আশির দশকের শেষ দিকে ‘হুকুমত’ ছবিতে ধর্মেন্দ্র অভিনয় করেন সদাশিব অমরাপুরকরের সঙ্গে। ছবিটি বক্স অফিসে সুপারহিট হয়। সে সময় ধর্মেন্দ্রর কেরিয়ারে কিছুটা ভাটার টান চলছিল। বেশ কিছু ফ্লপের পরে সাফল্যের মুখ দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন তিনি। সে বছর উপার্জনের দিকে দিক দিয়ে ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ ছবিকেও পিছনে ফেলে দিয়েছিল ‘হুকুমত’।
সদাশিব ছাড়াও অনুপম খের ‘মস্ত কলন্দর’ এবং শক্তি কপূর ‘বীরু দাদা’ ছবিতে রূপান্তরকামীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। কিন্তু তাঁদের সবাইকে ছাপিয়ে যান সদাশিব অমরাপুরকর। তাঁর অভিনীত ‘মহারানি’ চরিত্রটি এতটাই প্রভাব ফেলেছিল, ‘ফিল্মফেয়ার’ পুরস্কারে ‘শ্রেষ্ঠ খলনায়ক’ বলে একটি আলাদা বিভাগ তৈরি করা হয়। প্রথম বছর পুরস্কৃত হন সদাশিব অমরাপুরকর-ই।
সে বছর এই বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছিলেন ‘সওদাগর’ ছবির জন্য অমরীশ পুরী, ‘হম’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য ড্যানি এবং ‘হীনা’ ছবির জন্য রাজা মুরাদ। কিন্তু সবাইকে টেক্কা দিয়ে পুরস্কার ওঠে মাহারানিরূপী সদাশিব অমরাপুরকরের হাতেই। কার্যত অপ্রতিদ্বন্দ্বী খলনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার পরে সদাশিব অমরাপুরকর কৌতুকাভিনেতা হিসেবেও কাজ শুরু করেন।
কিন্তু সিনেমা মুক্তির পরে দেখা গেল, ছবিটা থেকে তাঁর অভিনয় পুরোটাই বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর সঙ্গে বাদ পড়ে পদ্মিনী কোলাপুরের বোন তেজস্বিনীর অভিনয়ও। একটি দৃশ্যে মাত্র পাঁচ সেকেন্ডের জন্য দেখা গিয়েছিল তেজস্বিনীকে। গুঞ্জন, অভিষেক-ঐশ্বর্যার উপর থেকে দর্শকদের নজর যাতে একটুও অন্য দিকে সরে না যায়, তার জন্য পরিচালক নির্দয় ভাবে অন্যদের অভিনয়ে কাঁচি চালিয়েছিলেন।
অভিনেতা পরিচয়ের বাইরেও নিজেকে মেলে ধরেছিলেন সদাশিব। পরিবেশ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। ২০১৩ সালে এক হোলি পার্টিতে জলের যথেচ্ছ ব্যবহার নিয়ে তিনি প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। ক্ষরাপ্রবণ মহারাষ্ট্রে জলের এই ব্যবহার অপচয় বলে মনে হয়েছিল তাঁর। এই প্রতিবাদের মাসুলস্বরূপ তিনি জনরোষের শিকার হন। হিন্দি ছবির ডাকসাইটে এই খলনায়ক রীতিমতো প্রহৃত হন।
দীর্ঘ দিন ফুসফুসের সংক্রমণজনিত অসুখে ভোগার পরে ২০১৪-র নভেম্বর মাসে প্রয়াত হন অভিনেতা সদাশিব অমরাপুরকর। তাঁর ইচ্ছে ছিল, শৈশব যে গ্রামে কেটেছে, সেখানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হোক। সেটাই করা হয়েছিল। তার আগে মুম্বইয়ে তাঁর নিথর দেহ রাখা ছিল শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য। কিন্তু পরিচালক অনিল শর্মা, গোবিন্দ নিহালনি ও অভিনেতা রাজা মুরাদ ছাড়া ইন্ডাস্ট্রির কাউকে সেখানে দেখা যায়নি তাঁকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy