অভিনয়জীবনের শুরুটা করেছিলেন রোম্যান্টিক কমেডি ছবির নায়িকা হিসাবে। তবে ধীরে ধীরে নিজেকে ভেঙেছেন তিনি। নতুন ধরনের চরিত্রে নজর কেড়েছেন। সম্প্রতি, শাহ বানো মামলা নিয়ে তৈরি ‘হক্’ ছবির মাধ্যমে ফের চর্চায় ইয়ামি গৌতম। শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর, ইয়ামির জন্মদিন। শুভেচ্ছাবার্তার পাশাপাশি বলিউডের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান নিয়ে তাঁর মন্তব্য এখন ‘ভাইরাল’।
শোনা যাচ্ছে, ‘হক্’-এর সাফল্যের আবহে নাকি চারটি নতুন ছবির চুক্তিতে সই করেছেন তিনি। যদিও সেই প্রশ্নের জবাবের দায়িত্ব ঠেলেছেন প্রযোজকদের ঘাড়ে। স্পষ্ট বলেছেন, “এই ঘোষণা তো প্রযোজক করবেন।” তবে দর্শকের ভালবাসায় নিজেকে ভাসিয়ে দিয়েছেন যে, সে কথা একবাক্যে স্বীকার করেছেন অভিনেত্রী। নেটাগরিকের একাংশের মত, এই ছবি জাতীয় পুরস্কার পাবেই। অভিনেত্রীও কি এমনই বিশ্বাস করেন? ঠাট্টা করে ইয়ামি বলেন, “এই প্রশ্নের উত্তর থেকে কী কী শিরোনাম হতে পারে সেটাই ভাবছি শুধু। কী উত্তর হতে পারে আমার সত্যিই ধারণা নেই। আমি খুব সতর্ক থাকার চেষ্টা করছি, মেপে কথা বলার চেষ্টা করছি। আমি চাই না, আমার উত্তর শুনে এমন কিছু মনে হোক, যেটা আমি নই!”
কিন্তু, সমাজমাধ্যম তো ভরেছে এমনই মন্তব্যে। অভিনেত্রী সেগুলো পড়েননি? নায়িকা স্বীকার করে নিয়েছেন যে সমস্ত মন্তব্যই পড়েছেন তিনি। ইয়ামি বলেন, “এটা আমার দর্শকের বক্তব্য, আর সেটাই আমার জন্য বিশাল বড় উপহার। ওঁদের জন্যই আজ আমি এই জায়গায়। অবশ্যই কিছু পরিচালক আমার উপর ভরসা করেছেন যেটা বেশির ভাগ পরিচালকই করতে পারেননি। আমি কোনও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যাই না, তাঁদের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি।”
কিন্তু কেন কোনও পার্টি বা পুরস্কারের অনুষ্ঠানে সে ভাবে দেখা যায় না অভিনেত্রীকে? অথচ বলা হয়, এই সমস্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিতিই বেশি করে কাজ পেতে নাকি সাহায্য করে যে কোনও শিল্পীকে! ইয়ামির কথায়, “নিশ্চয়ই তা-ই। কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু আমি যদি তার সঙ্গে একাত্মবোধ করতে না পারি, তা হলে কাজ করব কী ভাবে? আমি কাউকে কী ভাবে বলব যে, এই সুযোগটা আমার চাই? আমি পরিশ্রম করব, সঠিক চিত্রনাট্য বাছব এবং কিছু পরিচালক আমাকে বেছে নেবেন, সেই সুযোগের অপেক্ষা করব। সে ভাবেই ২০১৯ সালে ‘উরি’ হয়েছিল।” কিন্তু, যা তাঁর ব্যক্তিত্বের সঙ্গে খাপ খায় না বা একটা ‘সিস্টেম’-এ থাকার জন্য কোনও কাজ তিনি করতে পারবেন না, স্পষ্ট বক্তব্য অভিনেত্রীর।
এর পরেই তাঁর বক্তব্য, কিছু কিছু মানুষ ‘অ্যাওয়ার্ড’-এ বিশ্বাস করতে পারেন। কিন্তু তিনি করেন না। ইয়ামি বলেন, “যে ভাবে এ সমস্ত অনুষ্ঠান সংঘটিত হয় এখন, দেখে মনে হয় ওরা নিজেরাই বলছে, ‘আমাদের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই’। এটা কিন্তু আমি বলছি না। দর্শকই এই কথা বলছে এখন।’’
ইয়ামি যোগ করেন, ‘‘যদি কারও মনে হয় যে পুরস্কারেই তার মন ভরে, তা হলে তা-ই করুক। কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু কারও যদি মনে হয় যে, না আমি নিজের পথ নিজে তৈরি করব, আমার সফর আলাদা, তা হলে সেটাই সে করুক। এটা ভিন্ন পথ, কিন্তু আমি এতেই বিশ্বাসী। সাফল্য আসে এ ভাবে? ১০০ শতাংশ আসে। ইন্ডাস্ট্রিতে দুই ধরনের পথের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান হতে পারে বলেই মনে করি।”
২০১০ সালে বড়পর্দায় যাত্রা শুরু ইয়ামির। কন্নড়, পঞ্জাবি ও তেলুগু ছবির পরে ২০১২ সালে বলিউডে ‘ভিকি ডোনর’-এর মাধ্যমে কাজ শুরু করেন অভিনেত্রী। নজর কেড়েছেন ‘বদলাপুর’, ‘সনম রে’, ‘কাবিল’, ‘এ থার্সডে’, ‘ওএমজি ২’, ‘আর্টিকল ৩৭০’, ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর মতো ছবিতে।