ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার পরে যে রোগটি নিয়ে ইদানীং কালে উদ্বেগ বেড়েছে, তা হল কলেরা। এক সময়ে কলেরা প্রাণঘাতী রূপ নিয়েছিল এ দেশেই। তবে কালের প্রভাবে এর প্রকোপ কমলেও নির্মূল করা যায়নি। সম্প্রতি দিল্লির কিছু জায়গায় কলেরার প্রকোপ বেড়েছে বলে খবর। দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০৪টি ওয়ার্ডে কম করেও ২৪০ জল কলেরায় আক্রান্ত। দূষিত জল থেকে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। কিছু দিন আগে কলকাতাতেও কলেরা রোগীর খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। জলবাহিত এই রোগ থেকে সতর্ক থাকতে কী কী করা উচিত?
ভিব্রিও কলেরি নামক এক প্রকার ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণে কলেরা হয়। জমা জল, মানুষের মলমূত্রের মাধ্যমে এই ব্যাক্টেরিয়া ছড়াতে পারে। বাসি খাবার খাওয়া, দূষিত জল কোনও ভাবে পেটে গেলেই মুশকিল। তা ছাড়া জল কোথায় রাখছেন, কোন পাত্র থেকে জল খাচ্ছেন এই সবও কিন্তু পেটের রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কলেরায় পেটে ব্যথা বা পেট ফোলা কোনও কিছু হয় না। রোগী ঘন ঘন বমি ও মলত্যাগ করেন। কলেরায় শরীর থেকে প্রচুর জল ও খনিজ উপাদান বেরিয়ে যায়, ফলে জলের ঘাটতি বা ডিহাইড্রেশন অতি তীব্র হয়। এতে হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়।
কী ভাবে সতর্ক থাকবেন?
কল বা ট্যাপের জল সরাসরি পান করা থেকে বিরত থাকুন। পানীয় জল ফুটিয়ে তবেই পান করা ভাল।
যদি ওয়াটার ফিল্টার বা পিউরিফায়ার ব্যবহার করেন, তবে তা সময়ান্তরে পরিষ্কার করতে হবে।
বাইরে খাবার বা পানীয়ের সঙ্গে বরফ মেশানো থাকলে তা এড়িয়ে চলুন, কারণ, বরফ তৈরির জল দূষিত হতে পারে।
রান্নাঘর পরিষ্কার রাখা জরুরি। আনাজপাতি, শাকপাতা ভাল করে নুন জলে ধুয়ে তবেই রান্না করতে হবে। কাটা ফল, কাঁচা স্যালাড এই সময়ে এড়িয়ে যাওয়াই ভাল।
বাড়ির চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। জমা জল, আবর্জনা থাকলে তার থেকে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ দ্রুত ঘটবে।
পরিবারের কারও ডায়েরিয়া ও ঘন ঘন বমি হতে থাকলে, দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। সাধারণ পেটের সমস্যা হলে নুন-চিনির জল খাওয়া উচিত। এ ছাড়াও পাতলা ডাল দিয়ে ভাত খাওয়া যেতে পারে। আর সমস্যা যদি বেশি হয়, তা হলে খুব দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।