্রবর্তীকে দিয়ে গান গাওয়ান না কেন? সেই কবে ‘লাগি লাগি’ গানটা গাইয়েছিলেন কোক স্টুডিয়োয়?

ওর গলার সঙ্গে মানায় এমন সুর যদি দিতে পারি তবে ওকে নিশ্চয়ই নেব।

তার মানে কৌশিকীর গলার সঙ্গে মানায় এমন সুর আপনি দেন না।

সিনেমার গানের একটা ধাঁচ থাকে। সেই ধাঁচেই সুর করি তো।

কলকাতায় এত আসা যাওয়া করেন, এখানে একটা ফ্ল্যাট কিনলে তো পারেন...

ইচ্ছে যে করে না তা নয়, কিন্তু কিনলে পরে আবার সেই মেনটেনের ঝামেলা।

কলকাতার মেয়েদের প্রেমে পড়তে ইচ্ছে করে?

না। আমার কারও প্রেমেই পড়তে ইচ্ছে করে না। প্রেম ছড়িয়ে দিতে চাই আমার ‘হবি’র মধ্যে। কোনও একটা মানুষকে নিয়ে প্রেমে হাবুডুবু খেতে পারব না। তবে কলকাতার মেয়েদের একটা ব্যাপার ভাল লাগে। তা হল ওদের শাড়ি পরা। এখনও এ শহরের মেয়েরা শাড়ি পরে। মুম্বইয়ে তো শাড়ি পরা কবেই উঠে গিয়েছে।

প্রেম নেই জীবনে, হবিই সব। তা হলে আপনার জীবনের ‘পিউ বোলে’ কে?

যদি ‘পিউ বোলে’ কে জিজ্ঞাসা করেন তা হলে আমি আমার স্ত্রী সারদার কথাই বলব। এটা একটা লং টাইম লাভ স্টোরি। যখন কলেজে পড়ি তখন থেকে এই প্রেম।

কিন্তু শোনা যায় কলকাতার এক গায়িকার সঙ্গে আপনার একটা আলাদা বন্ধুত্ব আছে...

এটা একদম গসিপ। প্রশ্নটার সঙ্গে বাকি ইন্টারভিউয়ের কোনও মিল নেই।

Shantanu Moitra musician Shantanu Moitra shantanu moitra interview shantanu moitra love affairs Shantanu Moitra affair music composer shantanu moitra shantanu moitra love life shantanu moitra life style ananda plus ananda plus cover story sanjukta basu
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy