ঘন ঘন মিটিং, সর্ব ক্ষণ ল্যাপটপে চোখ রেখেও কাজের পাহাড় যেন শেষ হয় না। একরাশ ক্লান্তি, বিরক্তি চেপে ধরে। কখনও আবার ঠিক করে দুপুরের খাওয়াটাও হয় না। আবার খিদে চেপেই কাজ করে যেতে হয়, এমনও হয়। কার্যক্ষেত্রে এমন ছবি অনেকেরই চেনা।
পেট খালি থাকলে কাজেও কিন্তু মন না বসা স্বাভাবিক। অফিসের কাজ, পরিবেশ, চাপ কোনওটাই কমবে না। তবে মন ভাল রাখতে সহজ একটি পন্থা কাজে লাগতে পারেন।
কাজের মাঝে ডেস্কে বসেই যদি মুচমুচে কিছু খাওয়া যায় কেমন হয়? বেশি ক্ষণ নয়, মাত্র ৫ মিনিট না হয় বিরতি নিলেন। কিন্তু খাবেন কি? চানাচুর, ফ্রেঞ্চফ্রাই, চপ, কাটলেট? মোটেই না। এ সব খেলে স্বাদ মিটলেও, শরীরের ক্ষতি হতে বাধ্য। তার প্রভাব কাজেও পড়বে। তার চেয়ে খেতে ভাল, কিন্তু শরীরের জন্য উপকারী এমন কোন স্ন্যাক্স রাখবেন হাতের কাছে?
রোস্টেড মাখানা: পুষ্টিগুণের জন্যই মাখানা খাওয়ার চল বাড়ছে। এটি আসলে পদ্মের বীজ। প্রোটিন, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়ামের মতো খনিজ রয়েছে মাখানায়। যেহেতু মাখানায় ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে, তাই হার্ট ভাল রাখতেও সাহায্য করে এটি। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর মাখানার গ্লাইসেমিক ইনডেক্সও কম। রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রেখে মস্তিষ্ককে সচল রাখতে সাহায্য করে এই খাবার। তবে মাখানা ঘি-তে সামান্য কিছু মশলা দিয়ে নাড়াচাড়া করে নিতে হবে। তা হলেই সেটি হবে সুস্বাদু এবং মুচমুচে।
কাঠবাদাম: কাঠবাদামে রয়েছে ভিটামিন ই এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট মেলে এতে। এই সমস্ত উপাদানই মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য জরুরি। শুকনো কাঠবাদাম ঘিয়ে নাড়িয়েচাড়িয়ে নিন। ছড়িয়ে দিন সামান্য নুন। খিদের সময় বা কাজের ফাঁকে ৮-১০টি বাদাম খেলে শরীরেও শক্তি পাবেন, মনও ভাল থাকবে।
আরও পড়ুন:
ফল: পছন্দের ফল হাতের কাছে রাখতে পারেন। ফলে থাকা ফাইবার, ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট দিনভর কাজের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান দেবে। তা ছাড়া ফলে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি লোভ কমাতেও সাহায্য করবে। প্রাকৃতিক শর্করার সুফল পাবে মস্তিষ্কও। একটু বিরতি নিয়ে খাওয়াদাওয়া করলে মাথা, চোখ দুই-ই বিশ্রাম পাবে।
ডার্ক চকোলেট: কাজের ফাঁকে এক বা দু’টুকরো ডার্ক চকোলেটও কিন্তু দ্রুত শক্তি জোগাতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, মনখারাপ বা ক্লান্তি কাটাতেও তা সহায়ক। ডার্ক চকোলেটের মধ্যে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড। প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং মস্তিষ্কের কর্মকাণ্ড সঠিক ভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে এই উপাদানটি। এ ছাড়া এন্ডরফিন হরমোন ক্ষরণেও ডার্ক চকোলেটের ভূমিকা রয়েছে। মানসিক চাপ কমাতে এটি সাহায্য করে।
বাদাম-বীজের মিশ্রণ: বিভিন্ন ধরনের বীজ হালকা রোস্ট করে বা শুকনো কড়াইয়ে নেড়েচেড়ে নিয়ে একটি কৌটোয় রেখে দিতে পারেন। কুমড়ো, সূর্যমুখী বীজ, কাজুবাদাম, কিশমিশ সব মিশিয়ে রাখুন। কাজের ফাঁকে সেটাই অল্প করে খেয়ে নিন। বাদাম এবং বীজে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট যেমন শরীরের জন্য ভাল, তেমনই এতে থাকা জ়িঙ্ক, ম্যাগনেশিয়াম মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্যও জরুরি।