এমনও দিন গিয়েছে, বিজয় বর্মা ঠায় সোফায় বসে! ওঠার ইচ্ছেটুকুও হারিয়েছেন। একবেলা বা একদিন নয়, টানা তিন-চার দিন এমনই কেটেছে তাঁর। সেই সময় তাঁর হাত ধরেছিলেন এক তারকাকন্যা। অভিনেতার স্বীকারোক্তি, “ও না থাকলে আজকের ‘আমি’কে আপনারা হয়তো পেতেন না।”
করোনাকাল তখন। মুম্বইয়ের বাড়িতে একা বিজয়। মাঝেমধ্যে জ়ুম কলে ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে আড্ডা। বাকি দীর্ঘ সময় ফাঁকা ফ্ল্যাটে একা তিনি।
বিজয়ের সেই সময় খুব মনে পড়ত বাড়ির কথা। সেই বাড়ি, যা তিনি পেশার কারণে ছেড়ে এসেছিলেন, নিজেকে মায়ানগরীতে প্রমাণ করবেন বলে। সেই পরিবার, যা তাঁকে ছোট থেকে আগলে রেখেছে, বড় করেছে। যত পরিবারের কথা মনে পড়ত তত অপরাধবোধ কুরে কুরে খেত তাঁকে। বিজয়ের কেবলই মনে হত, নিজের কথা ভাবতে গিয়ে পরিবারের বাকিদের কষ্ট দেননি তো! তিনি কি খুব স্বার্থপর?
একদিন, দু’দিন, তিন দিন। রোজ একই কথা ভাবতে ভাবতে অবসাদে ডুবেছেন অভিনেতা। প্রথমে সেটা নিজে বুঝতেও পারেননি! এক অদ্ভুত কষ্ট তাঁকে গ্রাস করছিল, এটুকুই বুঝতে পেরেছিলেন। এ-ও বুঝেছিলেন, এ ভাবে বেশিদিন চললে তিনি শারীরিক এবং মানসিক দিক থেকে ফুরিয়ে যাবেন। ফ্ল্যাট সংলগ্ন ছোট্ট বারান্দা আর বন্ধুদের সঙ্গে মুঠোফোনে আড্ডা— কোনও মতে দিন কাটছিল তাঁর। তিনি যে ভাল নেই, সে কথা প্রথম বুঝতে পারেন আমির খানের মেয়ে ইরা খান। তিনি বিজয়কে বলেন, “তুমি অবসন্ন। মনোবিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁর পরামর্শ নাও। ভাল হয়ে যাবে।” ইরা আর বিজয় ‘দহাড়’ সিরিজ়ে একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন।
আরও পড়ুন:
অভিনেতা জানান, তিনি বিষয়টি নিয়ে শুরুতে দ্বিধায় ভুগেছিলেন। তার পর মনোবিদের পরামর্শ নেন। তিনি ওষুধ দিতে চেয়েছিলেন। বদলে বিজয় বেছে নেন যোগাভ্যাস। “যোগ-এর জন্য বানানো বিশেষ আসনের উপরে শুয়ে পড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাঁদতাম। সেই সময় ইরা আমায় সামলেছিল।” ইরা বুঝিয়েছিলেন, ছেলেবেলার অনেক যন্ত্রণা অবচেতনে রয়ে যায়। মানুষ অনুভব করতে পারে না। সেই যন্ত্রণা যে কোনও সময় মাথাচাড়া দিতে পারে। অবসন্ন করে ফেলতে পারে পোড় খাওয়াদেরও।
সম্প্রতি, বিজয় অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীর পডকাস্টে বিশেষ অতিথি হিসেবে এসেছিলেন। সেখানেই জীবনের অন্ধকার সময়, অবসাদ, হতাশা নিয়ে বক্তব্য জানান।