পাক অভিনেত্রী মীরা
সাত বছর কেটে গেল প্রমাণ করতে— তিনি ‘সিঙ্গল’! বিয়ে করতে চান, মা হতে চান।
তিনি ইরতিজা রুবাব। ললিউডে (লাহৌরের বলিউড) তাঁকে মীরা নামেই সবাই চেনেন। জনপ্রিয়তাও ভালই। কাজ করেছেন মুম্বইয়েও। ভারত-পাকিস্তান যৌথ উদ্যোগে ২০০৫ সালে ‘নজর’ নামে একটি ফিল্ম করেন মীরা। পরে লাকি আলির বিপরীতে ‘কসক’ নামে আর একটি ছবিও করেন। এ হেন অভিনেত্রীকে হঠাৎই ২০০৯ সালে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করে বসেন আতিক-উর-রহমান নামে ফৈসলাবাদের এক ব্যবসায়ী। আদালতে মামলা দায়ের করেন তিনি। দাবি করেন, ২০০৭ সালে লোকচক্ষুর আড়ালে ছোট করে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছিল। আতিকের অভিযোগ, মীরা কোনও দিন প্রকাশ্যে তাঁকে স্বামী বলে স্বীকার করেননি। ভক্তদের কাছে বলেন, তিনি অবিবাহিত। প্রমাণ হিসেবে আতিক বিয়ের শংসাপত্রও দাখিল করেছিলেন আদালতে। কোর্টের কাছে তিনি আবেদন জানান, মীরার মেডিক্যাল পরীক্ষা করে দেখা হোক। তাঁকে বিচ্ছেদ না দিয়ে অভিনেত্রী যাতে অন্য কাউকে বিয়ে করতে না পারেন, সে আর্জিও জানান আতিক। এমনকী মীরার বিদেশে যাওয়াও আটকে দিতে বলেন তিনি।
প্রথমেই মীরার কুমারীত্ব পরীক্ষার আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল লাহৌর হাইকোর্ট। জানিয়েছিল, এ ধরনের মামলায় মহিলার অনুমতি থাকলে তবেই পরীক্ষা করা হয়। মীরা বরাবর বলে এসেছেন, আতিকের মানসিক স্থিতি নেই। তিনি প্রচার পেতে এ সব বলছেন। মীরা আরও বলেন, ‘‘এক বন্ধুর মাধ্যমে আতিকের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। আতিক আয়োজিত বেশ কিছু কনসার্টও করেছি, ওই পর্যন্তই।’’ আতিকের দেখানো বিয়ের শংসাপত্র ‘জাল’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। মীরার কথায়, ‘‘এত ছোটখাট অনুষ্ঠান করে বিয়ে করতে যাব কেন?’’
এমন ঘটনা পাকিস্তানে নতুন নয়। তবে এই প্রথম কোনও সেলেব্রিটির নাম জড়িয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছেলেরা এ ধরনের মামলা করেন— অভিযুক্ত মহিলা তাঁর স্ত্রী এবং তিনি যেন অন্য কোনও পুরুষকে বিয়ে করতে না পারেন। বিয়ের জাল শংসাপত্র বের করাও আম ঘটনা পাকিস্তানে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে রায় মেয়েদের পক্ষে যায়। কিন্তু রায় ঘোষণা হতে-হতেই বয়স বেড়ে যায়। মীরাই যেমন বলছেন, ‘‘আমি বিয়ে করতে চাই। মা হতে চাই। কিন্তু বছরের পর বছর কেটে যাচ্ছে মামলা শেষ হতে।’’
এখনও চূড়ান্ত রায় ঘোষণা হয়নি। তবে গত সপ্তাহে লাহৌরের পরিবার আদালত মীরাকে বিয়ের অনুমতি দিয়েছে। বিচারক বাবর নাদিম বলেন, ‘‘বিয়ের শংসাপত্র জাল না সঠিক, তা এখনও বিচারযোগ্য। কিন্তু পরিবার আদালত আইনে মীরাকে বিয়ে করা থেকে কেউ আটকাতে পারবে না।’’ মীরা অবশ্য জয় দেখতে পাচ্ছেন। বলেন, ‘‘অবশেষে বিচার পেলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy