কারও কারও কাছে বিষয়টি অস্বাভাবিক মনে হতে পারে। কিন্তু মাউথ ব্রিদিং বা মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস রয়েছে অনেকেরই। বিষয়টি অনেক ক্ষেত্রেই অজান্তে হয়ে যায়। কিন্তু এই অভ্যাস যদি থাকে তবে তার জন্য নানা সমস্যা হতে পারে শরীরে। এ ব্যাপারে বিস্তারে আলোচনা করেছেন দুবাই নিবাসী এক এয়ারওয়ে ডেন্টিস্ট টিনা রোকারিয়া। তিনি বলছেন, মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস থাকলে তাই অবিলম্বে সেই অভ্যাসে বদল আনুন। দরকার হলে জোর করেই অভ্যাস বদলান। না হলে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে শরীরে।
১. দাঁত ও মাড়ির সমস্যা
মুখ দিয়ে শ্বাস নিলে সবচেয়ে সাধারণ যে সমস্যাগুলি হতে পারে, তা হল দাঁত এবং মাড়ির সমস্যা। মুখ দিয়ে বাতাস প্রবেশ করলে লালা দ্রুত শুকিয়ে যায়। আর লালা বা স্যালাইভা মুখের ভিতরের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। মুখের ভিতরের অংশকে জীবাণুমুক্ত রাখতে এবং মুখের মধ্যে তৈরি হওয়া নানা ধরনের অ্যাসিড থেকে যে ধরনের ক্ষতি হয়, তা-ও হতে দেয় না। ফলে লালা শুকিয়ে গেলে দাঁতের ক্ষয় এবং মাড়ির নানা রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ ছাড়া মুখে দুর্গন্ধও হতে পারে এই অভ্যাস থাকলে।
২. ঘুমের সমস্যা
মুখ দিয়ে শ্বাস নিলে ঘুমের মান খারাপ হতে পারে। ঘুমোনোর দীর্ঘমেয়াদি রোগের কারণও হতে পারে এই অভ্যাস। এটি অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। ঘুম ভাল না হওয়ায় সারা দিনের ক্লান্তিবোধের কারণও হতে পারে মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস।
৩. মুখের গঠন পরিবর্তন
বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা বেশি দেখা দিতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে মুখ দিয়ে শ্বাস নিলে মুখের পেশি ও হাড়ের বিকাশে প্রভাব পড়ে। মুখ লম্বাটে ও সরু হয়ে যেতে পারে। রাতে ঠোঁট ঠিকমতো না হওয়ায় উপরের মাড়ি বেশি দেখা যেতে পারে। দাঁতের বিন্যাসেও এর প্রভাব পড়তে পারে। অনেক ক্ষেত্রে মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার সমস্যা থাকলে উপরের সারির দাঁত উঁচু হয়ে যেতে পারে।
৪. অ্যাজ়মা
নাক শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া বাতাসকে পরিশ্রুত করে, আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। মুখ দিয়ে শ্বাস নিলে বাইরের বাতাস পরিশোধনের কোনও সুযোগ থাকে না। ফলে ফুসফুসে পৌঁছয় ঠান্ডা, শুষ্ক অপরিশোধিত বাতাস, যা থেকে অ্যাজ়মার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
৫. ফ্যারেনজাইটিস
যাঁদের ফ্যারেনজাইটিস-এর সমস্যা রয়েছে তাঁদের গলায় ঠান্ডা বাতাস বা ধুলোভরা বাতাস গেলে সহজেই সংক্রমণ হয়। এর থেকে গলা জ্বালা করে এবং কাশি হয়। সেই সংক্রমণ অনেক ক্ষেত্রে ফুসফুসেও ছড়ায়। এই সমস্যা যাঁদের আছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়ার প্রবণতা সমস্যা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।