একই ফ্লাইটের পাইলটদের খাবার আলাদা আলাদা। ফুড পয়জনিংয়ে যাতে একসঙ্গে অসুস্থ না-হয়ে পড়েন।
একটা বোয়িং ৭৪৭-এর যন্ত্রাংশের সংখ্যা ৬০ লক্ষ। মানে ৯৯.৯৯% ঠিক থাকলেও ছ’শো ভুল থেকে যাবে।
জানতেন? অবশ্য না-জানা তেমন অপরাধ নয়। নিয়মিত বিমানযাত্রীদের ক’জনেই বা জানেন! কাগজের প্রথম পাতায় এমএইচ ৩৭০ বা হাডসন নদীতে প্লেন নামার খবর পাওয়ার পর বড়জোর একটা গুগল সার্চ।
তবু... যাদের দিন-রাত কাটে আকাশে। সেই পাইলট, কো-পাইলট, ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টদের সমস্যাগুলো ঠিক কেমন? এ বার হয়তো তা জানা একটু সহজ হবে। স্টার প্লাসে রোববার রাত ৯টা থেকে শুরু হয়েছে এক নতুন শো ‘এয়ারলাইন্স হর উড়ান এক তুফান’। প্রধান দুই চরিত্র বিমানচালক ফ্লাইট অফিসার অনন্যা রাওয়াত আর ক্যাপ্টেন আকাশ। অনন্যার ভূমিকায় টিউলিপ জোশি। আর আকাশ, যুধিষ্ঠির। এক বিশেষ চরিত্রে আছেন কণীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
‘সাস-বহু’র সহজ ইক্যুয়েশন থাকতে, উড়ান-শিল্প নিয়ে সিরিয়াল কেন? হেসেই ফেললেন স্টার প্লাসের প্রোগ্রামিং স্ট্র্যাটেজির ভাইস প্রেসিডেন্ট নিখিল মাধক। “সাস-বহু রেসিপি মানেই শিওর শট। কিন্তু কখনও তো স্টেপ আউট করে খেলতেই হবে। এখন মধ্যবিত্তরাও বেড়াতে যাওয়ার
সময় দিব্যি ফ্লাইটই বেছে নিচ্ছেন। একটু খোঁজ করলেই দেখবেন, হয়তো আপনার পাশের ফ্ল্যাটেই থাকেন কোনও ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট। আমরা তাই আত্মবিশ্বাসী, লোকেদের এই সব জিনিস জানার আগ্রহ আছে,” সন্ধেবেলা দিল্লিতে প্রেস কনফারেন্সের পর বলছিলেন নিখিল।
‘এয়ারলাইন্স’য়ের শ্যুটিংও হচ্ছে দিল্লিতে। ‘মুম্বইতে না-হয়ে দিল্লিতে কেন?’ সকালে এ প্রশ্নটা মোটামুটি সব সাংবাদিকের মনেই ঘোরাফেরা করছিল। উত্তরটা পাওয়া গেল বিকেলে। দিল্লি এয়ারপোর্ট থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে নয়ডা ফিল্ম সিটির বিকেপি স্টুডিয়ো। সেখানেই আস্ত একটা বোয়িং বিমানের ইন্টিরিয়র তৈরি করা হয়েছে। স্টুডিয়োতে ঢোকার পথে ডান দিকেই পড়ে মায়াবতীর আমলে তৈরি করা ৬৮৫ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় দলিত প্রেরণা স্থল। অবশ্য ‘এয়ারলাইন্স’য়ের সেট তৈরি করতেও খরচ কম হয়নি। ৮৫ লক্ষ টাকা। হুবহু বোয়িংয়ের আনুপাতিক মডেল। সেটের বাইরে সবুজ ক্রোমা পর্দা। সেটের ভিতরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে চিপসের প্যাকেট আর কোল্ড ড্রিঙ্কসের ক্যান। আগের দিন শ্যুট হয়েছে এক টার্বুলেন্সের সিন।
এ দিন শ্যুট ছিল না টিউলিপদের। ‘মেরে ইয়ার কি শাদি হ্যায়’য়ের সাফল্য বা ‘মাতৃভূমি’তে তাঁর অভিনয়ের প্রশংসা সত্ত্বেও তেমন ভাবে তো তাঁকে বলিউডে দেখা গেল না। কেন? একটু বিব্রত হেসে উত্তরটা দিলেন। “আমার কাছে সব সময় কেরিয়ারের আগে হল পরিবার। তাই হয়তো বলিউডে তেমন ভাবে নেই,” বললেন তিনি।
প্রেস কনফারেন্স শুরুর আগেই কথা হচ্ছিল ‘এয়ারলাইন্স’য়ের লেখক অদ্বৈত কালা-র সঙ্গে। “পাইলটের মতো পুরুষ-প্রধান পেশায় একজন মেয়ের উঠে আসাটাও কিন্তু বেশ চ্যালেঞ্জিং,” বলছিলেন তিনি। এই শোয়ের ফর্ম্যাটটাও কম চ্যালেঞ্জিং নয়। বছরের পর বছর ধরে চলা সিরিয়ালের বাঁধা গতে না চলে, এ শোয়ের প্রত্যেকটা গল্প শেষ হবে এক সপ্তাহে। বিদেশে সিবিএস বা এবিসি-তে যেমন টেলিভিশন শো চলে।
ফেরার ফ্লাইটের পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমে মহিলা কণ্ঠ শুনে বেশ চমকে যেতে হল। এয়ারহোস্টেসের গলা নয়। অ্যানাউন্সমেন্টটা ছিল ককপিট থেকে। ‘এয়ারলাইন্স’য়ের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে ফেরার ফ্লাইটের ককপিটে মহিলা পাইলট। কো-ইনসিডেন্স? হবে হয়তো। কলকাতার আবহাওয়া খারাপ থাকায় ‘একটু-আধটু এয়ার টার্বুলেন্স হতে পারে’র রুটিন অ্যানাউন্সমেন্ট। কিন্তু চমক লাগল পরের বাক্যে। ‘প্র্যাকটিক্যালি যতটা স্মুথ যাত্রা করা যায়, তার চেষ্টা করব’।
রাতের পার্টিতে শুনছিলাম ছেলে পাইলটরা নাকি নিজেদের দোষও কখনও কখনও চাপিয়ে দেয় মেয়ে কো-পাইলটদের উপর। ‘প্র্যাকটিক্যালি’ শব্দটা বিদ্রুপ ছিল না তো?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy