Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
review

Kota Factory season2: একই আবর্তে আটকে...

নতুন জোরালো চরিত্র যোগ করতে পারলে আলাদা মাত্রা পেত এই সিজ়ন। বর্তিকা, শিবাঙ্গীদের আরও পরিসর দেওয়া দরকার ছিল।

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২১ ০৮:২৯
Share: Save:

সপ্তাহখানেক আগে নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছিল ব্রিটিশ টিনএজ ড্রামা ‘সেক্স এডুকেশন থ্রি’। ওই প্ল্যাটফর্মেই সদ্য মুক্তি পেয়েছে ‘কোটা ফ্যাক্টরি’র দ্বিতীয় সিজ়ন। দুটো সিরিজ়ই ছাত্রজীবনের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব-আনন্দ নিয়ে। তফাত হল, ইংরেজি সিরিজ়ে সেক্স বেশি, এডুকেশন কম। এখানে ছিটেফোঁটা সেক্স, সবটাই এডুকেশন। ওখানে স্কুলপড়ুয়াদের বর্ণময় জীবন, এখানে ব্ল্যাকবোর্ডে ভেসে ওঠা চকের অক্ষরের মতো সাদা-কালো দুনিয়া।

সমাজের শিক্ষিত গোষ্ঠীর একাংশের কাছে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে আইআইটিতে সুযোগ পাওয়া মোক্ষ। সেই মানসিকতাকে পাথেয় করেই এই সিরিজ়। কোথাও তা শিক্ষাব্যবস্থাকে ব্যঙ্গ করেছে, কোথাও পড়ুয়াদের স্বপ্নে ইন্ধন জুগিয়েছে। প্রতি বছর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার ছেলেমেয়ে কোটায় আসে ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকার প্রস্তুতি নিতে। সেরা কোচিং সেন্টারে ভর্তি হওয়ার জন্যই কত কাণ্ড! তার পর তো প্রস্তুতি, পরীক্ষা... আরও কত কী। এখানে সকলেই জেনেশুনে ইঁদুরদৌড়ে শামিল। আইআইটি মানেই যে যশ-বিত্ত, প্রতিবেশীদের ‘দেখিয়ে দেওয়া’...

জীবনের বড় পরীক্ষা দেওয়ার দোরগোড়ায় বৈভব, মীনা, উদয়রা। পরীক্ষার প্রস্তুতির সঙ্গে বৈভবের প্রেমের ইনিংসও টুকটুক করে এগোচ্ছে। যেমন জিতু ভাইয়া পুরনো কোচিং সেন্টার ছেড়ে নিজের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলে ফেলেছে। কাহিনি এগিয়েছে এইটুকুই। প্রথম সিজ়নের মূল চরিত্ররা এখানেও কান্ডারি। তবে রাঘব সুব্বু পরিচালিত এই সিজ়ন নতুন কিছু দিতে পারেনি। পরীক্ষা-প্রস্তুতি-আশঙ্কার আবর্তেই আটকে। নতুন জোরালো চরিত্র যোগ করতে পারলে আলাদা মাত্রা পেত এই সিজ়ন। বর্তিকা, শিবাঙ্গীদের আরও পরিসর দেওয়া দরকার ছিল।

বৈভবের চরিত্রে ময়ূর মোর এ বারও নজর কেড়ে নেন। বালমুকুন্দ মীনা ওরফে রঞ্জন রাজকে ভাল না লেগে উপায় নেই। উদয়ের চরিত্রে আলম খানের কিছু করার ছিল না। সিরিজ়ের সেরা বাজি অবশ্যই জিতু ভাইয়া, ওরফে জিতেন্দ্র কুমার। সহজাত অভিনয় দিয়েই চরিত্রটা বাস্তবায়িত করে তোলেন তিনি। তাঁর সংলাপ এই সিজ়নেরও ইউএসপি।

ওটিটি প্ল্যাটফর্ম জুড়ে থ্রিলারের মাঝে ‘কোটা ফ্যাক্টরি’ টাটকা বাতাসের মতো। টিভিএফ-এর এই সিরিজ়ের প্রথম পর্ব এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যে, নেটফ্লিক্স তা নিজের প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসে। ভারতীয় ওয়েবে ছাত্রদের নিয়ে কনটেন্ট খুব বেশি নেই। আইআইটি, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ফোকাস করলেও, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার দুর্বল দিকগুলো তুলে ধরেছে ‘কোটা ফ্যাক্টরি’। যেমন কোচিং সিস্টেম। প্রবেশিকা পরীক্ষায় পয়লা স্থান দখল করলে কোচিং সেন্টার থেকে বিএমডব্লু দেওয়া হয় ছাত্রকে! সাদা-কালো ক্যানভাসের এই সিরিজ়ে পড়ুয়াদের জীবনে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া ছাড়া আর কর্তব্য নেই।

কোচিং সেন্টারের প্রধান জোর গলায় বলে, ‘‘পুরুষকে জীবনে সফল হতেই হবে। যে সফল নয়, সে পুরুষ নয়।’’ মগজধোলাইয়ের এই মন্ত্র শুনলে হীরকরাজও অবাক হত। সিরিজ়ের বেশ কয়েকটি ঘটনা বিসদৃশ লাগে। একজন শিক্ষকের কি ছাত্রকে শেখানো উচিত, প্রয়োজনে কী ভাবে মাকে ব্যবহার করতে হবে? পেপটকের নামে আত্মকেন্দ্রিকতা শেখানো কি খুব জরুরি ছিল? আশা করা যায়, পরিচালক ছোটখাটো দুর্বলতা ঝেড়ে আগামী সিজ়নে কিছু ইতিবাচক পেপটক দিতে পারবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

review
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE