সিধো-কানহু মুর্মুর নামে কেবল একটি রাস্তা, ‘সিধো কানহু ডহর’। আর কয়েকটি মূর্তি! স্বাধীনতার ৭৮ বছর পরে ১৭০ বছরের পুরনো ‘সাঁওতাল বিদ্রোহ’-এর দুই নেতার প্রাপ্তি কেবল এ টুকুই। ভারতীয় ইতিহাসেও তাঁরা বলতে গেলে ব্রাত্য। পাঠ্যপুস্তকের পাতায় এই বিদ্রোহ এবং বিদ্রোহের নেতাদের নিয়ে তেমন তথ্য নেই। বাংলা বিনোদন দুনিয়াও তাঁদের নিয়ে ছবি তৈরির কথা ভাবেননি। তাই ভিন্ন ধারার ছবির যাঁরা দর্শক তাঁদের জন্য প্রযোজক অনুপল সাউ এবং পরিচালক আবীর রায়ের নতুন বছরের উপহার ‘হুল’। এই ছবিতে দুই বিদ্রোহী নেতার ভূমিকায় যথাক্রমে দেবাশিস মণ্ডল, কিঞ্জল নন্দ। ছবির প্রথম পোস্টার প্রকাশ্যে একমাত্র আনন্দবাজার ডট কমের পাতায়।
সকলে যখন রহস্য-রোমাঞ্চ আর ভৌতিক কাহিনিতে মজে, আপনি তখন বিচরণ করছেন ১৮৫৫-৫৬ সালে। কেন? প্রশ্ন ছিল পরিচালকের কাছে। আবীরের যুক্তি, “১৭০ বছর পরেও কেউ সিধো-কানহুর কথা বলেন না! আমরা বলার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। প্রযোজক পাশে না থাকলে অবশ্য এই সাহস দেখাতে পারতাম না।” তাই অনুপলের কাছ থেকে সবুজ সঙ্কেত মিলতেই দেরি করেননি পরিচালক। ঝাড়খণ্ডে ছবির বড় অংশের শুটিং সেরে ফেলেছেন। ছবিতে দুই অভিনেতা ছাড়াও আছেন চন্দন সেন, বিশ্বরূপ বিশ্বাস, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, উমা বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীতমা দে। গানে দেখা যাবে ছোট পর্দার দীপান্বিতা রক্ষিতকে।
ঝাড়গ্রামে এখনও সাঁওতাল সম্প্রদায়ের একটা বড় অংশের বাস। ১৭০ বছরে তাঁদের জীবনচর্যা কতটা উন্নত হয়েছে?
আবীরের মতে, প্রচুর না হলেও কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বিদ্যুৎ এসেছে গ্রামে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছেলেমেয়েরাও সমাজমাধ্যমে অভ্যস্ত। তবে জীবনযাত্রার সার্বিক মানের আরও উন্নতি দরকার। শুটিংয়ের জন্য তাই ঝাড়গ্রামকে বেছে নিয়েছিলেন তিনি। বাকি অংশের শুটিং চলছে কলকাতায়।
আরও পড়ুন:
ব্যতিক্রমী ছবি তারকাখচিত হলে প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের ভিড় কি বেশি বাড়ত? ছবির বাণিজ্যিক দিকটিও তো মাথায় রাখা দরকার!
এ বার মতামত দিলেন প্রযোজক, পরিচালক উভয়েই। অনুপল এবং আবীর একযোগে জানালেন, তারকাদের ‘সিধো-কানহু’ চরিত্রের উপযোগী করে তোলা যথেষ্ট পরিশ্রমের। গায়ের রং থেকে চেহারার ধাঁচ— কোনওটাই মেলে না। পাশাপাশি, অভিনয়েও পোক্ত হতে হবে। কিঞ্জল এবং দেবাশিসের মধ্যে তাঁরা সব গুণ দেখতে পেয়েছেন। তাই তাঁদের মুখ্য ভূমিকায় বেছে নিয়েছেন।