ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত বলিউডে, আবার। জন্মদিনের দু’দিন আগে মুক্তি পেয়েছে তাঁর আগামী হিন্দি ছবি ‘কাল ত্রিঘোরী’র প্রথম ঝলক। বিপরীতে আরবাজ় খান। নায়িকা এই প্রথম ভৌতিক ছবিতে।
ঋতুপর্ণা তবু মন খুলে খুশি হতে পারছেন কই? মধ্যরাতের কেক কাটা ছিল। ৩১তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দেখা গিয়েছে তাঁকে। আনন্দবাজার ডট কম-এর সঙ্গে নতুন হিন্দি ছবি নিয়ে, সলমন খান নিয়ে, আরবাজ়কে নিয়ে অনেক কথাই বলেছেন। নিজের কথা বলতে গিয়ে বারে বারে মনে করেছেন মা নন্দিতা সেনগুপ্তকে। এই প্রথম তাঁর জন্মদিন মাতৃহীন! ঋতুপর্ণার অনুভূতি, “মা আসে আমার কাছে। প্রতি মুহূর্তে অনুভব করি। কিন্তু, আমি মায়ের কাছে যেতে পারি না!”
“মায়ের হাতের রান্না, মায়ের হাতের পায়েস, মাথায় হাত রেখে মায়ের আশীর্বাদ। এ সব আর কোথায় পাব?”— বলতে বলতে গলা ধরে এসেছে তাঁর!
নিজেকে সব ধারার ছবিতে প্রমাণ করেছেন। বাকি ছিল ভৌতিক ছবিতে অভিনয়। সেই কারণেই কি রাজি হওয়া? প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁকে। নায়িকা তখন সদ্য লন্ডন ছেড়ে মুম্বইয়ে পা রেখেছেন। ফোনেই দীর্ঘ কথোপকথন। বললেন, “অনেকগুলো কারণে রাজি হয়েছি। শুধুই ভৌতিক নয়, এই ছবির সিংহভাগ জুড়ে মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ রয়েছে। এটাই আকর্ষণের মূল কারণ। দ্বিতীয় কারণ, ছবির প্রযোজক আর মোহনের সঙ্গে ‘গৌরী’ ছবিতে কাজ করেছি। সেই ছবিতে অনুপম খের ছিলেন।” এই ছবিতে তাঁর বিপরীতে আরবাজ় খান। ঋতুপর্ণা ‘না’ বলার কারণ খুঁজে পাননি।
ভৌতিক ছবিতে অভিনয় কি খুব পরিশ্রমের? ঋতুপর্ণাকেও কি সেই পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে? নায়িকার কথায়, “অ্যাকশন করতে গিয়ে প্রচুর চোট-আঘাত পেতে হয়েছে। ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে অনেক সময় খালি পায়ে দৌড়োতে হয়েছে। পায়ের নীচে কিছু ফুটলেও থামার উপায় ছিল না।” ছবির দৃশ্যে বৃষ্টিতে ভিজে অভিনয় করতে হবে নায়িকাকে। আকাশে তখন মেঘ ডাকছে। ঋতুপর্ণা সারা গায়ে কাদা মেখে তৈরি। বৃষ্টি নামলে ভিজে ভিজে শুটিং করতে হয়েছে! এ সবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রূপটানের ধকল। এই ধরনের ছবির শুটিংও যথারীতি উপভোগ করেছেন।
ছবিতে প্রেম আছে। আর আছে গা শিউরে দেওয়ার মতো ভয়। “শুটিং করতে গিয়ে আমারই অস্বস্তি হয়েছে। বেশ গা ছমছম করেছে”, দাবি নায়িকার। ভূতে বিশ্বাস করেন? কোনও গা ছমছমে অভিজ্ঞতা আছে? না, ঋতুপর্ণার এ রকম কোনও অভিজ্ঞতা নেই। তবে পরলোক, আত্মায় বিশ্বাস আছে তাঁর।
আর আরবাজ়? সলমনের ভাই। দ্বিতীয় বিয়ে, দ্বিতীয় বার বাবা— সব মিলিয়ে আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব? প্রশ্ন করতেই হেসে ফেলেছেন ঋতুপর্ণা। “ভীষণ প্রাণচঞ্চল”, একবাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন। বলেছেন, “কী যে মিষ্টি খেতে ভালবাসে! আমার কাছে নলেন গুড়ের মিষ্টির আবদার করেছিল। শুটিংয়ের সময় প্রায়ই নিয়ে যেতাম।” কথাপ্রসঙ্গে জানান, মুম্বইয়ে শর্মিলা ঠাকুর অভিনীত ‘পুরাতন’ ছবির বিশেষ প্রদর্শনে এসেছিলেন আরবাজ়। দ্বিতীয় স্ত্রী সুরা খান অভিনেতা স্বামীর মতোই প্রাণচঞ্চল, ভাল মনের, জানাতে ভোলেননি তিনি। ঋতুপর্ণার মতে, “দু’জন ভাল মানুষ পরস্পরকে ভালবেসে একসঙ্গে রয়েছেন। ওঁদের বিয়েতে খুব খুশি হয়েছি। সদ্য মা-বাবা হয়েছেন সুরা-আরবাজ়। অনেক শুভেচ্ছা।”
আরবাজ় থাকলে সলমন খানের প্রসঙ্গ আসবেই। ভাইয়ের টানে কোনও দিন সেটে এসেছিলেন ‘ভাইজান’? সেটে না এলেও সলমনের সঙ্গে আলাপ হয়েছে ঋতুপর্ণার। “আমাদের ছবির শুটিং গুজরাতের মুলি-তে হয়েছে। সেখানে না এলেও পরে চলচ্চিত্র উৎসবে ভাইয়ের ছবি দেখতে এসেছিলেন। আলাপ হল ওঁর সঙ্গে। খুব হাসিখুশি মানুষ।” তা হলে কি ঋতুপর্ণার আগামী হিন্দি ছবির নায়ক সলমন? এ বার জোরে হাসি। “তা হলে দারুণ হবে”, হাসতে হাসতে বললেন নায়িকা।