Advertisement
E-Paper

মস্তিষ্কের সঙ্গে কথা বলে পেট! দুইয়ের বন্ধুত্বে চিড় ধরলেই বিগড়ে যায় মেজাজ

পেট-মস্তিষ্কের বন্ধুত্ব নিবিড়। দুইয়ের বন্ধুত্বে ছেদ পড়লেই বিগড়ে যাবে মেজাজ। বাড়বে উদ্বেগও। দাবি গবেষণায়।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:০২
Scientists say your gut may be shaping your mood more than you realise

পেট-মস্তিষ্কের দ্বন্দ্ব হলেই বিগড়ে যায় মেজাজ। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

পেটের সঙ্গে মস্তিষ্কের নিবিড় যোগ। বন্ধুত্ব নাকি খুবই গভীর। মন-মেজাজ কেমন থাকবে, তা নির্ভর করে দুইয়ের ভাব বিনিময়ের উপরে। পেটের ভিতরে থাকে অন্ত্র। সে নাকি কথাও কয় মস্তিষ্কের সঙ্গে। সঙ্কেতের আদানপ্রদান ঘটে। এদের বন্ধুত্বে চিড় ধরা মানেই, মেজাজ বিগড়ে যাওয়া। শুনতে অবাক লাগলেও, এমনটাই দাবি করেছেন হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের গবেষকেরা। পেট ঠিক থাকলে, মাথা থাকে শান্ত, দিন কাটে সুন্দর।

অন্ত্রকে বলা হয় শরীরের ‘দ্বিতীয় মস্তিষ্ক’। দিনভর যা খাওয়া হয়, তার হিসেবনিকেশ রাখে অন্ত্র বা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল ট্র্যাক্ট (গাট)। কতটা পুষ্টিকর খাবার খাচ্ছেন, আর কতটা অস্বাস্থ্যকর, সে দিকে কড়া নজর রাখে অন্ত্র। সেই মতো নির্দেশও পাঠায় মস্তিষ্কে। অপুষ্টিকর ও অস্বাস্থ্যকর খাবার বেশি খেলে, সে সব হজম করতে অন্ত্রের উপর চাপ পড়ে বেশি। ফলে অধিক খাটাখাটনিতে অন্ত্রের হাল খারাপ হয়। সে বার্তা দ্রুত পৌঁছে যায় মস্তিষ্কে। সঙ্কেত আদানপ্রদাহে সমস্যা শুরু হয়, তখনই মেজাজ বিগড়ে যেতে শুরু করে। সারা দিনের সব কাজ পণ্ড হয়।

অন্ত্র-মস্তিষ্কের যোগসাজশ কতটা, তা নিয়ে গবেষণা করছেন হার্ভার্ডের গবেষকেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, পেট কিন্তু আবেগের উপরে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে। আসলে অন্ত্রের ‘নেটওয়ার্ক’-এর ব্যাপ্তি বিরাট। হজম ক্ষমতা থেকে ভাল ও খারাপ ব্য়াক্টেরিয়ার উপস্থিতি, সবটাই নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখে। অন্ত্রে ভাল-খারাপ ব্যাক্টেরিয়ার বিরাট এক সংসার রয়েছে, যাকে বলে ‘গাট মাইক্রোবায়োটা’। এই সংসার বিপাকে সাহায্য করার পাশাপাশি এমন কিছু রাসায়নিকও তৈরি করে, যা মস্তিষ্কে সঙ্কেত পাঠাতে সাহায্য করে। এদের ভারসাম্য নষ্ট হলেও কিন্তু অন্ত্রে সমস্যা দেখা দেয়। এর ফলস্বরূপ পেটের গোলমালের সঙ্গে ক্লান্তি, অবসাদ, মেজাজে বদল, একাগ্রতার অভাব ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।

গবেষকেরা দেখেছেন, পেট ও মস্তিষ্কের মধ্যে যোগাযোগ বজায় রাখার কাজটা করে ভেগাস স্নায়ু। এই স্নায়ুটি মস্তিষ্ক থেকে শুরু হয়ে অন্ত্র-সহ শরীরের অন্যান্য প্রধান অঙ্গে গিয়ে পৌঁছোয়। অন্ত্র থেকে ৮০ শতাংশ বার্তা এই স্নায়ুপথেই মস্তিষ্কে গিয়ে পৌঁছোয় যা খিদে পাওয়া, হজম হওয়া, গাট মাইক্রোবায়োটার তথ্য মস্তিষ্কে পৌঁছে দেয়। আবার মস্তিষ্ক থেকে ২০ শতাংশ তথ্য এসে পৌঁছোয় অন্ত্রে, যা হজম ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করে। সেরোটোনিন নামক নিউরোট্রান্সমিটারের ৯০ শতাংশ উৎপাদিত হয় অন্ত্রে, যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে নিয়ন্ত্রণ করে। আবার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার একটি বড় অংশই নিয়ন্ত্রিত হয় অন্ত্রে। তাই এখানে গোলমাল হলে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। এই প্রদাহজনিত রাসায়নিকগুলি রক্তে প্রবেশ করে মস্তিষ্কে পৌঁছোয় এবং সেখানে স্নায়ুর কাজকর্মে বদল আনতে পারে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই মনের উপর প্রভাব পড়ে।

তাই পেট ভাল রাখলেই যাবতীয় সমস্যার সমাধান হবে। এর জন্য শরীরের দরকার পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন, খনিজ ও আয়রন। রোজের খাদ্যতালিকায় তাই রাখতে হবে সবুজ শাক, আনাজপাতি, তাজা রসালো ফল। পালং শাক, ব্রকোলি, রসুন, বাঁধাকপি খাওয়া ভাল। ফলের মধ্যে কলা, আঙুর কমলালেবু, পেয়ারা খেতে পারেন। ওট্স, ডালিয়া, ব্রাউন রাইস, বার্লি ইত্যাদি দানাশস্য ফাইবারে ভরপুর, যা পেট ভাল রাখবে। সেই সঙ্গেই জাঙ্ক ফুড খাওয়া বন্ধ করতে হবে।

Gut Health brain health liver diseases
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy