Advertisement
E-Paper

যুক্তিহীন গল্প ও দর্শকের স্নায়ুর পরীক্ষা! জীতু-শ্রাবন্তীর ‘বাবু সোনা’ কি প্রত্যাশা পূরণ করল

প্রেক্ষাগৃহে বসে ছবিটি শেষ পর্যন্ত দেখা তাই কঠিন। ভালবাসার দিন হলেও, এ হেন হাস্যকর প্রেমের ছবি আদৌ কতটা দেখা যায়, তা নিয়ে তাই প্রশ্ন থেকেই গেল।

দেবর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:২৭
Image of Srabanti Chatterjee and Jeetu Kamal

‘বাবু সোনা’ কি দর্শকের প্রত্যাশা পূরণ করল? ছবি: সংগৃহীত।

বাংলা ছবির নাম, ‘বাবু সোনা’! আজকাল বাংলা ছবির এমন নাম বিরল। বাজারচলতি ছবির নামও এমন হয় না আজকাল। তাই প্রথমেই ছবিটা দেখতে যাওয়ার সময় মনে হল আদৌ এ ছবি কতটা টানবে! ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসার দিন। সে দিনেই মুক্তি পেয়েছে এ ছবি। রাস্তাঘাটে ছেলেমেয়েদের ভিড়। সেই ভিড় পেরিয়ে ‘বাবু সোনা’র পোস্টার। ছবিটিও প্রেমের। তাই আগ্রহও ছিল বেশি।

কিন্তু, বলা বাহুল্য হতাশ হলাম। কারণ, এ ছবি দেখতে দেখতে এক বারও মনে হল না, ছবিটির সঙ্গে বাস্তবের কোনও সম্পর্ক আছে। শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় ও জীতু কমল দক্ষ অভিনেতা। প্রশ্ন জাগে, তাঁরা কেন রাজি হলেন এ হেন অবাস্তব চিত্রনাট্যে! এক জন আইটি ফার্মের মালিক ছদ্মবেশে অপহরণকারী, আর এক জন পুলিশ ছদ্মবেশে চোর— একটি শিশুকে অপহরণ করতে গিয়ে জড়িয়ে যায় ও তাদের মধ্যে ভালোবাসা তৈরি হয়। এই আপাত সাধারণ ঘটনা থেকেই এ ছবি এগোতে থাকে। কিন্তু অবিশ্বাস্য ভাবে প্রায় কিছুই ঘটে না পরে। বদলে অবাস্তব মারপিটের কিছু মুহূর্ত দেখতে হয়, যা বহু আগে বাংলা ছবি পেরিয়ে এসেছে। চটুল এ হেন চিত্রনাট্যে আদালতের দৃশ্য দেখেও হাসি পায়। এ সব তো অনেক আগেই হয়ে গিয়েছে মূল ধারার ছবিতে, তবুও এই অবাস্তব জায়গা কী ভাবে এল আবার ২০২৫ সালের এই ছবিতে?

‘বাবু সোনা’ ছবিতে একটি দৃশ্যে জীতু কমল।

‘বাবু সোনা’ ছবিতে একটি দৃশ্যে জীতু কমল। ছবি: সংগৃহীত।

সন্তানের অপহরণ বা তার মৃত্যু নিয়ে ইদানীং ওটিটিতে একাধিক ভালো সিরিজ় দেখা যায়। মনে পড়ে, ক’দিন আগেই দেখা ‘দ্য বাকিংহাম মার্ডার্স’ ছবিটি। প্রবাসী ভারতীয়দের বর্তমান জীবন ও সন্তানকে ঘিরে মায়ের আর্তনাদ ছবিতে কত বাস্তবসম্মত ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তার পর এমন স্রেফ চটুল ছবি বসে সবটা দেখা সত্যিই এক রকম স্নায়ুর পরীক্ষাও বটে...।

সত্যজিতের চরিত্রে অভিনয় করার পর জীতু কমল দর্শকের প্রশংসা পেয়েছেন। তার পর তাঁকে যতটা ব্যবহার করা যেত, তা হয়তো হয়নি। তা বলে, এমন ছবিতে অভিনয় করার মাধ্যমে নিজের গুরুত্ব কিছুটা হলেও কমল তাঁর। একই কথা বলা যায়, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কেও। ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র অভিনেত্রী তিনি। তাঁর থেকে এ হেন কাজের প্রত্যাশা তাই থাকে না। সর্বোপরি এসকে মুভিজ়ের মতো টলিপাড়ার গুরুত্বপূর্ণ প্রযোজনা সংস্থাও কী ভাবে এ ছবি প্রযোজনা করল, তা ভাবতেও রীতিমতো অসুবিধে হয়।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

ছবিতে কিছু পার্শ্বচরিত্রও রয়েছে। যে শিশুটিকে ঘিরে ছবির গল্প আবর্তিত, তার বাবা-মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন পায়েল সরকার ও সাগ্নিক চট্টোপাধ্যায়। তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের একটি মামলাও চলছে ছবিতে। অ্যাকশন-কমেডি ঘরানার ছবি। কিন্তু কোনও ফর্মকেই সঠিক ভাবে ব্যবহার করা হয়নি ছবিতে। অগোছালো এলোমেলো কিছু প্রলাপ ছাড়া এ ছবি আর কিছুই না। যাঁরা এ ছবি দেখবেন, তাঁরা কেন দেখবেন নিজেরাই হয়তো বুঝতে পারবেন না।

প্রেক্ষাগৃহে বসে ছবিটি শেষ পর্যন্ত দেখা তাই কঠিন। ভালবাসার দিন হলেও, এ হেন হাস্যকর প্রেমের ছবি আদৌ কতটা দেখা যায়, তা নিয়ে তাই প্রশ্ন থেকেই গেল। অনুরোধ, এ ছবি দেখতে গেলে, একেবারেই মূল ধারার ছবি দেখছেন বলে ভুল করবেন না। কারণ, একটি মূল ধারার ছবি তৈরি করা খুব সহজ কাজ নয়। বরং কতটা কঠিন কাজ তা এ ছবির গাফিলতি দেখলে স্পষ্ট টের পাওয়া যাবে।

Srabanti Chatterjee Jeetu Kamal New Bengali Film Payel Sarkar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy