টোটা রায় চৌধুরী।
গতকাল ছিল জামাইষষ্ঠী। বাঙালির কাছে এ এক বিরাট উৎসব। কিন্তু গত তিন মাস ধরেই জীবন উথালপাথাল। অনেক কিছু দেখেছি জীবনে। কিন্তু এই আমপান এবং করোনার জোড়া ঘুষি ধরাশায়ী করে ফেলেছে পুরোপুরি। আমার বাড়িতে তাই এ বার কোনও উৎসব নেই। না, জামাইষষ্ঠী পালন করিনি আমি।
কয়েকদিন ধরেই মন মেজাজ কিছুই ভাল নেই আমার। আমপানের পর দিন সকাল থেকেই হোয়াটস অ্যাপ ইনবক্সে এসেছে একের পর এক ছবি। এক বুক জলে দাঁড়িয়ে হাতে থালা নিয়ে ত্রাণের খাবারের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা এই অসহায় চাহুনি আমায় উৎসব পালন থেকে বিরত রেখেছে এ বার।
আপাত প্রিভিলেজড আমারা বারেবারেই মনে হয়েছে ওই ছেলেটিও তো আমার সহ-নাগরিক। সময়টা খুব অস্বস্তিকর। আজকাল করোনা নিয়েও আর মাথা কাজ করে না। এত বড় দেশে সামাজিক দূরত্ব কী ভাবে রক্ষা হবে, কী ভাবে রোগটা ছড়ানো বন্ধ হবে কিছুই জানি না। যে মানুষের চাষের খেত নষ্ট হয়ে গেল, তার আবার করোনার ভয় কী বলুন তো? আগামীকাল খাবে কি, তাই-ই তো অজানা। অথচ আমি তথাকথিত প্রিভিলেজড ক্লাস কিছুই করতে পারছি না তাঁদের জন্য। আত্মগ্লানি অনুভব করছি প্রতিটি মুহূর্তে।
আরও পড়ুন- করোনা-আমপান: দাঁড়িপাল্লায় মিমি-নুসরতরা কে কোথায় দাঁড়িয়ে
তবু উৎসব আসে। উৎসব যায়। মনে আছে বিগত বছরগুলোতে শুটিংয়ের দিন ষষ্ঠী পড়ায় রবিবার দেখে পালন করতে গিয়েছি। হরেক রকমের খাবার কোনওদিনই বিশেষ পছন্দ নয়। অল্প খাই, বেছে খাই। হাজার রকমের মাছ, মাংস, এটা সেটা কোনওকালেই আমার বিশেষ পছন্দের নয়, তা আমার বাড়ির লোকেরাও জানেন। এ বারে আমার স্ত্রী শর্মিলীকে দিয়েই ষষ্ঠী পালনের প্রস্তাবটা শাশুড়ি মা আমায় দিয়েছিলেন। জানতেন আমি না-ই বলব। তাই সরাসরি কিছুই বলেননি। স্ত্রীকে বলেছিলাম, ওই টাকা দিয়েই যদি কিছু মানুষকে খাওয়ানো যায়... না দয়া নয়। এ আমার দায়িত্ব।
আরও পড়ুন- চতুর্থ দফায় লকডাউনের পর শুটিং কী ভাবে শুরু হবে? বৈঠকে বসল টলিপাড়া
যাই হোক, এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে জামাইষষ্ঠী পালনের মতো আড়ম্বর একটুকুও ভাল দেখায় না। শোভা পায় না। সব কিছু স্বাভাবিক হোক। সবাই ঘুরে দাঁড়াক। উৎসব আসবে...যাবে... সব কিছু ঠিক হয়ে যাবার পর সবাই মিলে উৎসবে শামিল হব আমরা...
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy