সুদীপা-অগ্নিদেব।
ভেবেছিলাম এ বারে জামাই ষষ্ঠী কোনও ভাবেই পালন করব না। আমার মা যেহেতু এখন আমার সঙ্গে রয়েছে কিছুতেই বারণ শুনল না। ঘরোয়া ভাবেই পালিত হল এ বারের জামাই ষষ্ঠী। মা নিজের হাতে অগ্নির জন্য লুচি, বেগুনভাজা, মাংস রান্না করেছিল। অগ্নির আবার খাবার ব্যাপারে খুব একটা কিছু চাহিদা নেই। অনেক কিছু বারণও রয়েছে। বাড়িতেই মায়ের হাতের ঘরোয়া কিছু খাবার দিয়েই আমাদের জামাইষষ্ঠী কাটল কোনও রকমে। আমাদের বাড়িতে আবার নাতি-নাতনিকে পাখার হাওয়া করে এই বিশেষ দিনে। আদি যেহেতু রয়েছে, তাই ওর মঙ্গলকামনায় সেই রীতিও পালন করা হল। সবটারই উদ্যোগ মায়ের।
তবে এমনি সময়ে জামাই ষষ্ঠী আমাদের বাড়িতে বেশ বড়সড় একটা উৎসব। দাদারাও আসে প্রতি বার। আমার দাদার শাশুড়িমা মারা যাওয়ার পর, মা-ই সবাইকে ডেকে নেয়। রান্নাটান্না করে। সে এক হইহই ব্যাপার। ও দিক থেকে বৌদিরাও যে যে রকম পারে রান্না করে আনে। বেশ ভালই আয়োজন হয়। তবে এ বার পরিস্থিতি একেবারেই আলাদা। দাদারা আসতে পারেননি। বৌদিরা বাড়িতেই রান্নাবান্না করেছেন। ওরা কিছু খাবার পাঠিয়েছে। আসলে অগ্নি ওদের একমাত্র জামাইবাবু, স্বভাবতই খুব আদরের।
জামাইষষ্ঠীর কথা বলতে বলতেই, কেমন নস্টালজিক হয়ে গেলাম। ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। আমার বাপের বাড়ি একান্নবর্তী পরিবার। জামাইষষ্ঠীর দিন মানেই সে এক এলাহি আয়োজন। শুধু কি খাওয়াদাওয়া? পিসেমশাইরা আসতেন। বাপের বাড়ির সবচেয়ে নতুন জামাইয়ের পেছনে লাগা, খুনসুটি...সব কেমন মনে পড়ে যাচ্ছে। মাছের মুড়ো নিয়ে ঠাট্টা-ইয়ার্কি চলতে থাকত অবিরাম।
আরও পড়ুন- চব্বিশ বছরের বিবাহিত জীবনে এই প্রথম বাপের বাড়ি থেকে জামাইষষ্ঠীর তত্ত্ব এল না
তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে জামাইষষ্ঠী, বিভিন্ন পার্বণ পালন শুধুই নিয়মরক্ষার খাতিরে। চারপাশে যা অবস্থা তাতে মনমেজাজ ভাল নেই কারও। শুটিং বন্ধ। টেকনিশিয়ান-বিভিন্ন কলাকুশলীদের অবস্থাও খারাপ। এরই মধ্যে যতটুকু ভাল থাকা যায়, রাখা যায়, সেই চেষ্টাই করছি নিরন্তর। আর ভগবানের কাছে প্রার্থনা করছি সব যেন আবার আগের মতো হয়ে যায়। সবাই যেন ভাল থাকেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy