Advertisement
E-Paper

আবার শুরু রাতজাগা

বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে একমাস। আগামী কাল থেকে টিভি সেটে ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবল। সদ্য বিশ্বকাপ মাতানো কোন ফুটবলার-কোচদের দিকে নজর থাকবে সবার? খোঁজ দিচ্ছেন সোহম দেবিশ্বকাপ শেষ হয়েছে একমাস। আগামী কাল থেকে টিভি সেটে ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবল। সদ্য বিশ্বকাপ মাতানো কোন ফুটবলার-কোচদের দিকে নজর থাকবে সবার? খোঁজ দিচ্ছেন সোহম দে

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৪ ০০:১২
জেমস রডরিগেজ

জেমস রডরিগেজ

ব্রাজিল বিশ্বকাপের ‘হ্যাংওভার’ কাটল কি কাটল না, আবার এসে হাজির মেসি-রোনাল্ডোরা। আবার শনি-রবিবার মেসি-নেইমার, আবার উইকএন্ডের রাতে রোনাল্ডোর নাক্লবল ফ্রিকিক। লা লিগা, ইপিএল, বুন্দেশলিগা দিয়ে ফুটবল উন্মাদনা বাঁচিয়ে রাখার দিন। ব্রাজিল-আর্জেন্তিনা থেকে সরে আবার রিয়াল-চেলসি। বাঙালি আবার যাবে বার্সায় ডুবে। আবার রাতে ঘুম নেই, টিভি ভলিউম লো করে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ দেখা আছে। ‘দ্য বিউটিফুল গেম’ আবার ফিরছে, ফিরছে ইউরোপীয় ফুটবল। আর নতুন মরসুমে চমকও যে নতুন, কে না জানে।

সুয়ারেজ যখন কাতালান

ফুটবল মাঠে তাঁর শেষ দৃশ্য ছিল ইতালি ডিফেন্ডার জিওর্জিও চিয়েলিনির ঘাড়ে কামড়ে বিশ্বকাপ থেকে বিতাড়িত হওয়া। শাস্তি হিসাবে চার মাস তাঁকে ফুটবল মাঠ থেকেই সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বিশ্বকাপ চলাকালীন আবার লিভারপুল থেকে ৭০ মিলিয়ন পাউন্ডে বার্সেলোনায় সই করেন ‘এল পিস্তলেরো’। কিন্তু বিতর্কিত এই স্ট্রাইকারের পিছনে লুকিয়ে রয়েছে এমন এক প্রতিভাবান ফুটবলার, যিনি ম্যাচের ছবি নিমেষে পাল্টানোর ক্ষমতা রাখেন। যিনি গত মরসুমেও প্রিমিয়ার লিগের সেরা ফুটবলার। নির্বাসন কাটিয়ে যখন সুয়ারেজ আবার ফিরবেন মাঠে তখন পাশে পাবেন মেসি ও নেইমারকে। বার্সা সমর্থকরা আশা করছেন, কামড় নয়, সুয়ারেজ যেন গোলের কারণেই শিরোনামে আসেন।

চেলসির ‘অ্যাটলেটিকো প্রেম’

গত মরসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে উঠেও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের কাছে হারতে হয়েছিল চেলসিকে। নতুন মরসুমে সেই ক্লাবই ‘আক্রমণ’ করে পরের পর ফুটবলার সই করেছেন হোসে মোরিনহো। স্ট্রাইকার দিয়েগো কোস্তা থেকে লেফট ব্যাক ফিলিপে লুইস চেলসির প্রথম দলে থাকতে চলেছেন অ্যাটলেটিকোর লা লিগা জেতার পিছনে দুই অন্যতম অস্ত্র। এমনকী লিয়েন থেকে ফিরছেন গোলকিপার থিবাউ কুর্তোয়াও। ‘দ্য স্পেশ্যাল ওয়ানের’ এই ‘আটলেটিকো মুভ’ বাকিদের মাত করতে পারে কি না, দেখার অপেক্ষায় সবাই।

