Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Suraj Pe Mangal Bhari

ভাগ্যোদয়ে হিউমর সহায় হতে পারত: সুরজ পে মঙ্গল ভারী

এ ছবির সেরা প্রাপ্তি মনোজ আর দিলজিতের কমিক টাইমিং। চোখ সরাতে দেননি এই দুই অভিনেতা।

নবনীতা দত্ত
শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২০ ০৫:৩৮
Share: Save:

নব্বইয়ের নস্ট্যালজিয়া, হালকা কমেডি আর ভাল স্টারকাস্ট... সব মিলিয়ে দীপাবলির জমজমাট প্যাকেজ। সে দিক দিয়ে ছবি উতরে গিয়েছে বটে! কিন্তু ছবি জুড়ে কয়েক দশকের পুরনো চিন্তাভাবনা হজম করা বেশ কষ্টসাধ্য।

ছবি শুরু হয় ১৯৯৫-এর স্বপ্ননগরী বম্বে শহর, মেরিন ড্রাইভ, ডাবলডেকার বাসের দৃশ্য দিয়ে। সুরজের (দিলজিৎ দোসাঞ্জ) উত্তর ভারতীয় পরিবার দুধের ব্যবসার স্বার্থে বম্বে এসে পসার জমায়। সুরজের জন্য পাত্রী খুঁজতে সচেষ্ট গোটা পরিবার, এমনকি সুরজ নিজেও। কিন্তু সে গুড়ে বালি। পাত্রের গুণবিচারের আশায় পাত্রীপক্ষ দ্বারস্থ হয় শহরের অন্যতম গোয়েন্দা মঙ্গলের (মনোজ বাজপেয়ী) কাছে। ছদ্মবেশে পাত্রকে ফলো করে তার দোষ খুঁজে বার করাই মঙ্গলের মূল কাজ। আর এ বার সে পিছু নেয় সুরজের। ফলে সুরজের একদিনের নেশা করাও কাল হয়ে দাঁড়ায়। মঙ্গল মারফত সেই ছবি গিয়ে পড়ে পাত্রীপক্ষের হাতে আর বিয়ে যায় ভেস্তে। প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে সুরজ। এ দিকে মঙ্গলের বোন তুলসীর (ফতিমা সানা শেখ) প্রেমে পড়ে যায় সে।

মঙ্গল আর সুরজের রেষারেষি কেন্দ্রে রেখে ছবি ঘুরতে থাকে। ’৯৫-এর বম্বে দেখাতে পরিচালক দৃশ্য সাজিয়েছেন সুন্দর। পেন দিয়ে ক্যাসেট ঘোরানো, পেজারে মেসেজ পাঠানো, ব্যাগি স্টাইল ফুলস্লিভ টি-শার্ট থেকে শুরু করে ফাঁকা মেরিন ড্রাইভ... নস্ট্যালজিয়া উস্কে দেয়। কিন্তু তার মাঝেই ডিজে-র পোশাকে ফতিমা বেমানান। নব্বইয়ের দশকের ডিস্কো সাজের সেই চমকই নেই ফতিমার সাজে, যা ছিল ছবির শুরুতে করিশ্মা তন্নার নাচের দৃশ্যে।

এ ছবির সেরা প্রাপ্তি মনোজ আর দিলজিতের কমিক টাইমিং। চোখ সরাতে দেননি এই দুই অভিনেতা। তবে ফতিমা ঈষৎ ফিকে এ ছবিতে। সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত অন্য একটি ছবিতে তাঁর অভিনয় দেখলে এ ছবির ফতিমাকে বেশ নিষ্প্রভ লাগে। অনেক দিন বাদে সুপ্রিয়া পিলগাওঁকরের উপস্থিতি বেশ উজ্জ্বল ও আকর্ষক। তবে মনোজের মায়ের চরিত্রে সুপ্রিয়াকে মানতে বেশ কষ্ট হয়েছে। মনোজের ভাঙা চেহারায় তা চোখেও পড়ে ভাল। তবু অভিনয়গুণে তা চাপা দেওয়ার যথেষ্ট চেষ্টা করেছেন দু’জনে। মনোজ পহওয়া, সীমা পহওয়া ও বিজয় রাজও যথাযথ।

এ ছবির ভিত কমেডি। কিন্তু কিছু দৃশ্যে কমেডির ভাবসম্প্রসারণ করে তা দুর্বল করে দিয়েছেন পরিচালক। সে সব দৃশ্যে ‘সোনার কেল্লা’র মুকুলের মতো বলতে ইচ্ছে করে ‘আমার হাসি পাচ্ছে না’। হিউমর অতি সূক্ষ্ম-রস, তা মোটা দাগের হয়ে গেলেই চটুল হয়ে যায়। মজার স্বাদ নষ্ট হয়। তা যদি পরিচালক বুঝতেন এ ছবি আরও ভাল হত। ছবির দৈর্ঘ্যও কমানো যেত।

বিয়ের সম্বন্ধ করতে পাত্রীপক্ষ গোয়েন্দার শরণাপন্ন, এই কনসেপ্টে ছবির শুরু ভালই হয়েছিল। গল্পও ভাল সাজিয়েছেন পরিচালক। তবে আর-একটু যত্ন ও এডিটিংয়ের প্রয়োজন ছিল। গল্পের ছন্দে সূক্ষ্ম হিউমর বজায় রাখলে কোভিডের ভরা বাজারে এ ছবির উপরে বৃহস্পতি হয়তো আরও একটু সদয় হত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Suraj Pe Mangal Bhari Review
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE