ভারতীয় মশলার ঔষধি গুণের কথা যুগ যুগ ধরেই বলা হচ্ছে এ দেশের প্রাচীনতম চিকিৎসা পদ্ধতি আয়ুর্বেদে। তবে আয়ুর্বেদকেই যেখানে প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসা পদ্ধতি বলে অনেকে মানতে চাননা সেখানে ওই সব মশলার গুণাগুণ নিয়েও প্রশ্ন ছিল। কিন্তু ইদানীং নানা গবেষণায় দেখা গিয়েছে ভারতীয় মশলায় সত্যিই নানা রকমের রোগ প্রতিকার করার ক্ষমতা রয়েছে। বড় এলাচ তেমনই এক জোরালো মশলা। যা শীতে শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। শুধু তা-ই নয়, শীতে নিয়মিত বড় এলাচ খেলে তার নানা রকম উপকার পেতে পারে শরীর। তেমনই বলছেন পুষ্টিবিদ রমিতা কৌর।
১. সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে আরাম দেয়
শীতকালে ঠান্ডা লেগে সর্দি, কাশি বা বুকে কফ জমার সমস্যা বাড়ে। বড় এলাচ প্রাকৃতিক ‘এক্সপেক্টোরেন্ট’ হিসেবে কাজ করে, অর্থাৎ এটি ফুসফুস ও শ্বাসনালী থেকে কফ বের করে দিতে সাহায্য করে। হাঁপানি বা অ্যাজমার রোগীদের জন্যও এটি উপকারী।
২. শরীর গরম রাখে
বড় এলাচে রয়েছে থার্মোজেনিক উপাদান। এটি শরীরের মেটাবলিজম বাড়িয়ে শরীরকে ভেতর থেকে উষ্ণ রাখে, যা বাইরের পারদ কমলেও শরীরের ভিতরের তাপমাত্রা বজায় রেখে শীতে আরাম দেয়।
৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং ভিটামিন সি থাকে। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে, যা শীতকালীন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচায়।
৪. হজমশক্তি উন্নত করে
শীতে অনেক সময় জল কম খাওয়া হয় এবং শারীরিক কসরত কমে যায় বলে হজমের সমস্যা দেখা দেয়। বড় এলাচ অন্ত্রে পাচক রস নিঃসরণে সাহায্য করে, যা গ্যাস, অম্বল এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর করে। ভারী খাবার খাওয়ার পর এটি চিবিয়ে খেলে হজম ভালো হয়।
৫. ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়ে
শীতে ত্বক শুষ্ক ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে। বড় এলাচ রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়, যা ত্বককে উজ্জীবিত করে জেল্লা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
৬. মুখের দুর্গন্ধ ও মাড়ির সমস্যা দূর করে
শীতে অনেকের মাড়ির সমস্যা বা দাঁতে ব্যথা বাড়ে। বড় এলাচের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে এবং মাড়ির ইনফেকশন কমাতে সাহায্য করে।
সতর্কতা: যেহেতু এই মশলা শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে তাই অতিরিক্ত বেশি পরিমাণে না খাওয়াই ভালো। দিনে অর্ধেক বা ১ টি বড় এলাচই যথেষ্ট। বেশি খেয়ে শরীরের সমস্যা হচ্ছে বুঝলে পরিমাণ কমিয়ে খেয়ে দেখুন। বড় এলাচের গন্ধ ও স্বাদ খুবই তীব্র। তাই রান্নাতেও বেশি ব্যবহার করলে স্বাদ তেঁতো হতে পারে।