গোটজের পরে লেওয়ানডস্কি

সাম্প্রতিক কালে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল অবধি পৌঁছনো যেমন জার্মানির স্বভাবে দাঁড়িয়ে গিয়েছে, ঠিক তেমনই বায়ার্ন মিউনিখেরও স্বভাবে দাঁড়িয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে ফুটবলার সই করানো। গত মরসুমে মারিও গোটজের পরে এ বার দলের সেরা বাজি রবার্ট লেওয়ানডস্কি। আগামী মরসুমে পেপ গুয়ার্দিওলার দলের আস্তিনের টেক্কা হতে যাচ্ছেন যিনি। বরুসিয়ার হয়ে এক সময় পোলিশ এই স্ট্রাইকার হয়ে উঠেছিলেন ইউরোপ সেরাদের মধ্যে একজন। বরুসিয়ায় তাঁর মস্তানি কিন্তু বায়ার্নও এ বার চাইবে।

গালাকটিকোস পার্ট টু

২০০৪-এর কথা। রিয়াল মাদ্রিদে তখন কয়েকশো ক্যারটের হীরকদ্যুতি।

২০০২ বিশ্বকাপের গোল্ডেন বুট জয়ী রোনাল্ডো থেকে ব্রিটিশ ফুটবলের ‘প্রিন্স চার্মিং’ ডেভিড বেকহ্যাম পর্যন্ত, পর্তুগিজ সুপারস্টার ফিগো, ফরাসি জাদুকর জিনেদিন জিদান কে ছিল না? যে অধ্যায়ের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘গালাকটিকোস’। অর্থাৎ তারাদের সমাবেশ। সময় এগিয়েছে। প্রজন্ম বদলেছে। আবার শুরু হতে যাচ্ছে রিয়ালের নতুন গালাকটিকোস যুগ। যেখানে রোনাল্ডো-বেলের সঙ্গী হতে চলেছেন হামেস রডরিগেজ, টনি ক্রুজের মতো তারকারা,যাঁরা সদ্য শেষ হওয়া বিশ্বকাপ মাতিয়ে এসেছেন। গালাকটিকোস ওয়ান-এর সঙ্গে তুলনা শুরু হল বলে!

দ্য নেম ইজ গল, লুই ফন গল

না, ডেভিড মোয়েস পারলেন না। সে তাঁর পূর্বসূরির চাপেই হোক বা বড় ক্লাবের ড্রেসিংরুম সামলানোর চাপ। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের ইতিহাসে মোয়েস ‘মস্ত বড় ভুল’ ছাড়া কিছুই নন। সেই ধ্বংসস্তূপ গড়ে তোলার দায়িত্ব যাঁকে দেওয়া হয়েছে তিনি আবার চাপ নিতে ওস্তাদ। পুরো ফুটবল তাঁকে চেনে ‘ম্যাডম্যান অব আয়াখস’ হিসাবে। তিনি লুই ফন গল। আয়াখসে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা বা বায়ার্ন মিউনিখকে আবার জার্মান ফুটবলে অপ্রতিরোধ্য করে তোলা যা-ই হোক না কেন, ফন গল পারেন অসম্ভবকে সম্ভব করতে। নেদারল্যান্ডসকে ব্রাজিল বিশ্বকাপে তৃতীয় করে এ বার তাঁর সামনে চ্যালেঞ্জ ম্যান ইউ-র ম্লান হয়ে যাওয়া আধিপত্য আবার ফিরিয়ে আনা।

স্বপ্নের ক্লাসিকো

এক দিকে ফরোয়ার্ডে ভেসে উঠছে রোনাল্ডো, বেল, বেঞ্জিমার নাম। জবাবে আবার আর এক দিকে মেসি-নেইমার-সুয়ারেজের ত্রিফলা। প্রতি বছরই লা লিগা এই একটা ম্যাচকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা থাকে তুঙ্গে। সে দুই দলের সমর্থকই হোক বা তৃতীয় বিশ্বের কোনও ফুটবলপ্রেমী, রিয়াল মাদ্রিদ বনাম বার্সেলোনায় সারা বিশ্বের চোখ থাকে। রোনাল্ডিনহো থেকে জিদান ফুটবলের প্রত্যেক দর্শক এই মহাযুদ্ধের উত্তাপ নিয়েছেন কোনও না কোনও সময়। এ বছর আবার সেই দ্বৈরথ নেবে অন্য এক মাত্রা। যখন পিকে-আলবা জুটির কাঁধে দায়িত্ব পড়বে রোনাল্ডো-রডরিগেজদের থামানোর। পাশাপাশি আবার পেপে-র্যামোসদের উপর দায়িত্ব থাকবে ‘এল পিস্তলেরোকে’ শান্ত রাখার।

