ক্যানসার থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত হয়ে ওঠার চাবিকাঠি এখনও অধরা। তাই ক্যানসারের আতঙ্ক সহজেই জাঁকিয়ে বসে। ক্যানসার হওয়ার কোনও নির্দিষ্ট কারণ নেই। চিকিৎসকদের ভাষায় এটি সম্পূর্ণ ‘মাল্টি ফ্যাক্টেরিয়াল ডিজ়িজ়’। মূলত তেল-মশলাদার খাবার, অতিরিক্ত বাইরের খাবার, চিনি, ময়দা খেলে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। তাই এই ধরনের খাবার যত কম খাওয়া যায়, ততই শ্রেয়। বরং ক্যানসার ঠেকাতে ভরসা রাখতে পারেন কয়েকটি খাবারের উপর। যে খাবারগুলিতে ক্যানসার প্রতিরোধক উপাদান রয়েছে। মারণরোগের ঝুঁকি এড়াতে কোন খাবারগুলি খেতে পারেন, তার হদিস দিলেন চিকিৎসক সারমিন য়াকিন।
সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো শেয়ার করে চিকিৎসক সারমিন জায়িয়েছেন, ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে হলে ডায়েটে কোন খাবারগুলি বেশি খেতে হবে। চিকিৎসক বলেন, ‘‘ক্যানসার এড়াতে ডায়েটে বেশি করে ফল আর শাকসব্জি রাখতে হবে। শাক-সব্জি আর ফলে থাকে ফাইটোকেমিক্যাল। সাধারণত আমরা খাবারের মধ্যে থাকা প্রোটিন, ফ্যাট আর কার্বোহাইড্রেট নিয়েই বেশি কথা বলি। তবে খাবারে থাকা ফাইটোকেমিক্যালও কিন্তু বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ফাইটোকেমিক্যালের মধ্যে থাকা পলিফেনলে ক্যানসারের কোষগুলির সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা থাকে।’’
ফলের থেকেও বেশি সব্জি খাওয়ার উপর জোর দিয়েছেন সারমিন। তিনি বলেন, ‘‘ফলে শর্করার মাত্রা বেশি থাকে, তাই ক্যানসার রোধ করতে হলে ফলের থেকেও সব্জি খাওয়া বেশি স্বাস্থ্যকর। ফল খেতে হলে অতিরিক্ত মিষ্টিযু্ক্ত ফলগুলি এড়িয়ে চলুন। সব্জিতে ভরপুর মাত্রায় অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে, এ ছাড়াও সব্জির অ্যান্টি-ইম্ফেমেটরি গুণ ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।’’
কোন কোন খাবার রোজের ডায়েট থেকে বাদ দেবেন?
দৈনন্দিন খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস চট করে পুরোপুরি বদলে ফেলা সম্ভব নয়। তবে খাদ্যাভ্যাস বদলালে যদি দুরারোগ্য ক্যানসার দূরে থাকে, তবে চেষ্টা করতেই হবে। রোজ যা খান, তাতে ছোট ছোট বদল এনে বিষয়টি সম্ভব।
১। পাঁঠার মাংস বা অন্যান্য রেড মিট এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস যেমন সসেজ, সালামি, বেকন খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তার বদলে উদ্ভিজ প্রোটিন খান। যেমন, ডাল, বিন জাতীয় দানাশস্য, টোফু, মাশরুম খেতে পারেন।
২। ময়দাও অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবার। ময়দা থেকে তৈরি খাবার যেমন পাউরুটি, পাস্তা, নুডল্সের বদলে ওটস, ডালিয়া, লাল আটা, ব্রাউন রাইস খান।
৩। চিপস, বাইরের তেলে ভাজা খাবার বা প্যাকেটজাত ভাজাভুজির বদলে বাদাম, বীজ, শস্য, ফল খেতে পারেন।
৪। নিয়মিত রঙিন সব্জি এবং শাকপাতা রাখার চেষ্টা করুন খাদ্যতালিকায়।
৫। চিনি বেশি রয়েছে, এমন পানীয় খাওয়া বন্ধ করুন। বদলে গ্রিন টি, লেবুর জল, ডাবের জল খেতে পারেন।