Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

‘অত্তো ছোট বয়েসে বিয়েটা করা ভুল! চুমকি, আমি কেউই পরিণত ছিলাম না’

এখন নাকি দিনে আট-ন’টা ডিম খান? উ: (হেসে) হুম। কুসুম ছাড়া। প্রচণ্ড এক্সারসাইজ করি। এই ইনটেকটা দরকার।

দেবশঙ্কর মুখোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৭ ০০:৫৪
Share: Save:

প্র: এখন নাকি দিনে আট-ন’টা ডিম খান?

উ: (হেসে) হুম। কুসুম ছাড়া। প্রচণ্ড এক্সারসাইজ করি। এই ইনটেকটা দরকার।

প্র: প্রযোজনায় এলেন। কেউ বলছে সুতো গোটাচ্ছেন আপনি!

উ: (ভ্রূ তুলে) এর কী উত্তর হয়, সত্যিই আমি জানি না! এর আগেও প্রযোজনা করেছি। তবে এবারের কাজটা একটু আলাদা। আমার কাছে ইন্ডাস্ট্রির প্রচুর লোকজন আসেন, বিপাকে পড়ে। বলেন, দাদা এবারে চাটিবাটি গোটাতে হবে। কিছু করুন। তাতেই আবেগে জড়িয়ে পড়লাম।

প্র: আবেগ থেকে ব্যবসা!

উ: বিশ্বাস করুন। ক্রিয়েটিভ দিকটা দেখব। পরামর্শের কাজ করব, গল্প বাছব। ব্যালান্সড কমার্শিয়াল ছবির গল্প। মুম্বইয়ের মতো এখানে ৩০০ কোটি টাকার ব্যবসা হবে না। বাজার ছোট। অথচ আগে যেখানে বছরে ৪০-৫০টা ছবি হত, এখন হচ্ছে প্রায় ১৫০টা। এদিকে রোজ একটা-দুটো করে সিঙ্গল স্ক্রিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তার মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে নেমে পড়লাম।

প্র: তা হলে পরিচালনার স্বপ্নে ইতি টানলেন?

উ: না। বরং ওটাই আমার প্রথম পছন্দ। প্রযোজক হিসেবে আমি তেমন সিরিয়াস নই।

প্র: পরিচালনায় এলে কোন গল্প নেবেন?

উ: সাহেব বিবি গোলাম’, ‘বেগম মেরী...’

প্র: এক সময় খুব ‘আ বিউটিফুল মাইন্ড’ বা ‘জলসাঘর’-এর কথা বলতেন!

উ: ড্রিম প্রজেক্ট। প্রথমটা নিয়ে ঘষামাজা শুরু করেছি। কিন্তু সে তো অভিনয় করার জন্য। মডার্ন ফর্মে! আর একটা কথা, পরিচালনায় গেলে বাংলায় নয়, হিন্দিতে ছবি বানাব।

প্র: জীবনের ভুল...ইত্যাদি... এসব ভাবেন?

উ: ভাবি। প্রথম বড় ভুল অত্তো ছোট বয়েসে বিয়েটা করা। যখন চুমকি (দেবশ্রী রায়), আমি কেউই পরিণত ছিলাম না।

প্র: আর কেরিয়ারে?

উ: ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’, ‘সাজন’-এর মতো ছবির অফার ফিরিয়ে দেওয়া। তবে শুধু বাংলা ভাষায় ছবি করার পরেও রমেশ সিপ্পি যখন ওঁর সংস্থায় পরামর্শদাতা হিসেবে আমায় চান, জয়ললিতা তাঁর অনুষ্ঠানে আমায় ডাক পাঠান, আমির নেমন্তন্ন করতে গিয়ে বলে, ‘তুমি এলে কিন্তু খুব ভাল লাগবে’... বুঝতে পারি, অল-ইন্ডিয়া লেভেলে আমার গুরুত্বটা ঠিক কতটা। আর শুনুন, মহেশ ভট্ট থেকে হনসাল মেহেতা... আমার সব ছবিই কিন্তু ওঁরা মন দিয়ে দেখেন।

প্র: মুম্বই যাননি তো অনিশ্চয়তার ভয়ে!

উ: তা নয়। তখন আমার দিনরাত বলে কিছু ছিল না। বাংলার অনেক ছোট-ছোট প্রযোজক আমায় এক নম্বর নায়ক হিসেবে বাজি ধরে বাজারে লগ্নি করেছিলেন। তাঁদের প্রতি দায় না থাকাটা তো পাপ! তবে ‘সাংহাই’ করতে যখন মুম্বই যাই, মনে হয়েছিল, ওখানে ‘ফিট ইন’ করব না। এ দিকে কলকাতায় বেরোলেই ‘গুরু গুরু’ ডাক শুনি। ওখানে প্রথম সারিতে না থাকতে পারলে...

প্র: ‘মহানায়ক’ ফ্লপ। সুপ্রিয়াদেবী অপমানিত! কথা বলেছেন ওঁর সঙ্গে?

উ: না। ‘মহানায়ক’ কী, লোকে ২৫ বছর বাদে বুঝবে। কাউকে অপমান করা উদ্দেশ্য ছিল না, বরং অনেক সেনসিটিভ ব্যাপার চেপে দিয়েছি। সেটা বেণুআন্টির বেলাতেও।

প্র: উত্তমকুমার-সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়রা যেমন লাগাতার জুটি বেঁধে ফিল্ম করতেন, জিৎ-প্রসেনজিৎরা করেন না! ইগো?

উ: আমার কোনও আপত্তি নেই। তবে জিৎ কী বলবে, জানি না। অবশ্য দেব-জিৎ জুটিটাই বেশি হওয়া উচিত! হেলদি হত (অর্থপূর্ণ হাসি), একটা ‘চৌরঙ্গী’ হয়ে যাক!

প্র: ‘বুম্বা ডান্স’ দেখেছেন?

উ: আমাকে নিয়ে ঠাট্টা করলে মজাই পাই।

প্র: আর লোকে যখন ‘পোসেনজিৎ’ বলে?

উ: মাথা পেতে নিই। শুধু ব্যক্তিগত কুৎসা রটালে হিটলার হয়ে যেতে ইচ্ছে হয়।

প্র: লোকে বলে, অর্পিতার কেরিয়ারটা আপনার জন্য শেষ হয়ে গেল!

উ: সম্পূর্ণ ফালতু কথা। ও-ই নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিল, ছেলে ছোট ছিল, তাই...

প্র: লোকে বলে, আপনাদের সম্পর্কের মধ্যে আজ কোনও উষ্ণতা বেঁচে নেই...

উ: ভগবান! যে কোনও দাম্পত্যে দশ-বারো বছর বাদে ফোকাসটা চলে যায় ছেলেমেয়ের দিকে। এখন মিশুককে ঘিরেই আমাদের সব।

প্র: ইন্ডাস্ট্রির দাদা, বাড়িতে পুরোদস্তুর কর্তা!

উ: টু হান্ড্রেড পার্সেন্ট। সে অর্পিতার জামাকাপড়, মিশুকের শার্ট-প্যান্ট কিনে দেওয়া, রান্নায় ট্যাংরার ঝাল, নাকি পুঁই শাকের চচ্চড়ি, তাতে নজর দেওয়া...আমার অফিসের কারও ফোড়া হলেও, ডাক্তার দেখানো... আমি আদ্যন্ত ফ্যামিলি-ম্যান!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Prosenjit Chatterjee Bengali Actor Interview
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE