Advertisement
E-Paper

গন্তব্যের চেয়েও সফর বেশি সুন্দর

অভিনেতাদের জোরালো অভিনয়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে দরকার ছিল আরও গোছানো গল্পের। ‘খতম কাহানি’ এবং ‘জানে দে’ গান দু’টি গল্পের সঙ্গে মানিয়েছে ভাল। শেষে একটাই কথা মনে হয়, ছবির ফ্রেম যেখানে থামল, সেখান থেকেই শুরু হল জয়া-যোগীর নতুন ভাবে পথ চলা।

সুনীতা কোলে

শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৭ ০৮:০০

করীব করীব সিঙ্গল

পরিচালনা: তনুজা চন্দ্র

অভিনয়: ইরফান খান, পার্বতী, নেহা ধুপিয়া

৬/১০

বাস্তববাদী, অন্তর্মুখী সে। গত দু’বছরে কোনও ছুটি নেয়নি, সেনাবাহিনীতে কাজ করা স্বামীর মৃত্যু হয়েছে দশ বছর আগে, স্বামীর স্মৃতি ছড়িয়ে পাসওয়ার্ড আর ল্যাপটপের ওয়ালপেপারে, বন্ধুদের সন্তান বা পোষ্যের খেয়াল রাখে ‘স্টেপনি আন্টি’। আসুন, আলাপ করিয়ে দিই জয়া শশীধরনের (পার্বতী) সঙ্গে। এক বন্ধুর উৎসাহে খানিক দ্বিধার সঙ্গে জয়া নাম লেখায় একটি অনলাইন ডেটিং সাইটে। তাকে মেসেজ পাঠায় যোগেন্দ্রকুমার ধীরেন্দ্রনাথ প্রজাপতি ওরফে যোগী (ইরফান)। অনবরত বকবক করা, কিছুটা গায়ে পড়া, অগোছালো যোগীর আচরণে তিতিবিরক্ত হয় জয়া। কিন্তু কৌতূহলীও হয়ে ওঠে। তার তিন প্রাক্তন প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় যোগী। খানিকটা ঝোঁকের বশেই রাজি হয়ে যায় জয়া। এর পর দেহরাদূন, আলওয়ার, জয়পুর হয়ে গ্যাংটকের পথে এগোতে থাকে গল্প।

‘করীব করীব সিঙ্গল’-এর গল্প ‘সাথ সাথ জিনে মরনে ওয়ালি’ লভ স্টোরি নয়। পরিণত দুই মানুষের দেখা হয়। হঠাৎ নয়, পরিকল্পনা মাফিক। দু’জনেরই ঝুলিতে ইতিমধ্যে জমা হয়েছে নানা অভিজ্ঞতা। প্রাথমিক অপছন্দ কাটিয়ে জয়ার মনে দাগ কাটে যোগীর সরলতা। নিজের ইচ্ছেকে গুরুত্ব দিতে শুরু করে সে। সকলকে সব সময় খুশি করার চেষ্টা ছেড়ে দেয়। প্লেন মিস, ভুল ট্রেনে উঠে পড়া আর মন ছুঁয়ে যাওয়া আলাপচারিতার চড়াই-উতরাই পেরিয়ে কুয়াশায় মিলিয়ে যায় তাদের রোপওয়ে কেবিন। আর পুরোটা সময় জুড়ে অজান্তেই দর্শকের ঠোঁটের কোনে লেগে থাকে এক টুকরো হাসি।

ইরফানের অভিনয় নিয়ে হয়তো নতুন করে আর বলার কিছু নেই। ‘হ্যাপি গো লাকি’ যোগীকে জড়তাহীন অভিনয়ে পরদায় এনেছেন তিনি। নিজেকে নিয়ে মজা করাই হোক বা প্রেমের গভীর অনুভূতি— সবই অনায়াসে ধরা পড়ে ইরফানের চোখে। এই ছবি দেখে দর্শকের ‘লাইফ ইন এ মেট্রো’র ‘মন্টি’ বা ‘পিকু’র ‘রানা’র কথা মনে পড়বেই। এমন ছকভাঙা রোম্যান্টিক চরিত্রে যেন ইরফান অপরিহার্য হয়ে উঠছেন।

মলয়ালি অভিনেত্রী পার্বতী এই ছবিতে হতাশ করেননি। তাঁর শহুরে, কর্মরতা, আধুনিকার চরিত্রটির সঙ্গে নিজেকে মেলাতে পারবেন অনেকেই। পার্বতীর কমিক টাইমিং অনবদ্য। ইরফানের সঙ্গে রসায়নও জমেছে বেশ।

কামনা চন্দ্রের লেখা গল্প থেকে চিত্রনাট্য লিখেছেন পরিচালক তনুজা চন্দ্র এবং গজল ঢালিওয়াল। অনলাইন ডেটিং সাইটে আলাপ হওয়ার মতো ক্লিশে গল্পকে তনুজা অন্য ভাবে উপস্থাপিত করেছেন। প্রথমার্ধে ছবি তরতর করে এগোলেও দুর্বল গল্পের কারণে দ্বিতীয়ার্ধে হোঁচট খেতে থাকে। তিনটে ঘুমের ওযুধ খেয়ে জয়ার অসংলগ্ন আচরণ বা শেষে যোগীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি— তার চরিত্রের সঙ্গে বেজায় বেমানান। অভিনেতাদের জোরালো অভিনয়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে দরকার ছিল আরও গোছানো গল্পের। ‘খতম কাহানি’ এবং ‘জানে দে’ গান দু’টি গল্পের সঙ্গে মানিয়েছে ভাল। শেষে একটাই কথা মনে হয়, ছবির ফ্রেম যেখানে থামল, সেখান থেকেই শুরু হল জয়া-যোগীর নতুন ভাবে পথ চলা।

Qareeb Qareeb Single Bollywood Movie Irrfan Khan Parvathy ইরফান খান পার্বতী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy