আরও পড়ুন, মুভি রিভিউ: মন ছুঁল না গোল্ড!
তার ভয়ে শিউরে ওঠে প্রতিটি গ্রামবাসী। বাড়ির বাইরে লিখে রাখে, আজ নয়, কাল আসতে। এই গ্রামেই কাপড়জামা সেলাই করে দিন চলে ভিকি নামের যুবকের। বাবার দর্জির দোকানে কাজ করে সে। তো, বাবা তাকে এক দিন আলাদা করে ঘরে ডাকে। প্রেমের ব্যপারে সতর্ক করতে জানায়, বেশি ভেসে না যেতে। বয়সটা তো ভাল না। নিজের জীবনের গল্পও বলে। জানায়, নারী-পুরুষ সম্পর্ক পবিত্র। অপেক্ষা করতে।
কিন্তু ন্যাড়া তো বেলতলায় যাবেই। যথারীতি প্রেমে পড়ে সে। শ্রদ্ধা কপূর অভিনীত নামহীন মেয়েটি তাকে সন্ধায় মন্দিরে আসতে বলে। চিঠি দেয়। বলে পুজোর জন্য পোশাক বানিয়ে দিতে। আলাদা দেখাও করে। কিন্তু কোথাও নাম, ফোন নম্বর দেয় না। বন্ধুরা তাকে সতর্ক করে। বলে, হাওয়া ভাল না। কিন্তু প্রেমের ঘোরে ভিকির চোখ ঝাপসা। সে শুধু বলে, আমি ডুবতে রাজি আছি।
ছবির একটি দৃশ্যে শ্রদ্ধা কপূর।— ইউটিউবের সৌজন্যে।
শ্রদ্ধা অভিনীত মেয়েটিই কি ভূত? না অন্য কেউ? নেপথ্যে গোটা গ্রামকে নাকানিচোবানি খাওয়াচ্ছে? জানতে হলে দেখতে হবে গোটা ছবি। সাসপেন্স বলা যাবে না। ভূতের সঙ্গে প্রেম করছে কি না, এমন দ্বন্দ্ব প্রায়ই ভাবায় ভিকিকে। ছবি জুড়ে তার দ্বন্দ্বের অভিনয় অসামান্য ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। শ্রদ্ধার অভিনয়ও কিছু কম যায় না। তবে এ ছবির আলো, ক্যামেরা আর সম্পাদনা সত্যি ভাল লাগে। কি যে সুন্দর দেখতে লাগে গ্রামটিকে। এমন লোকেশনে এমন ভূতের মজার গল্প ফাঁদার জন্যই এ ছবি আবার দেখা যায়। তবে, এমন স্মার্ট ছবির আবহ নিয়ে কি আর একটু ভাবা যেত না! খুবই ক্লিশে লাগে মিউজিক।
রাজকুমারের হাসি আর ভয় নিয়ে জাগলিং অভিনয়কে অন্য মাত্রা দেয়। শ্রদ্ধা কপূর অনেক বেশি দুষ্টু-মিষ্টি, কিন্তু একই সঙ্গে ভয় দেখাতেও যথেষ্ট সাবলীল। প্রতিটি চরিত্রের এই আনপ্রেডিক্টেবিলিটি ছবিকে আলাদা মাত্রা দেয়।
আরও পড়ুন, মুভি রিভিউ: ক্রাইসিসে ‘ক্রিসক্রস’
ভাল লাগে ভিকির বাবার ভূমিকায় অতুল শ্রীবাস্তবের অভিনয়। অতুল শ্রীবাস্তবকে যত বার দেখা যায় স্ক্রিনে, তত বার এনার্জি এসে যায় ছবির। অমর কৌশিকের পরিচালনায় এ ছবি একই সঙ্গে শক দেয় এবং হাসায়। এত নিপুণ ভাবে হাসি আর ভয় বোনা যে ৮ থেকে ৮০, হলের ভেতর সবাই হেসে ওঠে। প্রতিটি বাড়ির বাইরে ‘ও স্ত্রী কাল আনা’ লেখা থাকার ব্যপারটা খুব মজার। তার উপর যে ভাবে মূত্রত্যাগ করেন রাজকুমার ছবির শুরুতে, তা দেখে তো হল থেকে বেরিয়েও হেসে চলেছি!
এমন একটা সচেতনতা নিয়ে এ ছবি যা আজকের ভারত। যেখানে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য আর নারীর অবমাননা বার বার প্রশ্নের মুখে। আমরা রূপকথায় এমনই গভীর কথা সহজ মজায় শুনে থাকি। এ ছবিও কোথাও জ্যাঠামো করতে চায় না। বার বার হাসায়। আর প্রতি হাসির ভাঁজে ভাসতে থাকে মেয়েদের আবহমান জীবনের কান্না, ‘দাদা আমি বাঁচতে চাই!’
প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় অতুল শ্রীবাস্তবের বদলে পঙ্কজ ত্রিপাঠির নাম প্রকাশ হয়েছিল। ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পাঠকদের ধন্যবাদ।