Advertisement
E-Paper

শাঁখা দেখে আনমনা ইশা! ভিড়ে চ্যাপ্টা খুদেকে আগলালেন শুভশ্রী, পুরীর জগন্নাথধামে আর কী হল?

কোনও ‘চিট ডায়েট’-এর ব্যাপার নেই। মন্দিরচত্বরে দাঁড়িয়ে চেটেপুটে পুরু সরের পায়েস, ঘিয়ে ভাজা মালপোয়া খেলেন সকলে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৫ ২১:২৭
পুরীর জগন্নাথধামে শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, ইশা সাহা।

পুরীর জগন্নাথধামে শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, ইশা সাহা। ছবি: ফেসবুক।

বিকেল চারটের পুরীর জগন্নাথ মন্দির। সোমবারে শিবের আরাধনা উপলক্ষে উপচে পড়ছে ভিড়। মন্দিরের প্রবেশদ্বার থেকে বেশ কিছু দূরে সেই ভিড়ের মধ্যেই এসে দাঁড়াল দুটো অটো। ডান দিকে দেখা মিলল পুরীর সেই বিখ্যাত রথের। এক সারিতে দাঁড়িয়ে। ধবধবে সাদা চিকনের সালোয়ার-কামিজ, মাথা ওড়না দিয়ে ঢাকা। কোনও রকম রূপটান ছাড়াই ভিড়ের মধ্যে দেখা গেল তাঁকে। শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’ ছবির ‘বিনোদিনী’। ঠিক পাশেই ফুলছাপা সালোয়ার-কামিজে এসে দাঁড়ালেন ইশা সাহা। পিছনে ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত। সঙ্গে সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়। তাঁর গলায় শিবের চিহ্ন আঁকা সাদা ওড়না। আর ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত, চিত্রনাট্যকার অর্ক মল্লিকা নাথ। ছবির প্রযোজক রানা সরকার পথ দেখিয়ে নিয়ে চললেন তাঁদের।

আষাঢ়ের ঘন কালো মেঘ তখন প্রায় মন্দিরের মাথায় এসে জমেছে। ভেজা মাটিতে খালি পায়ে তারকারা মিশে গেলেন ভিড়ে। লক্ষ্য একটাই, জগন্নাথ দর্শন। ইশা এবং ইন্দ্রনীল প্রথম পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে। সোমবার সকালেও মন্দিরে আসার কোনও পরিকল্পনা ছিল না ইশার। চিল্কায় শুটের কথা ছিল। কোনও কারণে সেটি না হওয়ায় মন্দিরে হাজির অভিনেত্রী। জগন্নাথদেবের মহিমার কথা মুগ্ধ হয়ে শুনছেন তাঁরা প্রযোজক রানার মুখ থেকে। জগন্নাথদেব চাইলে তবেই নাকি ভক্তরা তাঁর দেখা পান, তাঁর ভোগ কোনও দিন ফুরোয় না... এ রকম আরও নানা অজানা গল্প।

জগন্নাথধামে শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত।

জগন্নাথধামে শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়, ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

সুস্মিতা পাশ থেকে বলে উঠলেন, “আমি শিবভক্ত।” সুস্মিতার মন রাখতে মন্দিরে ঢুকেই আগে যাওয়া হল শিবমন্দিরে। ইশা, ইন্দ্রনীল, সুস্মিতা শিবের পুজো করলেন মাথায় জল ঢেলে।

এ বার জগন্নাথ দর্শনের পালা। সুস্মিতার সবাক প্রশ্ন, “জগন্নাথের কাছে যা চাওয়া যায় তাই-ই নাকি পাওয়া যায়?” তাঁর চোখে বিস্ময়। তেমনই বিস্ময়ের ছোঁয়া ইশার চোখেও। পরিচালক-সুরকার ইন্দ্রদীপ যেমন জানালেন, তিনি বরাবরের জগন্নাথভক্ত। যে কোনও কার্যসিদ্ধির ক্ষেত্রে সবার প্রথমে জগন্নাথদেবকেই মনে করেন। পুরীতে এলে প্রথমে তিনি প্রভুর কাছে যান। আগে ঈশ্বরের সাক্ষাৎ, তার পরে অন্য কাজ। এমনটাই হয়ে আসছে।

একে একে হল জগন্নাথ দর্শন। মন্দির থেকে বেরিয়ে ধ্বজা ওড়ানোর পালা। একটানা আকাশের দিকে চেয়ে রইলেন শুভশ্রী। কত বার যে ফিরে ফিরে এই মন্দিরে এসেছেন তার হিসাব নেই। ভিড়ের মধ্যে কেউ কেউ তাঁকে চিনে ফেললেন। থাকতে না পেরে একটি ছোট মেয়েকে ভিড়ের মধ্যে থেকে তুলে পাশে বসিয়ে দিলেন ‘ইয়ালিনি’র মা। বিকেল গড়িয়ে তখন সন্ধ্যা জমছে পুরীর মন্দিরের চত্বরে। পুরোহিতের কাছ থেকে একে একে জগন্নাথদেবের মন্দিরের ধ্বজা গলায় পরে নিলেন শুভশ্রী, ইন্দ্রদীপ, ইশা, ইন্দ্রনীল, সুস্মিতা, রানা। ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালিয়ে শুরু হল একান্তে প্রার্থনা। আরাধনার তৃপ্তি ছড়িয়ে পড়ল তাঁদের চোখে-মুখে।

জগন্নাথ বের ভোগ খাচ্ছেন শুভশ্রী।

জগন্নাথ বের ভোগ খাচ্ছেন শুভশ্রী। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

এ বার ভোগ খাওয়ার পালা। কোনও ‘চিট ডায়েট’-এর ব্যাপার নেই। মন্দিরচত্বরে দাঁড়িয়ে চেটেপুটে পুরু সরের পায়েস, ঘিয়ে ভাজা মালপোয়া খেলেন সকলে। ভোগ খেতে খেতেই কলকাতায় ভোগ নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে ফেললেন সবাই। আলো জ্বলে উঠল মন্দিরচত্বরে। ফেরার মুখে খালি রথের দিকে তাকিয়ে ইন্দ্রনীল ইশাকে বললেন, “এই রথেই আমাদের শুট হবে না?” ইশার উত্তর, “এই ছবিতে আমার যে কত বড় বড় সংলাপ! ভুলে যাচ্ছি না তো?” সুস্মিতা টিপ্পনি কাটলেন, “তুমি তো আঁতেল পরিচালক! তোমার সংলাপ হবে না তো কার হবে? সৃজিতদা যেমন পরিচালক, এই ছবিতে তুমি ঠিক তেমন পরিচালকের ভূমিকায় অভিনয় করছ।”

‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’র শুটিং করতে গিয়ে সুস্মিতা কি তাঁর ‘সৃজিতদ’দাকে একটু বেশিই চিনে ফেলেছেন?

সরু রাস্তা ধরে মন্দিরের গলি দিয়ে ফিরতি পথে আবার অটোয় ফেরা। ইশা বললেন, “এই ছোট ছোট দোকানে কী সুন্দর জিনিস পাওয়া যাচ্ছে! গয়না, জগন্নাথমূর্তি, শাঁখা...।” কোথায় আটকে গেলেন ইশা? প্রান্তবেলায় মন্দিরের বিশাল চত্বরে অজস্র দর্শনার্থীর মাঝে তাঁর মন পড়ে রইল কোথায়?

Purilia Jagannath Dev Subhashree Ganguly Ishaa saha Indraneil Sengupta Indraadip Dasgupta Rana Sarkar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy