'ক্যানসার' শব্দটির সঙ্গেই যেন আতঙ্ক জুড়ে রয়েছে। এই রোগ প্রথম পর্যায়ে ধরা পড়লে অস্ত্রোপচারে নির্মূল করার চেষ্টা করা হয়। তবে শুধু অস্ত্রোপচারেই কাজ হয় না। সেই সঙ্গে কেমোথেরাপি বা রেডিয়োথেরাপি নেওয়ারও প্রয়োজন হয়। কেমোথেরাপি চলাকালীন শরীর আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। কেমোথেরাপি করে শরীরের ভিতর ক্যানসার-আক্রান্ত কোষগুলিকে নষ্ট করে দেওয়া হয় ঠিকই, কিন্তু এর সঙ্গেই কিছু সুস্থ কোষও বিনষ্ট হয়। ফলে শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ শক্তি ধীরে ধীরে কমতে থাকে। অল্পেই দুর্বলতা, সংক্রামক অসুখবিসুখ সহজেই হানা দেয়। তাই কেমোথেরাপির চিকিৎসা চলার সময়ে একটু বেশিই সতর্ক থাকতে হয় রোগীকে। কেমোথেরাপি পর্যায়ে খাওয়াদাওয়াতেও নজর দেওয়া জরুরি। ওই সময়ে কী কী খাওয়া উচিত ও কী নয়, তা জেনে রাখা ভাল।
দেশের ন্যাশনাল হেল্থ ইনস্টিটিউট এবং স্ট্যানফোর্ড হেলথ কেয়ারের একটি গবেষণাপত্রে কেমোথেরাপি চলাকালীন কী কী খাওয়া জরুরি, তা জানিয়েছেন গবেষকেরা।
কেমোথেরাপির আগের খাওয়া
কেমোথেরাপি নেওয়ার আগে এমন কিছু খেতে হবে, যা সহজে হজম হয় এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ সরবরাহ করে। শরীরের শক্তিও বাড়ে।
১) ঘরে পাতা টকদই।
২) তাজা মরসুমি ফল, তবে প্যাকেটজাত ফলের রস নয়।
৩) টোস্ট ও সঙ্গে ডিমের পোচ।
আরও পড়ুন:
৪) গরুর দুধের বদলে সয়া মিল্ক বা কাঠবাদামের দুধ খেতে পারেন, সঙ্গে সিরিয়ালের বদলে ওট্স খাওয়া ভাল।
৫) অল্প ভাতের সঙ্গে চিকেন স্যুপ বা স্ট্যু খাওয়া যেতে পারে।
৬) দানাশস্য খাওয়া যেতে পারে, ওট্সের খিচুড়ি, ডালিয়া বা কিনোয়া সেদ্ধ খাওয়া যেতে পারে।
কেমোথেরাপির পর
কেমোথেরাপির পরে এক বারে ভারী খাবার খেতে নিষেধ করা হয়। অল্প অল্প খাবার বারে বারে খেতে হবে। বাইরের খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার একেবারেই বাদ দিতে হবে। ঘরে তৈরি সুষম খাবারই খেতে হবে।
১) ঘরে তৈরি ডালের স্যুপ, নানা রকম সব্জির তরকারি, সঙ্গে রুটি বা অল্প ভাত খাওয়া যেতে পারে।
২) প্রাতরাশ খেয়ে নিতে হবে সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে। প্রাতরাশে খেতে পারেন দুধ-কর্নফ্লেক্স, অথবা এক বাটি ডালিয়ার খিচুরি, না হলে সব্জি দিয়ে ওটস। দুধ হজম না হলে হাতে গড়া দু’টি গরম রুটি আর এক বাটি সব্জি খান। সঙ্গে যে কোনও একটি মরসুমি ফল। চিবিয়ে খেতে সমস্যা হলে ফলের রস করে খেতে পারেন।
৩) টক জাতীয় কোনও ফল বা ফলের রস না খাওয়াই ভাল।
৪) সব রকম ডাল ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেতে হবে। সবুজ শাকসব্জি বেশি খেতে হবে।
৫) ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রোজের খাদ্যতালিকায় থাকা জরুরি। চিয়াবীজ, আখরোট, সয়াবিন এবং মাছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ আছে।
৬) এই সময়ে ক্যালসিয়ামও জরুরি। দুধ, ছানা, পনির, দই, পালংশাক থেকে যথেষ্ট পরিমাণে ক্যালশিয়াম পাওয়া যাবে। দুধ হজমে সমস্যা থাকলে ছানা খাওয়া যেতে পারে।