‘পূর্ণচন্দ্রের ইতিবাচক শক্তির ছোঁয়াই এর মূল উপাদান।’ এমনই দাবি নতুন ‘ফুল মুন ঘি’-র সংস্থার। পুণের কৃষি সংস্থার এই পণ্য নিয়ে কোলাহল শুরু হয়ে গিয়েছে সমাজমাধ্যমে। কেন হঠাৎ পূর্ণিমার সময়েই বানানো হয় এই ঘি? কেবল তা-ই নয়, ঘিয়ের এমন আকাশছোঁয়া দামই বা কেন? এ কি সত্যিই অন্যান্য ঘিয়ের থেকে আলাদা? কী ভাবেই বা আলাদা?
‘ফুল মুন’ ঘি পণ্যটি বিক্রির নানাবিধ পন্থা দেখেই কথাবার্তা শুরু হয়েছে এক্স (সাবেক টুইটার)-এ। সংস্থার দাবি, বছরে মাত্র ১২ বার, অর্থাৎ, প্রতি পূর্ণিমায় এই ঘি বানানো হয়। এটির ওয়েবসাইটে লেখা রয়েছে, ‘এক বিল সম্পদ। যত্ন এবং ঐতিহ্যের মিশেলে বানানো। আমাদের ফুল মুন ঘি কোনও বিস্ময়ের চেয়ে কম নয়। বিশেষ করে স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে। মুক্ত-চারণে রাখা গির গরুদের এ২ দুধ দিয়ে বানানো হয়। পূর্ণিমার সময়ে জাল দিয়ে এই ঘি তৈরি হয়। রাতের আকাশের ইতিবাচক শক্তি এতে সঞ্চারিত হয়।’
সংস্থার এক কর্ণধার তাঁর সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন, এই ঘি নাকি ‘ল্যাক্টোজ়-মুক্ত’। তাঁর পোস্ট করা ভিডিয়ো থেকেই জানা যায় তাঁদের ঘি প্রস্তুতের প্রক্রিয়া। দুধ দোয়ানোর পর সেটি থেকে দই বানানো হয়। তার পর জাল দিয়ে দিয়ে মাখনে পরিণত হয়। ভোর ৪টে থেকে ৬টার মধ্যে কাঠের আগুনে পুড়িয়ে মাখনকে তরল করা হয়। এই সবই হয় পূর্ণিমার সময়ে। কর্ণধারের মতে, সমুদ্রের জোয়ার ভাটার পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব রয়েছে পূর্ণিমার। ঘি তৈরির প্রক্রিয়াতেও তার প্রভাব পড়ে। প্রতি দিন যদি এক চামচ ‘ফুল মুন’ ঘি খাওয়া যায়, তা হলে অনেক উপকার। আর তাই এই ঘিয়ের ৫০০ মিলিলিটারের কৌটোর দাম ২৪৯৫ টাকা!
আদৌ কি তাই?
সমাজমাধ্যম চট করে এই দাবি বিশ্বাস করতে পারছে না। উপরন্তু চিকিৎসক নন্দিতা আইয়ার তাঁর এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে এই ঘিয়ের ছবি পোস্ট করে সমালোচনা করেছেন, যার সারমর্ম এই, সংস্থাগুলি ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য এবং দাম বাড়ানোর জন্য নানা রকমের কৌশল গ্রহণ করছে। এবং পূর্ণিমার সঙ্গে ঘিয়ের উপকারিতার কী সম্পর্ক, তা এখনও বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণিত নয়।