স্থূলতার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে ফ্যাটি লিভারের। যাঁদের শরীরে মেদ যত বেশি, তাঁদের জন্য এই রোগের ঝুঁকিও বেশি। লিভারের কোষে অতিরিক্ত চর্বি জমে যে রোগ হয়, তার নাম মেটাবলিক ডিসফাংশন অ্যাসোসিয়েটেড স্টিয়াটোটিক লিভার ডিজ়িজ় বা এমএএসএলডি। আমেরিকান লিভার ফাউন্ডেশনের মত, এই রোগ অ্যালকোহলের কারণে হয় না। এই রোগকে আগে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজ়িজ় বা এনএএফএলডি বলা হত। লোকের ধারণা, স্থূলকায় চেহারার মানুষের এই রোগ হয় কেবল। কিন্তু এমএএসএলডি রোগাদেরও হতে পারে। তা জিনগত কারণে হতে পারে, খাওয়াদাওয়ার জন্য হতে পারে কিংবা ইনসুলিন প্রতিরোধের মতো সমস্যাও কারণ হতে পারে। কিন্তু ওজন কম, আপাত ভাবে মেদ নেই, এই ভেবে নিশ্চিন্ত থাকা উচিত নয়।
গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট অভিজিৎ চৌধুরী বলছেন, ‘‘মূল কথা হল, ফ্যাটি লিভার সুখীদের অসুখ। আমরা যত কম পরিশ্রম করব, ততই এই রোগের ঝুঁকি বাড়বে। মেদ জমলে ফ্যাটি লিভার হতে পারে। এ বার ধরা যাক, রোগা কোনও মানুষের ফ্যাটি লিভার ধরা পড়েছে। দেখা যাবে, তাঁদের শরীরেও এমন এমন জায়গায় মেদ জমে রয়েছে, যা চট করে চোখে পড়বে না। বিভিন্ন অঙ্গের বিভিন্ন কোণায় থেকে যেতে পারে। এই জায়গাগুলিকে ‘একটোপিক’ অঞ্চল বলে।’’
এখনও ফ্যাটি লিভারের ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। ছবি: সংগৃহীত।
ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসা কী?
চিকিৎসক জানাচ্ছেন, এখনও ফ্যাটি লিভারের ওষুধ আবিষ্কৃত হয়নি। তবে বছর কয়েকের মধ্যে বাজারে চলে আসবে বলেই আশা করা যেতে পারে। সেই ওষুধেই রোগ কমবে। কিন্তু তত দিনে নিজেই নিজেকে সুস্থ রাখতে হবে। আর তার মূলমন্ত্র একটিই।\
কী ভাবে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কমানো যায়?
অভিজিৎ বলছেন,‘‘পরিশ্রম করতে হবে, তেল খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে। এটিই এখনও ফ্যাটি লিভারের একমাত্র ওষুধ। রান্নার তেল হল গিয়ে বিষ। রাঁধুনীর হাতে তেল তুলে দিলে, সে কড়াইয়ে তেল দেবেই। তাই তেল কেনা কমিয়ে দিতে হবে। এক মাসে এক জন ৫০০ মিলিলিটারের বেশি তেল খাবেন না। অর্থাৎ চার জনের পরিবার হলে গোটা পরিবারের জন্য মাসে যেন ২ লিটারের বেশি তেল কেনাই না হয়। তা ছাড়া দৌড়োতে হবে, সাইকেল চালাতে হবে, বাড়ির কাজ করতে হবে। এমন পরিশ্রম করতে হবে, যাতে ঘাম ঝরে। তবেই এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।’’