ফিল্মের একটি দৃশ্য।
মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের সদস্য হতে গেলে কিচ্ছু নয়, চাই শুধু বিশ্বাস। প্রচণ্ড অশান্তি-গোলযোগ-খারাপ সময়ের মধ্যে থেকেও যে বিশ্বাস সমস্ত অশুভকে হারিয়ে শুভবুদ্ধির জয়গান করে। আর সেই বিশ্বাসের হাত ধরেই গল্প বোনা হয়েছে ‘স্পাইডার-ম্যান: ফার ফ্রম হোম’-এর। না হলে কেন চিত্রনাট্যকার নিজেই চরিত্রের মুখ দিয়ে সংলাপ বলাবেন, ‘‘এখন মানুষ বিশ্বাস করেন সব কিছু!’’ যদি সেই বিশ্বাসই আঁকড়ে ধরে রাখা যায়, তা হলে স্পাইডার-ম্যানের হাতে বোনা একবিংশ শতকের নব্য-রূপকথা ফিকে লাগবে না মোটেও।
‘অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম’-এর পরে সুপারহিরোর দল থেকে বিদায় নিয়েছে অনেক প্রিয় চরিত্র। কেউ বুড়ো হয়েছে, কারও খোঁজ মেলেনি, কেউ বা অবসরে। কিন্তু টোনি স্টার্কের (রবার্ট ডাউনি জুনিয়র) মৃত্যু, দর্শক বা এমসিইউ-এর চরিত্র কেউই মেনে নিতে পারেনি। তাই এ ছবি পদে পদে মনে করিয়ে দেয় আয়রন ম্যানের কথা। নিজের সমস্ত আবিষ্কার ও ক্ষমতা আয়রন ম্যান দিয়ে যেতে চেয়েছিল স্পাইডার-ম্যানকে। বিলিয়ন ডলারের প্রযুক্তি সমৃদ্ধ নতুন চশমা ইডিথের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে সে ক্ষমতা। এ বার হাইস্কুলের টিনএজার পিটার পার্কার (টম হল্যান্ড) সেই ক্ষমতার সদ্ব্যবহার করতে পারবে কি না, তা নিয়ে গল্প।
ব্লিপ থেকে ফিরে এসে নিউ ইয়র্কের হাইস্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা ছুটিতে রওনা দেয় ইটালি। নিক ফিউরির (স্যামুয়েল জ্যাকসন) ডাক বারবার উপেক্ষা করে শেষমেশ পিটারকে পড়তেই হয় অশুভ শক্তির সামনে। চোখ-মুখওয়ালা দৈত্যকায় জলমানব কিংবা আগুন-মানুষকে রুখতে পারবে স্পাইডি? তাকে সাহায্য করতে এসেছে কোয়েন্টিন বেক (জেক গিলেনহাল)। তবে ছবির মূল সুর আটকে আছে আয়রন ম্যানের জুতোয় পা গলানোর গল্পেই। এমনটা যে হবে তার সূত্র ‘...এন্ডগেম’-এই দেওয়া ছিল। এই ছবিতে টোনি স্টার্ককে দেখতে পাওয়া দর্শকের কাছে উপরি পাওনা।
স্পাইডার-ম্যান: ফার ফ্রম হোম
পরিচালনা: জন ওয়াটস
অভিনয়: টম, জেক, স্যামুয়েল, জন, জেকব, জ়েন্ডায়া
৬.৫/১০
মার্ভেল বরাবরই হিউমর-প্রিয়। সে প্রত্যাশায় ফাঁক রাখেননি নির্মাতারা। আবার ইলিউশন, অগমেন্টেড রিয়্যালিটির খেলা, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোনের চোখধাঁধানো কারসাজি সত্ত্বেও মন ছুঁয়ে গিয়েছে টিনএজার পিটারের দ্বিধাদ্বন্দ্ব। পছন্দের মানুষকে মনের কথা না বলতে পারার দ্বন্দ্ব, ইডিথকে নিজের কব্জায় রেখে মহৎ উদ্দেশ্যে এগিয়ে যাওয়ার দ্বিধা... সবটাই টম ফুটিয়েছেন নিপুণ ভাবে। যদিও এমজে-র চরিত্রে জ়েন্ডায়া তেমন নজর কাড়লেন কই?
যে মার্ভেল দর্শককে থানোসের মতো শয়তান উপহার দিয়েছে, সেখানে এ বারের মিস্টেরিয়োর চরিত্র আরও বেশি ডার্ক হলে ষোলো আনা প্রত্যাশাই পূরণ হতো। তবে এ ছবি দেখিয়ে দিল, স্পাইডার-ম্যান হোক না হোক, আয়রন ম্যান কিন্তু আজও মার্ভেলের তুরুপের তাস!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy