কিডনির রোগে ভুগতে পারে শিশুরাও। কিডনির অসুখের বড় বিভ্রান্তি হল, এর সমস্যা ধরা পড়তে সময় নেয়। যখন ধরা পড়ে, তখন হয়ত অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। বিশেষত ছোটদেরও যে কিডনির অসুখ হতে পারে সে নিয়ে ধারণা না থাকায়, কিছু উপসর্গ দেখা দিলেও তা এড়িয়ে যান অভিভাবকেরা। ছোটদের ক্ষেত্রে কিডনির গঠনগত সমস্যা, সংক্রমণ, জিনগত কারণে কিডনির রোগ হতে পারে। জন্মগত সমস্যা থাকলেও তা ধরা পড়তে অনেক সময় নেয়।
বাবা-মায়েরা কোন কোন লক্ষণ চিনবেন?
ঘন ঘন মূত্রনালির সংক্রমণ
মূত্রনালির সংক্রমণ মাঝেমধ্যেই হতে থাকবে। এটা বিভিন্ন বয়সের শিশুর, বিভিন্ন কারণে হতে পারে। একদম ছোট শিশুদের অনেক সময়েই ডায়াপার থেকে সংক্রমণ হয়। মেয়েদের মধ্যে সংক্রমণের প্রবণতা বেশি। অস্বাস্থ্যকর শৌচাগার থেকে সংক্রমণ ঘটতে পারে। অনেক সময়েই ছোটরা প্রস্রাব চেপে রাখে। তা থেকেও সমস্যা হয়।জল কম খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়, আবার তা থেকেও প্রস্রাবের সংক্রমণ হতে পারে। বারে বারে এমন হতে থাকলে সাবধান হতে হবে।
আরও পড়ুন:
প্রস্রাব বেরোনোর পথে সমস্যা
অনেক সময়ে প্রস্রাবের রাস্তায় ব্লক থাকে। এতে প্রস্রাবের সময়ে জ্বালা হয়। এর থেকেও সংক্রমণ ঘটে এবং কিডনির উপর চাপ বাড়ে। অভিভাবকেরা খেয়াল করবেন, প্রস্রাব করার সময়ে শিশু কাঁদে কি না। প্রস্রাবের জায়গায় ব্যথা, জ্বালা হলে এবং প্রস্রাব করতে সমস্যা হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
লুপাস রোগ
শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল জানাচ্ছেন, লুপাস রোগের কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কমে যায়। তাই ওই অসুখে ভোগা শিশুদের কিডনির রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। পরিবেশগত বা জিনগত কারণে লুপাস আক্রান্ত হয় অনেকেই। জ্বর, শরীরের যে কোনও অংশে র্যাশ, সব সময়ে নেতিয়ে থাকা, চুল পড়া, রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়া, গাঁটে গাঁটে ব্যথার উপসর্গ যদি দীর্ঘ দিন ধরে কোনও শিশুর মধ্যে দেখা যায়, তা হলে অবিলম্বে পরীক্ষা করে দেখতে হবে, সে লুপাসে আক্রান্ত কি না।
ইউরিন রিফ্লাক্স
ঘন ঘন মূত্রনালির সংক্রমণ ঘটলে রিফ্লাক্সের সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসকেরা এটিকে ভেসিকিউরিটেরাল রিফ্লাক্স বলেন। এই সমস্যায় প্রস্রাব উল্টো রাস্তায় অর্থাৎ ব্লাডার থেকে আবার কিডনিতে ফেরত যায়। এটা বারবার হলে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ভয় থাকে। এ ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা হয়।