ভারতে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই খুঁজলে অন্তত এক জন এমন পাওয়া যাবে, যাঁর রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক নয় এবং তার জন্য নিয়মিত ওষুধও খান। গত কয়েক বছর ধরে ডায়াবিটিস দ্রুত গতিতে বেড়েই চলেছে। এতটাই এই বৃদ্ধি যে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিশেষ করে অল্পবয়সিদের মধ্যে ডায়াবিটিসের প্রবণতা নিয়ে সতর্ক হতে বলেছেন মোদী। কারণ, ডায়াবিটিস এমন একটি রোগ, যার কোনও স্থায়ী প্রতিকার নেই। একে জীবনযাপনে বদল এনে, ওষুধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় মাত্র। আর নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে তা শরীরকে অবনতির পথে টেনে নিয়ে যেতে থাকে। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি হয়। ডায়াবিটিস হলে হার্ট, কিডনির মতো নষ্ট হতে পারে লিভারও।
এমনিতে জীবনযাপন সংক্রান্ত বিবিধ সমস্যার জন্য লিভারের নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন কমবয়সিরাও। বিশেষ করে নন অ্যালকোহোলিক ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভোগেন বহু মানুষ। তবে ডায়াবিটিস থেকে লিভারের ক্ষতি হলে তার জন্য বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। আগাম বিপদের সঙ্কেত পেতে পাঁচটি বিষয় খেয়াল রাখতে পারেন।
১। অতিরিক্ত ক্লান্তিবোধ
দিনের শেষে কিছুটা ক্লান্তিবোধ প্রায় প্রত্যেকেরই হয়। কিন্তু সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যদি ক্লান্তিবোধ থেকে যায়, তবে সেটি লিভার খারাপ হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণ। কারণ, লিভার খারাপ হলে রক্তের দূষণমুক্তির প্রক্রিয়াও ব্যাহত হয়। ফলে শরীরে বিষাক্ত পদার্থ জমতে থাকে। যার ফলে অবধারিত ভাবে আসে ক্লান্তিবোধ।
২। চোখে, ত্বকে হলদেটে ভাব
রক্তে লোহিত কণিকা ভাঙার সময় বিলিরুবিন তৈরি হয়। যা শরীরে বেশি মাত্রায় জমা হলে ত্বকের রঙে হলদেটে ভাব আসতে পারে। লিভারের কাজ যথাযথ ভাবে হলে তা অতিরিক্ত বিলিরুবিন শরীর থেকে দূর করতে পারে। কিন্তু লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটা সম্ভব হয় না। ফলে শরীরে বিলিরুবিনের মাত্রা বাড়তে থাকে। জন্ডিসে আক্রান্ত হন ডায়াবিটিসের রোগী। কোনও ডায়াবিটিসের রোগী যদি জন্ডিসের সামান্যতম উপসর্গও লক্ষ করেন, তবে তাঁর অবিলম্বে চিকিৎসক অথবা হাসপাতালের দ্বারস্থ হওয়া উচিত।
আরও পড়ুন:
৩। পেটে ব্যথা এবং ফোলা ভাব
পেটের ডান দিকে থাকে লিভার। সে দিকে যদি ব্যথা হয়, অস্বস্তি হয় কিংবা ফোলাভাব লক্ষ করেন, তবে তা লিভারের ক্ষতির লক্ষণ হতে পারে। যদি পেটে ব্যথার পাশাপাশি ফোলা ভাবও দেখা যায়, তবে তা গুরুতর লিভারের সমস্যার ইঙ্গিত। সিরোসিস হলেও এমন হতে পারে।
৪। মল-মূত্রের রং বদল
লিভারের সমস্যা হচ্ছে কি না তা বোঝা যায় মল-মূত্রের রং থেকেও। লিভারের সমস্যা হলে প্রস্রাবের রং গাঢ় হবে। খয়েরি, কমলাটে অথবা মেটে হলুদ রঙের হবে। আর মলের রং হবে হালকা। তাতে হলদেটে বা খয়েরি ভাব থাকবে না।
৫। খিদে না থাকা, হঠাৎ ওজন কমা
লিভারে সমস্যা হলে হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। এর ফলে খিদে না পাওয়া হঠাৎ ওজন কমে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। পেশির দৌর্বল্যও দেখা দিতে পারে একই কারণে।