সংসার আর অফিস একসঙ্গে একহাতে সামলাতে হিমশিম খেতে হয় অনেককেই। তাই দু’বেলার ভাত বেশি করেই করে রাখেন অনেকে। আবার সময় বাঁচাতে একসঙ্গে অনেকটা ভাত করে ফ্রিজে রেখে দেওয়াও হয়। খাওয়ার সময় এক বার গরম করে নিলেই হল। তবে এ অভ্যাসটি কিন্তু অজান্তেই শরীরের ক্ষতি করে দিতে পারে। ভাত বেশি দিন রেখে দিলে তাতে ব্যাসিলাম সিরিয়াস নামে এক ধরনের ব্যাক্টেরিয়া জন্মায়। রান্না ভাত যদি ঠিকমতো সংরক্ষণ করা না-হয় বা সঠিক পদ্ধতিতে গরম করে না-খাওয়া হয়, তা হলেই ওই ব্যাক্টেরিয়া বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। খুব দ্রুত বিভাজন ঘটিয়ে সংখ্যায় বাড়ে ওই ব্যাক্টেরিয়া।
যদি ভাত তিন থেকে চার দিন বা তার বেশি ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয়, তা হলে সেই ভাতে প্রচুর পরিমাণে ব্যাক্টেরিয়া জন্মাবে। সেই ভাত তখন গরম করলেও জীবাণু নষ্ট হবে না, বরং এক রকম টক্সিন বার করবে। সেই টক্সিন ভাতের সঙ্গে মিশে পেটে গেলে বিষক্রিয়াও হতে পারে।
তা হলে কি ফ্রিজে ভাত রেখে খাওয়াই যাবে না? পুষ্টিবিদ অ্যামি শাহ বলেন, ‘‘ফ্রিজে ভাত রেখে খাওয়া কিন্তু ভাল। রান্নার পর ভাত ঠান্ডা করে সঙ্গে সঙ্গে ফ্রিজে রেখে দেওয়া যেতেই পারে সারা রাতের জন্য। পরের দিন সেই ভাত খেলে ভাতের মধ্যে থাকা কিছু শর্করা পেটের জন্য উপকারী রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চে পরিণত হয়, যা রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং পেটের গোলমালও ঠেকানো যায়।’’
পুষ্টিবিদর মতে, ফ্রিজে ভাত রাখাটা ক্ষতিকারক নয়, তার আগেই ঘটে যত সমস্যা। পুষ্টিবিদ বলেন, ‘‘বেশির ভাগ সময়ই ভাত রান্না করে হেঁশেলে সারাটা দিন এক কোণে রেখে দেওয়া হয়, আর তাতেই শুরু হয় সমস্যা। তখনই ব্যাক্টেরিয়াগুলি ভাতের ভিতরে বংশবিস্তারের সুযোগ পায়। ঘরের তাপমাত্রাই কিন্তু ব্যাক্টেরিয়াদের বংশবিস্তারের জন্য আদর্শ। তাই ভাত রান্না করে তা অনেকটা সময় বাইরে রেখে দিলেই বিপদ বেশি।’’
তা হলে কী করবেন?
পুষ্টিবিদের মতে, ভাত রান্না করে তা ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার পরেই বায়ুনিরোধী একটি কৌটোয় ভরে তা ফ্রিজে রেখে দিন। আর এক বারের বেশি ভাত গরম করবেন না। রান্না করা ভাত বেশি দিন রেখে খাবেন না। ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সেই ভাত খেয়ে নিতে হবে। সবচেয়ে ভাল হয়, রোজের ভাত রোজ করে নিলে।