অন্য মাদ্রিদের অন্দরে

কেউ ভাবতেও পারেনি গত মরসুমে এতটা চমকে দেবে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। শুধু চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠাই নয়, চল্লিশ বছর পরে রিয়াল-বার্সা যুগলবন্দি থামিয়ে স্প্যানিশ লা লিগা জিতেছিল মাদ্রিদ শহরের ‘আন্ডারডগ’। এ বার অর্ধেক ফুটবলার চেলসি-মুখী হলেও অ্যাটলেটিকো সই করিয়েছে আঁতোয়া গ্রিয়েজম্যান, মারিও মান্দজুকিচের মতো তারকাদের। এ বারও পারবেন অ্যাটলেটিকো? কথায় আছে, উপরে পৌঁছনো খুব সহজ। কিন্তু টিকে থাকাটাই আসল চ্যালেঞ্জ। দেখা যাক।

আসছে ভ্যানিশিং স্প্রে

ব্রাজিল বিশ্বকাপে শুধু চোখধাঁধানো ফুটবলই নয় মুগ্ধ করেছিল প্রযুক্তির ব্যবহারও। অন্যতম আকর্ষণ হয়ে উঠেছিল ভ্যানিশিং স্প্রে। যে স্প্রে-র সাহায্যে ফ্রি-কিক কোন জায়গা থেকে নিতে হবে বা বিপক্ষ ফুটবলারদের ওয়াল কোথায় দাঁড়াবে, সেটা পরিষ্কার ভাবে মার্ক করে দেন রেফারি। বিশ্বকাপে ‘হিট’ হওয়ার পরে এই মরসুমে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ সব জায়গাতেই দেখা যাবে অভিনব এই ম্যাজিক স্প্রে।

শেষ প্রাচীরের দেশে

ব্রাজিল বিশ্বকাপে মেসি বা রোনাল্ডোর থেকেও বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন গোলকিপাররা। মেক্সিকোর ওচোয়া, কোস্তারিকার কেইলর নাভাস গোল বাঁচানোর দক্ষতাতেই ম্লান করে দিয়েছিলেন নামীদামি তারকাদের। আর ভাল বিশ্বকাপ মানেই ইউরোপের কোনও ভাল ক্লাবের প্রস্তাব। নাভাস যেমন এখন রিয়াল মাদ্রিদের নতুন গালাকটিকো, ঠিক তেমনই আবার বার্সা সই করাল চিলির ক্লডিও ব্রাভোকে। আবার কলম্বিয়ার ওস্পিনা এখন আর্সেনালের নতুন সদস্য। বার্সার জার্সিতে মেসির স্বপ্নের গোলের মতো ব্রাভোর দুর্দান্ত সেভের জন্যও এখন তৈরি থাকুন।

ফরাসি বিপ্লব

গত কয়েক বছরে বিদেশি মালিকানা এসে ঠাঁই নিয়েছে ফ্রান্সে। যার সৌজন্যে সবথেকে বেশি লাভবান হয়েছে প্যারিস সাঁ জা।ঁ যে দল কয়েক দিন আগে পর্যন্ত ধারাবাহিকতার অভাবে ভুগছিল আজ তাঁরা যেন তারকাখচিত এক সাম্রাজ্য। ইব্রাহিমোভিচ থেকে সিলভা তারকার অভাব নেই দলে। এই মরসুমে তো আবার রেকর্ড অঙ্কে সই করেছেন দাভিদ লুইজও। তারকার ছড়াছড়ি থাকলেও, এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিশ্বমানের দল হয়েও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ভাল ফল করতে পারছে না লরা ব্লঁ-র দল। এই ধারা কি বদলাবে এ বার সেটাই দেখার।

কবে কখন

• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ: ১৬ অগস্ট

• স্প্যানিশ লা লিগা: ২৩ অগস্ট

• জার্মান বুন্দেশলিগা: ২৩ অগস্ট

• ইতালীয় সেরি এ: ৩০ অগস্ট

• উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ: ১৬ সেপ্টেম্বর

soham dey european club football james rodriguez uefa champions league
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy