প্রতিটি দৃশ্যেই উজ্জ্বল তিনি— সুমিতা সান্যাল
বাংলা ছবির এক নম্বর নায়কের কাছে পার্ট চাইতে এসে হাসতে হাসতে হঠাৎ কেঁদে ফেললেন রহস্যময়ী। পরক্ষণেই ফের হেসে চোখের জল আঙুলে নিয়ে বললেন, ‘‘গ্লিসারিন লাগবে না!’’
মৃত্যুশয্যায় এক তরুণ বলছেন, ‘‘বাবুমশাই নেহি আয়া?’’ পাশে বসা তরুণী মাথায় হাত বুলিয়ে বলছেন, ‘‘অভি আ জায়েঙ্গে।’’
রাতে নিঝুমগড় স্টেশনে নামছেন তরুণী। কিন্তু গভর্নেসের চাকরি নিয়ে যেখানে যাচ্ছেন, সে বাড়িটাকে অনেকে ভয় পায়।
যথাক্রমে সত্যজিৎ রায়ের ‘নায়ক’, হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়ের ‘আনন্দ’, তরুণ মজুমদারের ‘কুহেলি’-র ঝলক। আর প্রতিটি দৃশ্যেই উজ্জ্বল তিনি— সুমিতা সান্যাল। অভিনয় ছেড়েছিলেন অনেক দিন। রবিবার সকালে কলকাতায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হলেন মধ্য সত্তরের সুমিতাদেবী।
বছর পাঁচেক আগে রাজেশ খন্নার মৃত্যুর পরে সুমিতাদেবী বলেছিলেন ‘আনন্দ’-এর সেই মৃত্যুদৃশ্যের কথা। রাজেশ নাকি সুমিতাদেবীর কান্নাকাটিতে সুড়সুড়ির চোটে আর একটু হলেই হেসে ফেলছিলেন!
আরও পড়ুন: মারা গেলেন সঙ্গীতশিল্পী সবিতা চৌধুরী
জন্ম দার্জিলিঙে। তখন নাম ছিল মঞ্জুলা। অভিনয়ের সূত্রেই নামবদল। প্রথম ছবি ১৯৬০-এ, উত্তমকুমার অভিনীত ‘খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’। পরের দু’দশক জুড়ে হিন্দি-বাংলা মিলিয়ে অনেক ছবি। ‘আনন্দ’-এ তিনি অমিতাভ বচ্চনের নায়িকা, ‘গুড্ডি’তে জয়া বচ্চনের বৌদি, ‘দেয়া-নেয়া’-য় তনুজার বান্ধবী, ‘আপনজন’-এ ধুরন্ধর গৃহবধূ। হিন্দির ‘মেরে অপনে’-তেও তিনি। সেই সঙ্গে ‘সাগিনা মাহাতো’য় দিলীপকুমার, ‘নায়ক’-এ উত্তমকুমারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয়।
ফিল্ম সম্পাদক স্বামী, সুবোধ রায় আগেই প্রয়াত। পুত্রবধূ মৌমিতা বলছিলেন, ‘‘ছোট বোন ও ভগ্নিপতি মারা যাওয়ার পর থেকেই অবসাদে ভুগছিলেন।’’ পরিচালক অতনু ঘোষ ফেসবুকে লিখেছেন, বছরখানেক আগে ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব নিয়ে গিয়েছিলেন সুমিতাদেবীর কাছে। ছবিটা পিছিয়ে যায়।
এ দিন অনেকেই ইন্টারনেটে খুঁজেছেন লতা মঙ্গেশকেরের ‘না, জিয়া লাগে না’ এবং আশা ভোঁসলের গাওয়া ‘মেঘের কোলে রোদ হেসেছে’। দু’টোই সুমিতাদেবীর লিপে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy