বরুণ ধওয়ন এবং আলিয়া ভট্টের মধ্যে মিল কোথায়? দু’জনেই তাঁদের বাবাদের নির্দেশিত ছবিতে কেরিয়ারের কঠোরতম সমালোচনার মুখে পড়েছেন। ‘সড়ক টু’-এর পরে ‘কুলি নাম্বার ওয়ান’ও এ বছরের খারাপ ছবির তালিকায় শীর্ষে। বরুণের অবশ্য এটি প্রথম বার নয়। ‘জুড়ুয়া টু’-এর পরে বাবা ডেভিড ধওয়নের পরিচালনায় আরও এক বার নব্বইয়ের দশকের হিট ছবির রিমেকে তিনি। যে নায়কদের দেখে বরুণের বড় হওয়া, তাঁদের জুতোয় পা গলানোর অদম্য ইচ্ছে সামলাতে পারেন না এই প্রজন্মের সম্ভাবনাময় অভিনেতা। যার ফলে ছবির নামে ‘...নাম্বার ওয়ান’ থাকলেও, এই ধরনের ছবি আদতে তাঁকে খানিক পিছনেই ঠেলে দেয়!
গোবিন্দ এবং করিশ্মা কপূর অভিনীত ‘কুলি নাম্বার ওয়ান’ (১৯৯৫) এর রিমেকে প্রথম বার জুটি বেঁধেছেন বরুণ ও সারা আলি খান। ‘কনটেন্ট ইজ় কিং’-এর যুগে রিমেক ছবি করা যাবে না, এমনটা নয়। কিন্তু ডেভিড বা মহেশ ভট্ট বোধহয় বোঝেন না, রিমেক মানেই বাহ্যিক ভাবে সময়ের কাঁটা ঘুরিয়ে দেওয়া নয়। পুরনো ছবির হিট গান ‘তুঝকো মিরচি লগি...’তে করিশ্মা নেচেছিলেন শাড়ি পরে। আর নতুন ছবিতে সেই গানের রিমিক্স ভার্সনে সারা পরেছেন কনভার্স আর কোল্ড শোল্ডার ব্লাউজ়ের সঙ্গে নতুন কায়দার শাড়ি! এই পরিবর্তনটুকু করলেই ছবির গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে যায় না। ছবির সারবস্তু কি আদৌ এই সময়ের উপযোগী?
গোয়ার জেফ্রি রোজ়ারিও (পরেশ রাওয়াল) তার বড় মেয়ে সারার (সারা আলি খান) জন্য চায় ধনকুবের জামাই, যে নাকি প্লেনে চড়ে মুদির দোকানে বাজার করতে যাবে! উপযুক্ত পাত্রের সন্ধান না দেওয়ায় সে অপমান করে ঘটক পণ্ডিত জয় কিষণকে (জাভেদ জাফরি)। এ দিকে সারার ছবি দেখেই তাকে কুলি-পরিবারের ‘ভাবী’ বলে ভেবে ফেলে কুলি নাম্বার ওয়ান রাজু (বরুণ ধওয়ন)। অগত্যা রোজ়ারিওকে রাজি করাতে কিষণ ও রাজুর ভুয়ো পরিচয়ধারণ ও নানা কাণ্ডকারখানা। পুরনো ছবির গল্প, কিন্তু সময়োপযোগী হতে অবাস্তবতা ছুঁয়েছে আকাশ!
কুলি নাম্বার ওয়ান
পরিচালনা: ডেভিড ধওয়ন
অভিনয়: বরুণ, সারা, পরেশ, জাভেদ, জনি, রাজপাল
৪/১০
রুমি জাফরি আর ফারহাদ শামজির লেখা সংলাপ এ ছবির উত্তরণের সব পথ বন্ধ করে দেয়। যত ভাবে ‘পলিটিক্যালি ইনকারেক্ট’ কথা বলা যায়, তার সবটাই রয়েছে ছবিতে। বডিশেমিং, অর্থহীন প্রলাপ, এটিএম মানে অম্বানী-ট্রাম্প-মোদীর কনফারেন্স কল আরও নানা কিছু! কিন্তু শত চেষ্টার পরেও হাসি পায় না।
এই ধরনের ছবিতে বরুণ উচ্চকিত অভিনয় করেন বলে অনেকের অভিযোগ। তবে ‘কুলি নাম্বার ওয়ান’-এ যতটা দরকার, ততটাই নাটুকে অভিনয় করেছেন বরুণ। তুলনায় সারা বেশ আড়ষ্ট। এই ছবির ‘ফ্লেভার’ তাঁর অভিনয়ে ফুটে ওঠেনি। পরেশ রাওয়াল, জাভেদ জাফরি, জনি লিভার, রাজপাল যাদবদের দেখলে নব্বইয়ের দশক মনে পড়ে। তবে তাঁরা কেউ এই ছবির ত্রাণকর্তা নন। বেশির ভাগ গানই রিমিক্স এবং বেশ খারাপ।
সিনেমা হলে পপকর্ন খেতে খেতে এই ধরনের ছবি দেখার দর্শক হয়তো এখনও আছেন। কিন্তু যখনই এই ছবি ওটিটির পর্দায় আসে, তখন তা দর্শক হারায়। সবচেয়ে বড় কথা, নব্বইয়ের ‘মাইন্ডলেস কমেডি’ এ যুগে মানায় না। চাইলেই কি সব কিছু রিক্রিয়েট করা যায়?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy