Advertisement
E-Paper

পাঁচ বছরের মধ্যে ২ বার স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত অরুণা ইরানি, কেন বার বার ফিরছে মারণরোগ?

প্রথম বার ক্যানসার ধরা পড়ার পরে কেমোথেরাপি করাননি। তাতেই কি দ্বিতীয় বারও ক্যানসার ফিরল? সে সম্ভাবনা কিছুটা হলেও সত্যি। তবে আসল রহস্য অন্য জায়গায়।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০২৫ ১৬:৪৭
Aruna Irani revealed that she battled breast cancer twice and also suffered from Diabetes

কেন বার বার ফেরে স্তন ক্যানসার, কী দেখে সতর্ক হবেন রোগী? ছবি: সংগৃহীত।

স্তন ক্যানসার সারিয়ে উঠেছিলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী অরুণা ইরানি। কিন্তু বিধি বাম। ফের একই জায়গায় নতুন করে টিউমার দেখা দেয়। পাঁচ বছরের মধ্যে দু’বার স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন অরুণা। ধরা পড়ে ডায়াবিটিসও। কর্কট রোগ শরীরে নিয়ে প্রতি দিনের লড়াইটা ছিল খুব কঠিন। কেমোথেরাপি নিতে গিয়েও ভয়ঙ্কর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় তাঁর। সেটি নেওয়াও বন্ধ করে দিয়েছিলেন এক সময়ে। ভরসা রেখেছিলেন শুধু ওষুধে। আর তাতেই কি ফিরল ক্যানসার?

স্তন ক্যানসার এক বার হলে, বার বারই ফিরে আসার আশঙ্কা থাকে। অরুণা ইরানির প্রথম বার ক্যানসার ধরা পড়ে ২০১৫ সালে। কেমোথেরাপি নেওয়ার সময়ে তাঁর শরীরে কালচে ছোপ পড়তে শুরু করে। জ্বালা হতে থাকে ত্বকে। সে কারণে কেমোথেরাপি নেওয়া বন্ধ করে দেন অরুণা। বদলে ওষুধই খেতে থাকেন। ২০২০ সালে ফের একই জায়গায় আবারও টিউমার ধরা পড়ে। সেটিও ছড়াতে থাকে দ্রুত। ফলে কেমোথেরাপি নিতে বাধ্য হন অভিনেত্রী।

কেমো না নেওয়ার কারণেই যে ক্যানসার ফিরে এসেছে তা নয়, এমনটাই জানালেন ক্যানসার চিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “কেমোথেরাপি একটা পর্যায় অবধি নিতেই হবে, যতই ওষুধ দেওয়া হোক না কেন! তবে কেমোথেরাপি না নেওয়ার কারণেই যে ক্যানসার ফিরেছে, তা নয়। সাধারণত স্তন ক্যানসার এক বার হওয়ার পরে, দু’বছরের মধ্যে ফিরে আসার আশঙ্কা থাকে। না হলে পাঁচ বছরের মধ্যে ফের ফিরে আসতে পারে। তাই নিয়মিত পরীক্ষা, ক্যানসার স্ক্রিনিং করিয়ে যেতে হবে।”

ক্যানসার কোষ কেন জেগে ওঠে বার বার?

স্তন ক্যানসারের সবচেয়ে পরিচিত ধরন— ইআর/পিআর (ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন) পজ়িটিভ এবং এইচইআর২ নেগেটিভ। এই দু’ধরনের ক্যানসারই বেশি দেখা যায়। যদি শুরুতেই রোগী উপসর্গ বুঝতে পারেন এবং স্ক্রিনিং করিয়ে একেবারে গোড়ায় বা ‘স্টেজ ১’ পর্বে তা ধরা পড়ে, তা হলে কেমোথেরাপির বদলে হরমোন থেরাপি বা ‘টার্গেট ড্রাগ থেরাপি’ করেন চিকিৎসকেরা। এই থেরাপিগুলির কাজ হল ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি ও বিভাজন থামিয়ে দেওয়া। কিন্তু ক্যানসার যদি অনেকটা ছড়িয়ে যাওয়ার পরে ধরা পড়ে, তখন কেবল ওষুধে নয়, কেমোথেরাপি বা রেডিয়োথেরাপির প্রয়োজন হয়। সেটি সঠিক সময়ে নিলে ক্যানসার ফিরে আসার ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমে। তবে সব ক্ষেত্রে নয়। ‘ট্রিপল নেগেটিভ ক্যানসার’, অর্থাৎ, এইচআর২-পজ়িটিভ হলে সেটি বার বার ফিরে আসতে পারে। আর প্রথম বার যে স্তনে টিউমার হয়েছিল, ফের সেখানেই নতুন করে টিউমার কোষের বৃদ্ধি হতে পারে।

জিনগত কারণেও ক্যানসার ফিরে আসার ঝুঁকি থাকে। সাম্প্রতিক নানা গবেষণায় তা দাবি করা হয়েছে। যাঁদের শরীরে ক্যানসার ফিরে এসেছে, তাঁদের তিনটি জিনে রাসায়নিক বদল দেখা গিয়েছে, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় ‘রেজ়িস্ট্যান্স মিউটেশন সিগনেচার’। টিপি৫৩, পিআইকে৩সিএ, ইএসআর১— এই তিনটি জিনই আসল খলনায়ক। এদের মধ্যে গোলমাল বাধলেই, তখন ক্যানসার কোষ আবারও জেগে উঠতে পারে। সে কারণেই এখন ক্যানসার সেরে যাওয়ার পরেও জেনেটিক পরীক্ষা করিয়ে রাখতে বলেন চিকিৎসকেরা। যদি দেখা যায়, ওই জিনগুলি গন্ডগোল পাকাচ্ছে, তা হলে রোগীকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখতেই হবে। সামান্য উপসর্গ দেখা গেলেই তা চিহ্নিত করে দ্রুত পদক্ষেপ করতে হবে, দরকারে ফের অস্ত্রোপচারও করতে হবে।

Breast Cancer Aruna Irani Cancer Risk cancer awareness
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy