Advertisement
E-Paper

অনুষ্কা অনুপস্থিত, তবু গ্র্যামি মঞ্চে রয়ে গেল ভারত

এক জনের বাবা সিন্ধি। অন্য জনের রক্তে রয়েছে পঞ্জাবি আর মাড়ওয়ারির জিন। এক জন লেখক। অন্য জন ডাক্তার। প্রথম জন নীলা ভাসওয়ানি। দ্বিতীয় জন রিকি কেজ। ৫৭তম গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের অন্যতম দুই তারকা এঁরাই। যাঁদের হাত ধরে ভারতের পতাকা উড়ছে স্টেপেল্স সেন্টারে। স্টেপেল্স সেন্টার। লস অ্যাঞ্জেলেসের অন্যতম বিখ্যাত ক্রীড়া প্রাঙ্গণ। রবিবার সেখানেই হয়ে গেল ৫৭তম গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের অনুষ্ঠানটি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৩১
নীলা ভাসওয়ানি এবং রিকি কেজ

নীলা ভাসওয়ানি এবং রিকি কেজ

এক জনের বাবা সিন্ধি। অন্য জনের রক্তে রয়েছে পঞ্জাবি আর মাড়ওয়ারির জিন। এক জন লেখক। অন্য জন ডাক্তার। প্রথম জন নীলা ভাসওয়ানি। দ্বিতীয় জন রিকি কেজ। ৫৭তম গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের অন্যতম দুই তারকা এঁরাই। যাঁদের হাত ধরে ভারতের পতাকা উড়ছে স্টেপেল্স সেন্টারে।

স্টেপেল্স সেন্টার। লস অ্যাঞ্জেলেসের অন্যতম বিখ্যাত ক্রীড়া প্রাঙ্গণ। রবিবার সেখানেই হয়ে গেল ৫৭তম গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডের অনুষ্ঠানটি। রিকি কেজ পেলেন সেরা ‘নিউ এজ অ্যালবাম’-এর ট্রফিটি। তাঁর ‘উইন্ডস অব সামসারা’ অ্যালবামটির জন্য। দক্ষিণ আফ্রিকার এক শিল্পী উটার কেলারম্যানের সঙ্গে যৌথ ভাবে এই অ্যালবামটি তৈরি করেছেন রিকি। আর ‘চিলন্ড্রেস্ অ্যালবাম’-এর মধ্যে সেরার শিরোপাটি জিতে নিলেন নীলা ভাসওয়ানি। তাঁর ‘আই অ্যাম মালালা...’ অ্যালবামটির জন্য। তবে রবিশঙ্করের মেয়ে সেতার বাদক অনুষ্কাশঙ্কর তাঁর ‘ট্রেসেস অব ইউ’ অ্যালবামটির জন্য মনোনয়ন পেলেও অবশেষে হেরে যান অ্যাঞ্জেলিক কিডজোর কাছে। ‘ওয়ার্ল্ড মিউজিক অ্যালবাম’ হিসেবে সেরার খেতাব জেতে কিডজোর ‘ইভ’।

সবাইকে চমকে দিয়ে অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তবে আগে থেকে রেকর্ড করা একটি ভিডিওর মাধ্যমে। মহিলাদের উপর নির্যাতন বন্ধ করতেই তিনি আবেদন করেন। বলেন, আমেরিকায় প্রতি পাঁচ জন মহিলার মধ্যে এক জনকে ধর্ষিতা হতে হয়। চার জনের মধ্যে এক জনকে শিকার হতে হয় নির্যাতনের। বার বার সমাজে নানা ভাবে পরিবর্তন এনেছেন শিল্পীরা। তাই এই অন্যায় প্রতিরোধের জন্য সব শিল্পীদের রুখে দাঁড়াতে বললেন ওবামা।

সেরা পপ বা রক অ্যালবামের পুরস্কার যেই জিতুন না কেন, ভারত আপাতত মজে আছে রিকি কেজ আর নীলা ভাসওয়ানিকে নিয়ে। কিছু দিন আগেই অসলোর মঞ্চ কাঁপিয়েছিল মালালা ইউসুফজাই। আর তাঁর লেখা বইটির অডিও বুক বানিয়ে সেরার শিরোপা চলে গেল নীলার ঝুলিতে। নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা নীলার জীবন বড়ই অদ্ভুত। ছোট হোটেল বা পানশালা সব জায়গাতেই ওয়েটারের কাজ করেছেন তিনি। পানশালাতে কাজ করেই জুগিয়েছেন নিজের স্কুলের মাইনে। সিনেমা হলের টিকিট বিক্রেতার ভূমিকাতেই হোক বা আইসক্রিমওয়ালা বিভিন্ন পেশার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর।

আর রিকি? সঙ্গীতের সঙ্গে তাঁর সে ভাবে সম্পর্ক ছিল না বললেই চলে। দু-তিন মাস আগে রিকির সঙ্গে একটি কাজ করেছেন সেতার বাদক পূর্বায়ন চট্টোপাধ্যায়। তিনিও উচ্ছ্বসিত রিকির এই সাফল্যে। সঙ্গীতের কোনও যথাযথ প্রশিক্ষণ ছিল না রিকির। কিন্তু তা তাঁর কাজে বাধার সৃষ্টি করেনি, জানিয়েছেন পূর্বায়ন। আট বছর বয়সে বেঙ্গালুরু চলে আসে রিকি। তার পর সেখানকার একটি স্কুলেই তাঁর পড়াশোনা। স্কুলের গণ্ডি টপকে বেঙ্গালুরুর কলেজ থেকেই দাঁতের ডাক্তারি পাশ করেন তিনি। তবে ওই টুকুই। এর পর পুরোপুরি বদলে যায় তাঁর পেশা। এক সাক্ষাৎকারে রিকি বলেছিলেন, “ডাক্তারি বইয়ের পাতা না উল্টে যদি সেই সময়ে সঙ্গীত চর্চা করতাম, তা হলে হয়ত আরও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল।”

বিশ্ব জুড়ে চলতে থাকা অশান্তির মধ্যে রিকির ‘উইন্ডস অব সামসারা’ অ্যালবামটি নিয়ে আসে এক শান্তির বার্তা। অন্য দিকে, নীলা ভাসওয়ানির অ্যালবামেও সেই যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ঘোষণা। মালালা সম্পর্কে তিনি বলেছেন, “নিজের স্কুল আর ছোট ছোট বাচ্চাদের জীবন বাঁচাতে সে ব্যস্ত।” তাই হয়তো আসতে পারেননি গ্র্যামির অনুষ্ঠানে। মালালার কাজের একটি অংশ হতে পেরে উচ্ছ্বসিত তিনি। আর এ ভাবেই অশান্তির বিরুদ্ধে হেঁটে গ্র্যামি-মঞ্চে ভারত-ধ্বজা ওড়ালেন দুই ভারতীয় বংশোদ্ভূত।

neela vaswani ricky cage anushka shankar grammy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy