Advertisement
১৫ অক্টোবর ২০২৪
Bangladesh Crisis

অন্তর্বাস হাতে ছবি তোলা ছেলেটি নয়, বাংলাদেশের মুখ শহিদ ছাত্রেরা: শ্রীলেখা মিত্র

গত ২০ জুলাই শ্রীলেখা নিজের ফেসবুক পাতায় লিখেছিলেন, “বাংলাদেশি ছাত্রদের বাঁচান”। তার পর কেটে গিয়েছে অনেকগুলি দিন।

Sreelekha Mitra opens up about Bangladesh cureent situation

বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন শ্রীলেখা মিত্র। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৪ ১৫:৫৭
Share: Save:

“সব শেষ হয়নি, সব শেষ হয় না।” সমাজমাধ্যমে এমনই জানিয়েছেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। প্রথম থেকেই বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে এসেছেন তিনি। সোমবার সে দেশে চূড়ান্ত গণবিক্ষোভের পরেও ছাত্রদের পাশে থাকারই বার্তা দিয়েছেন শ্রীলেখা।

জুলাই মাসের মাঝামাঝি বাংলাদেশের পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠতে শুরু করে। সরকারি চাকরি ক্ষেত্রে সংরক্ষণের নিয়ম সংশোধনের দাবি নিয়ে পথে নামে ছাত্রসমাজ। পুলিশ-প্রশাসনের তরফে শুরু হয় প্রতিরোধ। মৃত্যু হয় একের পর এক ছাত্রের। গত ২০ জুলাই শ্রীলেখা নিজের ফেসবুক পাতায় লিখেছিলেন, “বাংলাদেশি ছাত্রদের বাঁচান।’’ তার পর কেটে গিয়েছে অনেকগুলি দিন। বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল হয়েছে পুরনো সংরক্ষণ ব্যবস্থা। কিন্তু অগস্ট মাসের শুরু থেকে ফের সরকার বিরোধী আন্দোলন বেড়েছে প্রতিবেশী দেশে। সোমবার গণ আন্দোলনের চাপে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশ ছেড়েছেন। কিন্তু তার পরই ছাত্র আন্দোলনের রাশ হারিয়ে গিয়েছে।

Sreelekha Mitra opens up about Bangladesh cureent situation

শ্রীলেখা ভাগ করেছেন সম্প্রীতির ছবি। ছবি: ফেসবুক সূত্রে প্রাপ্ত।

অভিযোগ, সারা বাংলাদেশে শুরু হয়েছে অরাজকতা,ভাঙচুর। ভাঙা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর মূর্তি, মুরাল। একের পর এক ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ঢুকে সব লন্ডভন্ড করে দিচ্ছে একদল যুবক। সাধারণ মানুষ কার্যত লুঠ করছেন। টিভি, রেফ্রিজ়ারেটর, সোফা থেকে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর জামদানি শাড়ি বা রাজহাঁস, ছাগল—সবই, যে যেমন পারছেন লুঠে নিচ্ছেন। এমনকি দু’হাতে দু’টি মহিলাদের অন্তর্বাস হাতে নিয়ে এক যুবকের ছবি ভাইরাল হয়েছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর পোশাকের সম্ভার থেকে ওগুলি বেরিয়েছে বলে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ছবি। সারা দেশে, এমনকি পড়শি দেশেও এই ছবি নিয়ে চলছে হাসি-মশকরা।

কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেও ইতিবাচক মনোভাব ধরে রাখতেই চাইছেন শ্রীলেখা। তাঁর দাবি, “ছাত্র আন্দোলেনর মধ্যে কোনও অন্যায় ছিল না। তাঁদের দাবি ন্যায্য, তাই আন্দোলনও নৈতিক। এই রকম ক্ষেত্রে আন্দোলন এত বড় আকার নিলে অনেক সময়ই রাশ হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। দুর্ভাগ্যক্রমে এখানেও তা-ই ঘটেছে।”

তবু শ্রীলেখা বলেছেন, “যে ছেলেটি অন্তর্বাস নিয়ে ছবি তুলছে, যে ছেলেটি বঙ্গবন্ধুর মূর্তিতে হাতুড়ি মারছে, তারা বিচ্ছিন্ন নয়। কিন্তু তারাই সব নয়। যে যুবকেরা এতদিন আন্দোলন করলেন, প্রাণ দিলেন শয়ে শয়ে তাঁদের সঙ্গে ওই মূর্তি ভাঙা ছাত্রদের আমি মিলিয়ে দেখতে চাই না। লড়াই ব্যর্থ হয়নি।”

নানা দিক থেকে আসছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার, হিন্দু মন্দিরে অগ্নিসংযোগের খবর। সেই প্রসঙ্গেই শ্রীলেখা ভাগ করেছেন একটি ছবি, দেখা যাচ্ছে ফরিদপুরের চকবাজার এলাকার শ্রী শ্রী রামধ্বনি মন্দির পাহারা দিচ্ছেন এক মুসলমান নাগরিক। শ্রীলেখা লিখেছেন, “সব শেষ হয়নি, সব শেষ হয় না।” এরপর আরও একগুচ্ছ ছবি ভাগ করেছেন অভিনেত্রী। সেখানে দেখা যাচ্ছে মন্দিরের বাইরেই নমাজ পড়ছেন এক মুসলমান। মন্দির প্রহরার কাজে কোনও ফাঁকি নেই। শ্রীলেখা লিখেছেন, “আমি একেই বলি ভালবাসার ধর্ম”। হ্যাশট্যাগ করেছেন ‘মাইরিলিজিয়নঅবলাভ’।

গত ২৪ ঘণ্টায় যেমন বাংলাদেশে অত্যাচারের ছবি ফুটে উঠেছে সমাজমাধ্যমে, তেমনই একের পর এক সংহতির ছবিও উঠে এসেছে। শুধু মন্দির নয়, সরকারি দফতরেও চলেছে তাণ্ডব। সেখানেও প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়েছে নাগরিকদের তরফে। এই সব কিছুর মধ্যে ইতিবাচকতা দেখছেন শ্রীলেখার মতো এ পার বাংলার মানুষেরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Sreelekha Mitra Bangladesh bangladesh unrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE