কিমাশ্চর্যম! তাঁকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। তা হলে তিনি বেঁচেই আছেন? সামনে দেখা যাচ্ছে না! তা হলে তিনি মৃত? ‘দিল বেচারা’ ছবি দেখতে দেখতে তাক লেগে যায় জীবিত আর না-থাকা মানুষের অস্তিত্ব নিয়ে। ছবি দেখা শেষ হলেও ল্যাপটপ স্ক্রিনে আলোর মাঝে ঝলসে ওঠে তাঁর টিকালো নাক, নরম বলিষ্ঠ চোখ, তাকিয়ে আছে দূরের সীমানায়। চোখের আড়াল হয়ে গেলেও এখন বিনোদন বিশ্বে সবচেয়ে থেকে যাওয়া মুখ কখনও মৃত্যুর মধ্যে, কখনও জীবনের মধ্যে।দু’দিকেই তিনি আছেন।
মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দুই উঠতি তারুণ্যের প্রেমে এই ছবি জীবনবোধের কথা বলে। যে জীবন আর পাঁচটা মানুষের মতো শুধু মৃত্যু আছে জানে না, জানে মৃত্যু এসেই গিয়েছে! গল্পে তার আঁচ পেয়ে যায় নায়ক-নায়িকা। অনেক বড় বড় স্বপ্ন দেখে এই ছবির নায়ক সুশান্ত সিংহ রাজপুত। কিন্তু নিজের সেই স্বপ্নপূরণের ইচ্ছে তার নেই। সে তার প্রেমিকার ছোট্ট একটা স্বপ্ন পূর্ণ করতে চায়। তাতেই তার তৃপ্তি। এই গল্প আশ্চর্য ভাবে আর সিনেমা হয়ে ওঠেনি। এ যেন আধখানা অধরা সুশান্তের জীবন। যে খেলার ছলেই ছবিতে সংলাপ বলে, ‘‘আমি একজন অ্যাস্ট্রোনট।’’ আরও বলে, ‘‘মৃত্যুর সময় আমাদের জানা নেই। আমরা যে মুহূর্তে থাকি সেটুকু নিজের মতো করে বাঁচি!’’ বলে, ‘‘এক থা রাজা, এক থি রানি। রাজা মর গয়ি। পর রাজা কা রানি আভি জিন্দা হ্যায়...’’, শিউরে উঠি। এগুলোই কি বলতে চেয়েছিলেন সুশান্ত? আর থেকে থেকে মনে হতে থাকে সুশান্তের প্রেম যে মানবীদের মধ্যে আজও বেঁচে আছে? তাঁরা কী ভাবছেন? জানি না, তাঁর নাম অঙ্কিতা কি না! জানি না তিনি রিয়া বা অন্য কেউ কি না! শুধু এটুকু জানি, সুশান্ত আছে। না, ‘দিল বেচারা’ শুধু সিনেমায় নয়। এ যেন সুশান্তের হঠাৎ ফুরিয়ে যাওয়া জীবনের প্রেম আর এপিটাফ। যেখানে সব বলে গেলেন সুশান্ত! এ-ও কি কোনও প্ল্যান? ২০১৮-’১৯ সালে শুট করা এই ছবি কী করেই বা ২০২০-তে সুশান্তের চলে যাওয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে পারে? পারে না।
পরিচালক: মুকেশ ছাবড়া