বরাহনগরের ছেলে সঙ্গীতশিল্পী জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এখন যদিও তিনি মায়ানগরীর বাসিন্দা। কিন্তু দুর্গাপুজোর সময় এলেই বার বার এই শহর তাঁকে টানে। তাই সারা বছর যেখানেই থাকুন না কেন, পুজোর চারটে দিন চেষ্টা করেন কলকাতায় ফেরার। কিন্তু অনেক সময় দেশের বাইরে শো থাকলে তখন আর কোনও উপায় থাকে না। কিন্তু ছেলের অপেক্ষায় দিন গোনেন মা।
জিৎ তাও সুযোগ খোঁজেন শহরে ফেরার। গত বছর আসতে পারেননি। এই বছরেও হায়দরাবাদে তাঁর একটি গানের অনুষ্ঠান আছে। আশা করছেন, তা মিটিয়ে এক দিনের জন্য হলেও শহরে আসবেন। জিৎ বললেন, “আলমবাজারে আমাদের বাড়ি ছিল। পুজোর সময় হাঁটতে হাঁটতে দক্ষিণেশ্বর, উত্তরপাড়া, হিন্দমোটর-এর ঠাকুর দেখতে চলে যেতাম। বালি ব্রিজে কত যে হেঁটেছি!” এখন সেই দিনগুলো খুব মনে পড়ে গায়কের। তিনি যোগ করলেন, “এখন অনেক সময় কলকাতা বিমানবন্দরে নেমে সরাসরি শো করতে চলে যাই। তখন মাঝে মাঝে মনে হয় যদি বালি ব্রিজে নেমে দাঁড়াতে পারতাম!”
আরও পড়ুন:
স্ত্রী চন্দ্রাণী গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে মুম্বইয়ে অনেক দিন সংসার পেতেছেন গায়ক। পুজোয় যে খুব প্রেম করেছেন তা নয়, তবে স্ত্রীকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালবেসেছেন তিনি। এমনও পুজো কাটিয়েছেন যখন স্ত্রীকে কোনও উপহার দিতে পারেননি। জিৎ বললেন, “চন্দ্রাণীর সঙ্গে যখন বিয়ে হয়, তখন আমি মুম্বইয়ে নিজের জমি খুঁজছি। পকেটে মাত্র আট টাকা। কিছু উপহার দিতে পারিনি। এখন ভাবি, যা হয় ভালর জন্য হয়।” সেই সময় চন্দ্রাণী একটি বিশেষ উপহার চেয়েছিলেন। সেই ইচ্ছাপূরণ করেছেন জিৎ।
সেই দিনগুলো মনে পড়লে এখন মন্দ লাগে না তাঁর। গায়ক বলেন, “মুম্বইয়ে রগড়া প্যাটি বলে একটা খাবার পাওয়া যায়। ওই একটা কিনে দু’জনে ভাগ করে খেতাম। সেই সময় ও আমার কাছে উপহার হিসাবে চেয়েছিল বাংলা সিনেমার গান। সেই আশাপূরণ করেছি ওর। পুজোর প্যান্ডেলে আমার গান বাজছে সেটা মা-বাবা, চন্দ্রাণীর কাছে বড় প্রাপ্তি।” তবে রোজগার বৃদ্ধি পাওয়ার পর প্রতিবছর স্ত্রীকে একটি বিশেষ শাড়ি উপহার দেন জিৎ।
এই বছরের দুর্গাপুজোয়ও নতুন গান তৈরি করেছেন জিৎ। এই বছর পাঁচটি গান মুক্তি পাবে। তারমধ্যে দুটি গান লেখা এবং সুর দেওয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সুরুচি সংঘের গানও গেয়েছেন গায়ক। আর তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি পাবে একটি আগমনীর গান। যে গানের সুর করেছেন জিৎ, লিখেছেন এবং গেয়েছেন স্ত্রী চন্দ্রাণী।